স্পেনের মাদ্রিদে অনুষ্ঠিতব্য কপ-২৫ (Conference of the Parties-COP) সম্মেলনকে কেন্দ্র করে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে সনাক ও টিআইবি’র দাবি উত্থাপনের জন্য মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) মধুুপুর এর উদ্যোগে এ কর্মসূচী পালিত হয়।
মানববন্ধন হতে বাংলাদেশ কর্তৃক কপ-২৫ সম্মেলনে উত্থাপনযোগ্য ৮টি এবং বাংলাদেশ সরকারের করণীয় বিষয়ক ৩টি দাবি তুলে ধরা হয়।
মানববন্ধনে সনাক সভাপতি অধ্যক্ষ মো: বজলুর রশিদ খানের সভাপতিত্বে ও টিআইবি’র এরিয়া ম্যানেজার মো: হাবিবুর রহমান চৌধুরীর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সনাক সহ-সভাপতি মো: আব্দুল মালেক ও সদস্য মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম।
আলোচনায় বক্তারা দূষণকারী কর্তৃক ক্ষতিপূরণ প্রদান নীতি বিবেচনা করে ঋণ নয়, শুধু সরকারি অনুদান, যা উন্নয়ন সহায়তার ‘অতিরিক্ত’ এবং ‘নতুন’ প্রতিশ্রুতিরবিপরীতে প্রতিশ্রুত জলবায়ু অর্থায়ন নিশ্চিত করা; ক্ষতিগ্রস্ত স্বল্পোন্নত দেশসমূহের পরিকল্পিত অভিযোজনের জন্য জিসিএফ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক তহবিল হতে প্রয়োজনীয় তহবিল অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যথাসময়ে, সহজে সরবরাহের জন্য বাংলাদেশসহ ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে সমন্বিতভাবে (ক্লাইমেট ডিপ্লোম্যাসির মাধ্যমে) দাবি উপস্থাপন করা এবং তা আাদায়ে দর কষাকষিতে দক্ষতা প্রদর্শন করা; উন্নয়নশীল দেশগুলোর অভিযোজনকে অগ্রাধিকার দিয়ে চাহিদা মাফিক জলবায়ু অনুদান ভিত্তিক তহবিল প্রদানে একটি সময়াবদ্ধ রোডম্যাপ প্রণয়ন এবং তা বাস্তবায়ন করা; স্বল্পোন্নত দেশগুলোর স্বার্থ নিশ্চিতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি বাস্তবায়নে উন্নত দেশগুলো হতে প্রয়োজনীয় সম্পদ (জলবায়ু তহবিল, প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং কারিগরি সহায়তা) সরবরাহের জোর দাবি উত্থাপন করা; জিসিএফ এর স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও শুদ্ধাচার নিশ্চিতে সুশীল সমাজ সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে অন্তর্ভুক্ত করে সমতা-ভিত্তিক প্রতিনিধিত্বমূলক এবং কার্যকর ট্রাস্টি বোর্ড গঠন এবং ক্ষতিগ্রস্ত দেশসমূহের অভিযোজন কার্যক্রমে অনুদানকে অগ্রাধিকার প্রদান করা; স্বল্পোন্নত দেশে অভিযোজন বাবদ অর্থায়নের অতিরিক্ত হিসেবে ক্ষয়-ক্ষতি মোকাবেলায় বিশেষ তহবিল গঠন এবং তার জন্য দ্রুত অর্থায়ন নিশ্চিতে স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে সোচ্চার হওয়া; ‘ক্ষয়-ক্ষতি’ মোকাবেলায় জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবেলায় বীমার পরিবর্তে উন্নত দেশসমূহ কর্তৃক ক্ষতিপূরণ আদায় করে ‘ঝুঁকি বিনিময় খরচ’ একটি আইনি কাঠামোর মাধ্যমে কার্যকর করা; এবং জলবায়ু-তাড়িত বাস্তুচ্যুতদের পুনর্বাসন, কল্যাণ এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি নিশ্চিতে জিসিএফ এবং অভিযোজন তহবিল থেকে বিশেষ তহবিল বরাদ্দ নিশ্চিত করা; ২০৫০ সালের মধ্যে ৫০ শতাংশ নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রতিশ্রুত সরকারি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের স্বার্থে অনতিবিলম্বে রামপাল, তালতলি ও কলাপাড়ায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতকেন্দ্রসহ বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ শিল্পায়ন কার্যক্রম স্থগিত করে ইউনেস্কো’র সুপারিশ অনুযায়ী আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য, নিরপেক্ষ ও স্বার্থের দ্বন্দ্ব-মুক্ত কৌশলগত পরিবেশের প্রভাব নিরুপণ সাপেক্ষে অগ্রসর হতে হবে; নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনকে লক্ষ্য করে স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি সময়াবদ্ধ পরিকল্পনা গ্রহণ করে, সুনির্দিষ্ট রূপরেখা প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়নে আশু পদক্ষেপ নেওয়া; এবং প্রত্যন্ত এলাকার ঝুঁকি বিবেচনায় নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠী, বিশেষ করে দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে প্রাধান্য দিয়ে জেলা-উপজেলাভিত্তিক জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা এবং ‘ক্ষয়-ক্ষতি’ মোকাবেলায় একটি জাতীয় কাঠামো প্রণয়নসহ বিপন্ন মানুষের জীবন ও সম্পদ রক্ষায় সামাজিক সুরক্ষা বেষ্টনী গড়ে তোলা ইত্যাদি দাবি তুলে ধরেন।
মানববন্ধনে এসময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সাংবাদিক, এনজিও প্রতিনিধি, সনাক, ইয়েস ও ইয়েস ফ্রেন্ডস সদস্যগণসহ বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার নারী ও পুরুষ অংশগ্রহণ করেন।
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি
আপনার মন্তব্য লিখুন...