কার বাঁশি বাজে/মুলতান সুরে/নদীর কিনারে, কে জানে’- বাংলা সংগীত কিংবা সাহিত্যে বাঁশির এমন সরব উপস্থিতি শিল্পরসিক যে কারোরই হৃদয়ের গভীরে নাড়া দেয়, কথা কয়ে ওঠে।
যান্ত্রিক যুগে নগরে কি গ্রামে, কোথাও বাঁশির সেই আবেগী সুর আগের মতো আর শুনতে পাওয়া যায় না। তারপরও যখন কানে ভেসে আসে চিরচেনা সেই সুর, তখন উদাসী মন হঠাৎই থমকে দাঁড়ায়। ক’দিন আগে চলার পথে ভরদুপুরে এক বাঁশির সুর, ঠিক তেমনি থমকে দিয়েছিল চলার গতি। পছন্দের মানুষকে মন খুলে প্রাণের সত্যি কথাটি বলতে না পেরে শিল্পীমনের কেউ কেউ বাঁশিতে সে কথা ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেন। কেউবা ব্যর্থ প্রেমের অভিব্যক্তিকেই জানান দেন বাঁশির সুরে।
তবে ওইদিন যে বাঁশির সুর শুনে থমকে দাঁড়িয়েছিলাম, সেটি এসব কারণে নয়- তা জানা গেল সেই বংশীবাদকের সঙ্গেই কথা বলে। বিনোদনের টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে আসাদুজ্জামান রতন (৬০) মূলত তাকে রতন আর্টিস্ট নামে সবাই চিনে। কিন্তু নিজের মনের একান্ত কিছু দুঃখকে জয় করতেই ঘাটাইল টক নদী ও যে কোন স্থানে বসে বাঁশি বাজান। গ্রামাঞ্চলে বাউন্ডেলেদের মধ্যে অলস দুপুরে বাঁশি বাজানোর চিরাচরিত প্রবণতা লক্ষ্য করা গেলেও ফুড ভিলেজ রেস্টুরেন্টের বাঁশি বাজাতে তাকে দেখা যায়।
সৌভাগ্যবশতঃ ছোট বড় তিন সমঝদার শ্রোতাও জোটে তার ভাগ্যে। পরম আনুগত্য ও নীরবতা পালন করে বাঁশি গুন ছিল মোহাম্মদ সৈকত ও মোহাম্মদ ফিরোজ শুধু ওই দিনই নয়, প্রতিদিন এরকম শ্রোতার অভাব হয় না আসাদুজ্জামান রতনের। উল্লেখ করার মতো বিষয় হচ্ছে, আসাদুজ্জামান রতন তিনি মূলত একজন শিক্ষক তিনি ঘাটাইল ক্যান্টনমেন্ট ইংলিশ স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক ।
এবিষয়ে আসাদুজ্জামান রতনের কাছে জানতে চাইলে বলেন, এখন বংশীবাদক এটা আমার শকের বসত। ঐতিহাসিক কিন্তু বিস্মৃত সেই অঙ্গনে এমন বাঁশির সুর যেন নতুন আবেদন নিয়ে হাজির হয়েছে। অনেকটা অনধিকার চর্চার মতোই ‘অন্যজগতে’ হারিয়ে যাওয়া এই বাঁশি কিছু ভক্তদের কাছে গিয়ে বসতেই হঠাৎ মুগ্ধ হয়ে যায় ওরা। কিছু সময় তাদের নানা গল্প শোনার পর পছন্দের অনেক গানের সুর বাঁশিতে তুলে আসাদুজ্জামান রতন। শোনায় যায় ওরে নীল দরিয়া আমায় দেরে দে ছাড়িয়া আরও বিভিন্ন ধরনের গানের তালে বাঁশি বাজান তিনি।
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি
আপনার মন্তব্য লিখুন...