প্রথম শ্রেণীর ছাত্রী। বয়স ছয়ের মতো। স্পষ্ট করে শ্রেণীর নামটাও বলতে শিখেনি শিশুটি। লম্বা সময় পড়ে আছে শিশুটির সামনে। কিন্তু শুরুতেই হোঁচট খেতে হল শিশুটিকে। দেখতে হলো পশুত্বের বৈশিষ্ঠ্য। অর্জন হলো নতুন অভিজ্ঞতা। সুন্দর পৃথিবীর নোংড়া চিত্রে পাল্টে গেল নিস্পাপ শিশুটির ধারণা।
এমনটিই ঘটেছে দেলদুয়ার উপজেলার লাউহাটী ইউনিয়নের বর্ণী গ্রামের এক শিশুর সাথে। শিশুটি বর্ণী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণীর ছাত্রী।
তবে পার্শ্ববর্তী একজন নারী ঘটনাটি দেখে ফেলায় ধর্ষণের হাত থেকে অল্পের জন্য বেঁচে যায় ওই শিশুটি।
অভিযোগ উঠেছে, গত রোববার দুপুরে শিশুটি স্কুল শেষে বাড়ি ফিরছিল। পথে পাশের একটি লেবু বাগানে শিশুটিকে আটকে ফেলে পাশের বাড়ির সৈয়দ আলী নামের এক বৃদ্ধ। বেঁধে ফেলে তার মুখ। শিশুটিকে ধর্ষণের চেষ্টা অবস্থায় দেখে ফেলে এক নারী। ফলে বেঁচে যায় শিশুটি।
শিশুটির মা সোনিয়া বেগম ও বাবা শাহজাহান জানান, শিশুটি এখনও ভয়ে আছে। স্থানীয়দের মিমাংশার আশ্বাসে এখনও থানায় মামলা করেননি শিশুটির পরিবার। এদিকে অভিযুক্ত ব্যক্তির নামে আগেও এধরণের ঘটনার অভিযোগ রয়েছে বলে জানান তারা।
পাশের বাড়ির এক ছেলেকেও বলৎকার করার অভিযোগ রয়েছে ওই ব্যক্তির নামে। ছেলেটির মা সেই ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন।
শিশুটি স্পস্ট করে কথা বলতে না পরলেও বার বার বলছে, তাকে লেবু বাগানে নগ্ন করা হয়েছিল। এমনকি জড়িয়ে ধরেছিল অভিযুক্ত ব্যক্তি।
ধর্ষণ হয়নি। ধর্ষণের চেষ্টা ভেবে বিষয়টি মিমাংশার দায়িত্ব নিয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালী কয়েকজন। কিন্তু এখনও ঘরোয়া বৈঠকে মিমাংশা করতে পারেনি তারা।
বুধবার ও বৃহস্পতিবার দু-রাতেই মিমাংশার জন্য স্থানীয়রা একত্র হয়েও ব্যর্থ হয়েছে বলে জানা গেছে।
ইতোমধ্যে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। অপর একটি মহল অর্থের বিনিময়ে বিষয়টি মিমাংশা করার চেষ্টা করছে বলেও জানা গেছে।
অভিযুক্ত সৈয়দ আলীর বাড়ি গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তার ভাই আতোয়ার রহমান ঘটনার মৌন স্বীকারোক্তি দিয়ে বললেন, তার জন্য আমি, আমার পরিবারের সদস্যরা বাইরে বেরুতে পারছি না। কাউকে মুখ দেখাতে পারছি না। যেকোন উপায়ে বিষয়টি মিমাংশার দাবি জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, তার ভাই সৈয়দ আলী এরকম আর কোন ঘটনা ঘটালে তার বাড়ি উচ্ছেদ করে শহরে পাঠিয়ে দিবেন তিনি। তবুও এবারের মতো মিমাংশার অনুরোধ করেন তিনি।
বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় শিশুটির স্বজনরা থানায় মামলা না করলেও খবর পেয়ে দেলদুয়ার থানার এস আই হান্নান পরিদর্শন করেছে ওই শিশুটির বাড়ি। পুলিশ প্রাথমিকভাবে বলছেন, শিশুটি ধর্ষিত হয়নি। তবে ধর্ষণের চেষ্টা হতে পারে বলেও তিনি অস্বীকার করেননি।
শিশুটি পুলিশকে নগ্ন করার বিষয় জানিয়েছে স্বীকার করে তিনি বলেন, এখনও কোন মামলা হয়নি। মামলা দিলে পুলিশ গুরুত্বে সাথে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নিবে।
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি
আপনার মন্তব্য লিখুন...