টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে নিজ জন্মভূমিতে জনপ্রিয় অভিনেতা আফরান নিশোকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। নিশো অভিনীত প্রথম “সুড়ঙ্গ” ছবিটি ভূঞাপুর স্বাধীনতা কমপ্লেক্সে অস্থায়ী হল তৈরি করে সেখানে ভক্তদের দেখার আয়োজন করে স্থানীয় কয়েকজন যুবক। আয়োজকদের আমন্ত্রণে নিশো তার ছবির পুরোটিম নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার রাতে আসেন ভূঞাপুরে।
এসময় সুড়ঙ্গ ছবির নায়িকা তমা মির্জা, পরিচালক রায়হান রাফীসহ টিমের অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। রাতেই নিশোকে সংবর্ধনা দেয়ার আয়োজন করা হয়।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ভূঞাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুদুল হক মাসুদ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সাহিনুল ইসলাম তরফদার বাদল, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম বাবু, জেলা পরিষদের সদস্য খায়রুজ্জামান তালুকদার বাবলু প্রমুখ।
ভূঞাপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সংবর্ধনা ও “সুড়ঙ্গ” ছবি দেখানোর আয়োজন করা হয়। নিশোর আগমনের খবরে কানায় কানায় পুর্ন হয়ে যায় মাঠ। গেল ঈদের দিন থেকে আফরান নিশো অভিনীত ছায়াছবি সুড়ঙ্গ সিনেমাটি অস্থায়ী হলে চালানো শুরু হয়।
অভিনেতা আফরান নিশো বলেন, জন্মভূমির শেকড়টা ভুলতে চাই না কখনো। টাঙ্গাইলে আসলেই আমার ভাষা টাঙ্গাইলের মত হয়ে যায়। এছাড়া আমার কাজের মধ্যেও এই ভাষাটা দেয়ার চেষ্টা করি। সুড়ঙ্গ সিনেমাটিতে মাসুদের যে চরিত্রের গেটআপ সেটা অনেকটা আমার বাবার মত। এটা কাউকে বলা হয়নি। আমার বাবাকে মাথায় রেখে চরিত্রটি রাখা হয়েছে। তিনি দেখতেও অনেকটা ওই রকম ছিলেন। আমার মা বলেছেন যে তোমাকে দেখতে একদম তোমার বাবার মত লাগতেছে। ভূঞাপুর আমার জন্মস্থান। সব সময় এখানে আসতাম। তবে মাঝে মাঝে গভীররাতে বাবার কথা মনে হলেই গাড়ি চালিয়ে গ্রামে গিয়ে বাবার কবর জিয়ারত করে চলে যাই। তবে কাউকে বলি না।
নিশো বলেন, ভূঞাপুরে এক সময় দুইটা সিনেমা হল ছিল। বর্তমানে একটাও নেই। তারপরও আমার জন্মস্থানে আমার ভক্তরা অস্থায়ী সিনেমা হল বানিয়ে সিনেমা দেখার সুযোগ করে দিয়েছে তার জন্য আমি সারা জীবন কৃতজ্ঞ থাকবো। কোথাও আগে শুনিনি যে এইভাবে অস্থায়ী সিনেমা হল তৈরি করেছে। আমার এলাকাবাসী আমার জন্য করেছে। আজকে বড় পর্দায় কাজ করছি, আজকে বাবা থাকলে অন্যরকম হতো। সে যে কত খুশি হত।
আফরান নিশো আরও বলেন, আমি ছোট থেকেই আসতে আসতে কাজ করতে করতে নিজের যোগ্যতায় একটা জায়গায় এসেছি। এখন অনেকেই চিনে আমার নাম। আমি বিভিন্ন চরিত্রে কাজ করতে পছন্দ করি। ভূঞাপুরে সিনেমা হল নির্মাণে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে। যেখানে যাওয়া দরকার যাবো। সিনেমা হল আমরা বানাইয়া ছাড়বো।
সুড়ঙ্গ সিনেমার পরিচালক রায়হান রাফী বলেন, যখন শুনলাম ভূঞাপুরে নিশোর গ্রামের বাড়ির এলাকার কয়েকজন মিলে সেখানে হল বানাচ্ছে। এতে আমরা অবাক হয়েছিলাম। সাধারনত এটা হয় না কোথাও। আয়োজকদের ধন্যবাদ জানাই।
এ বিষয়ে ভূঞাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুদুল হক মাসুদ জানান, আমি ও অভিনেতা আফরান নিশোর বাবা ভোলা ভাই একসাথে রাজনীতি ও মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম। আজকে ভোলা ভাই বেঁচে থাকলে ও ছেলের সাফল্য দেখে আরো শান্তি পেতেন। নিশো তার কর্ম দিয়ে সারা বাংলাদেশের মানুষের হৃদয় জয় করুক এই কামনা রইল।
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি
আপনার মন্তব্য লিখুন...