বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ চলতি বছর (২০২০) একুশে পদক পাচ্ছেন দেশের ২০ বিশিষ্ট ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে ভাষা ও সাহিত্যে'র জন্য পদক পাচ্ছেন টাঙ্গাইলের গোপালপুরের কৃতি সন্তান ড. নুরুন নবী।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রাষ্ট্রীয় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদকপ্রাপ্তদের এ তালিকা প্রকাশ করে।
আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের হাতে একুশে পদক তুলে দেবেন।
এক নজরে ড. নুরুন নবী-
যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, বিশিষ্ট বিজ্ঞানী, বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. নুরুন নবী ১৯৪৯ সালে গোপালপুর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী খামারপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
হেমনগর শশীমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে ম্যাট্রিকুলেশন ও ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন তিনি। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাণরসায়নে স্নাতক করে জাপানের কিয়ুশ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
তিনি নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মলিকিউলার বায়োলজিতে পোস্ট ডক্টরাল গবেষণা করে কোলগেট টোটালের অন্যতম আবিষ্কারক ড. নুরুন নবী দীর্ঘদিন কোলগেট কোম্পানিতে কর্মরত ছিলেন। তাঁর রয়েছে ৫০টিরও বেশি পেটেন্ট।
১৯৭১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত থাকাকালীন তিনি যোগ দেন মহান মুক্তিযুদ্ধে। সম্মুখযুদ্ধে অংশ নেয়া ছাড়াও তিনি ছিলেন যুদ্ধ পরিকল্পনাকারী ও বার্তাবাহক। মুক্তিযোদ্ধা ও ভারতীয় কমান্ডারদের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনের মত গুরুত্বপূর্ণ কাজ করা ছাড়াও ভারতীয় সীমান্ত পাড়ী দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্রের জোগান দিতেন তিনি।
১৯৭২ সালের ৬ মে ‘ফার ইস্টার্ন ইকোনমিক রিভিউ’ সাময়িকী মুক্তিযুদ্ধে দুঃসাহসী ভূমিকার জন্য ড. নুরুন নবীকে টাঙ্গাইলে মুক্তিবাহিনীর ‘মাথা’ বা ‘দ্য ব্রেইন’ আখ্যা দেয়।
একাত্তরের দুঃসাহসী এই মুক্তিযোদ্ধা মুক্তিযুদ্ধের পটভুমিতে ইতিহাস সমৃদ্ধ দুঃসাহসিক অভিযান নিয়ে লিখেছেন ‘বুলেটস অফ ৭১’ ‘অ্য ফ্রিডম ফাইটার’স স্টোরি’ নামে দুটি অমূল্য গ্রন্থ। তাছাড়াও তিনি মুক্তিযুদ্ধের অনেক অজানা ইতিহাসকে তুলে ধরে রচনা করেছেন ‘আমার একাত্তর আমার যুদ্ধ’ ‘জন্মেছি এই বাংলায়’ ‘জন্ম ঝড়ের বাংলাদেশ’ ‘আমেরিকায় জাহানারা ইমামের শেষ দিনগুলি’ হুমায়ুন আহমেদ কাছের মানুষ’ ‘শামসুর রাহমান স্বাধীনতার কবি’ ‘কবীর চৌধুরী মৌলবাদের নির্ভীক প্রতিবাদী’ গ্রন্থগুলো। যা দেশ-বিদেশে খুবই পাঠকনন্দিত ও ব্যাপক আলোচিত।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সাহিত্যে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলা একাডেমী এ বছর বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. নুরুন নবীকে সম্মানসূচক ‘ফেলোশীপ’ প্রদান করে।
আমেরিকার নিউজার্সীর প্লেন্সবরো টাউনশিপ কমিটির নির্বাচনে চতুর্থ বারের মতো কাউন্সিলম্যান হিসাবে নির্বাচিত হয়ে, জনসেবায় বিশেষ ভূমিকা রাখায় বেশ ক’বার প্লেন্সবরো ডেমোক্রেটিক অর্গানাইজেশনের দেয়া পুরস্কার লাভ করেন এই বাংলাদেশী।
এসআর
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি
আপনার মন্তব্য লিখুন...