গোপালপুর উপজেলার নগদাশিমলা ইউনিয়নের সুবিধা বঞ্চিত একটি গ্রাম লক্ষিপুর। গ্রামের তিন দিক ঘিরেই অথৈ ডগাবিল। পূর্বে চককাশি খাল। গ্রামে যাওয়ার কোনো রাস্তা নেই। প্রায় দুই কিলো আবাদি জমির সরু আইল পাড়ি দিলেই গ্রামের নাগাল পাওয়া যায়। গ্রামে স্কুল না থাকায় খালবিল পাড়ি দিয়ে স্কুলে যেতে চাইতোনা শিশুরা। ফলে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত ছিল অনেক শিশু। এমতাবস্থায় গোপালপুর উপজেলা পরিষদ এ গ্রামের শিক্ষা বঞ্চিত শিশুদের অবৈতনিক প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য পাড়ার দক্ষিন প্রান্তে বিলের ধারে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণের ব্যবস্থা করেন। এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন উপজেলা চেয়ারম্যান ইউনুস ইসলাম তালুকদার। শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের ‘বিদ্যালয় বিহীন এলাকায় ১৫০০ বিদ্যালয়’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে এ গ্রামে ‘দেশ রতœ শেখ হাসিনা’ নামে সরকারি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয়। এ স্কুলে এখন দুই শতাধিক শিশু পড়ালেখা করে। ‘গ্রামের শতভাগ শিশু এখন স্কুলে যায়।
আমাদের ছেলেপুলেরা আর অশিক্ষিত থাকছেনা। আমরা সবাই খুব বেশি’ এ ভাবেই প্রতিক্রিয়া জানান গ্রামের বিদ্যুৎ মিস্ত্রি আব্দুল গনি।
একইভাবে ঝাওয়াইল ইউনিয়নের সোনমুই গ্রামে বঙ্গবন্ধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মোহাইল গ্রামে বঙ্গমাতা ফজিলাতুনেচ্ছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং হাদিরা ইউনিয়নের আজগড়া গ্রামে শেখ রাসেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে যমুনা ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত সোনামুই বঙ্গবন্ধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছিন্নমূল শিশুরা লেখাপড়া করে।
চলতি অর্থ বছরে হাদিরা ইউনিয়নের চাতুটিয়া গ্রামে শেখ রেহানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ঝাওয়াইল ইউনিয়নের কাহেতা গ্রামে প্রখ্যাত সমাজ সেবক, জনপ্রতিনিধি ও শিক্ষাবিদ মরহুম মোকছেদ আলী তালুকদারের নামে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মিত হচ্ছে।
রবিবার গোপালপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ইউনুস ইসলাম তালুকদার এ দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
এ সময়ে উপজেলা পরিষদের ভাইসচেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ, এলজিইডির উপসহকারি প্রকৌশলী শামসুল আলম, প্রেসক্লাব সভাপতি অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন, সম্পাদক সন্তোষ কুমার দত্ত, সাংবাদিক কেএম মিঠু, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের প্রধান এবং আওয়ামীলীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা চেয়ারম্যান ইউনুস ইসলাম তালুকদার জানান, হেমনগর ও চরভাদাই গ্রামে শেখ কামাল ও শেখ জামালের নামে আরো দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপিত হচ্ছে। প্রতিটি বিদ্যালয় হবে চার তলা বিশিষ্ট। তবে প্রথম পর্যায়ে হবে এক তলা। ব্যয় বরাদ্দ প্রতিটির জন্য ৬৯ লক্ষ টাকা। পড়ালেখার কাজ ছাড়াও আধুনিক ডিজাইনের এ ভবনে যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে। এলজিইডি এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এ দশটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণের ফলে বিত্তহীন ও সুবিধা বঞ্চিত তিন সহ¯্রাধিক শিশু পড়ালেখার সুযোগ পাবে বলে জানান তিনি।
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি
আপনার মন্তব্য লিখুন...