০৫:০০ এএম | টাঙ্গাইল, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪
প্রতিষ্ঠাতা মরহুম আব্দুল ওয়াহেদ মিয়া

তীব্র শীতে জমজমাট হকার্স মার্কেট

বিশেষ প্রতিনিধি | টাঙ্গাইল২৪.কম | শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০১৯ | |
, টাঙ্গাইল :

টাঙ্গাইলে জেঁঁকে বসেছে শীত। শীতের এ তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জমে উঠেছে জেলা সদর ও আদালত এলাকায় পুরাতন শীত বস্ত্রের মার্কেট। নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের শীতের কাপড়ের চাহিদা মেটাতে এই মার্কেটে বসেছে তিন শতাধিক দোকান। নি¤œ  আয়ের ক্রেতারা দাম কম পেতে ভিড় জমাচ্ছেন রাস্তার পাশে ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের পরিত্যক্ত জায়গায় সম্পূর্ণ অস্থায়ী ভিত্তিতে গড়ে ওঠা ওই মার্কেটের দোকান গুলোতে। এ এলাকায় প্রতিবছর হেমন্তের শুরুতে মৌসুমী শীত বস্ত্রের বাজার বসে থাকে, এবারও বসেছে। কম দামে শীত বস্ত্র পাওয়ার আশায় ক্রেতারাও ভীর জমাচ্ছেন। তবে এ মার্কেট গুলোতে পুরাতন শীতবস্ত্রের বাজার জমে উঠলেও গত বছরের তুলনায় এবার দাম কিছুটা বেশি। এরই মধ্যে দরদাম করে কেনা-বেচাও করছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা।

বিক্রেতারা বলছেন, গত বছরের তুলনায় প্রতি বেলে তাদের গুণতে হচ্ছে অতিরিক্ত দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা। এই অতিরিক্ত টাকা দেয়ার পরও তাদের কিনতে হচ্ছে নিম্ন মানের বেল্ট। যা বিক্রি করে মূলধন আর যাতায়াতের খরচই উঠানো কষ্টকর হয়ে উঠেছে। 

টাঙ্গাইলের শীতের পুরাতন কাপড়ের বাজার ঘুরে দেখা যায়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সংলগ্ন সরকারি পরিত্যক্ত জায়গা আর আদালত চত্ত্বর এলাকায় তিন শতাধিক দোকান বসেছে। এ স্থানের প্রতিটি দোকানই শীতের কনকনে ছোঁয়া লাগার সাথে সাথেই জমজমাট হয়ে উঠেছে কেনাকাটা। এ মার্কেটটি মূলত গরীবের মার্কেট হিসেবে পরিচিত। প্রতিদিন প্রতিটি দোকানে চার থেকে পাঁচ হাজার টাকার বেচাকেনা হচ্ছে বলে ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা জানান।

পৌষ আর মাঘ মাসের হাড় কাঁপানো শীতের তীব্রতা থেকে রক্ষা পেতে গরম কাপড় ক্রয়ের জন্য ঝুঁকছেন মানুষ। উচ্চ আয়ের মানুষেরা বিভিন্ন নামিদামি মার্কেট থেকে বিভিন্ন ধরনের গরম কাপড় কিনতে পারলেও গরীব আর নিম্ন আয়ের মানুষের একমাত্র ভরসা টাঙ্গাইল আদালত চত্ত্বর আর জেলা সদরের হকারদের বিক্রি করা গরম কাপড়ের এই মার্কেট। জেলা প্রশাসন ও আদালতে প্রয়োজনীয় কাজে আসা মানুষগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণে হকাররা নানাভাবে নারী, পুরুষ, শিশু, তরুণ-তরুণীদের দৃষ্টি আকর্ষণে হাক-ডাক দিচ্ছেন।

পৌর এলাকার ক্রেতা গৃহিনী মাহবুবা আকতার, হালিমা বেগম, মাজেদা খাতুন, দেলদুয়ারের জাহাঙ্গীর হোসেন, আলম মিয়া, রবিন খান, বাসাইল উপজেলার আজমত আলী, লোকমান হোসেন সহ অনেকেই জানান, গত বছর মহিলাদের যে পাতলা সোয়েটার ১০০-১২০ টাকা দাম ছিল, এবার শীত আসার শুরুতেই তা কিনতে লাগছে ১৫০-২০০ টাকা। খুব প্রয়োজন ও শীত নিবারণের জন্য বাধ্য হয়েই তারা চড়া দামে এই কাপড় কিনছেন। 

শহরের কলেজ পাড়ার গৃহিনী রোকেয়া বেগম, জাকিয়া সুলতানা ও কলেজছাত্রী ইসরাত জাহান জানান, মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্য তারা। সন্তানসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের শীত নিবারণ আর ঘরে পড়ার জন্য অল্প দামে গরম কাপড় কিনতে এসেছেন, কিন্তু যে দাম দেখছেন তাতে এই মার্কেটেও তাদের কাপড় কেনাকাটা অসম্ভব হয়ে পরেছে।

সদর উপজেলার পুরাতন কাপড় ব্যবসায়ী রজিব মিয়া, মো. মাখন মিয়া জানান, গত বছর পুরাতন শীতের কাপড়ের যে বেল চট্টগাম থেকে সর্বনিম্ন ১২ থেকে ১৮ হাজার টাকায় আনা যেত, এ বছর সেই বেল আনতে লাগছে সর্বনিম্ন ১৮ থেকে ২২ হাজার টাকা। তুলনায় দুই থেকে আড়াই হাজার এবং আরো একটু মান সম্মত বেলে ৪-৬ হাজার টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বছর বেলের দাম বৃদ্ধি পেলেও কাপড়ের মান অন্য বছরের তুলনায় নিম্নমানের। যা ভেঙ্গে বিক্রি করে চালানের টাকা তোলা কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে। কেননা এই মার্কেটে যারা কেনাকাটা করতে আসেন তারা সস্তা আর অল্প টাকার ক্রেতা। এ কারণে কেনা ও বেচা উভয়ই দূঃসাধ্য হয়ে উঠেছে বলেও জানান তারা।

স্থানীয় কয়েকজন বিক্রেতা বলেন, আমরা সাধারণত সোয়েটার, জ্যাকেট, ট্র্যাকশুট, বিভিন্ন ধরণের গরম জামা, মোজা, টুপি, বাচ্চাদের কাপড়, প্যান্ট-কোট, চাঁদর, কম্বল, ট্রাউজারসহ বিভিন্ন ধরনের শীতের কাপড় বিক্রি করে থাকি। আমরা চিটাগাং এর আমিন মার্কেট থেকে বেল হিসেবে এসব শীতের কাপড় নিয়ে আসি। বিভিন্ন ধরনের বেল বিভিন্ন রকমের দাম। সোয়েটারের ছোট বেল ১০ হাজার টাকা,  ট্র্যাকশুট ২২হাজার টাকা, ব্যাগ ২৩ হাজার টাকা, বড় সোয়েটার ১৯ হাজার। বেল ভাঙার পর কাপড়গুলোর একটা গড় মূল্য নির্ধারণ করার পর আমরা বিক্রি শুরু করি। খরচ বাদে যা থাকে তাতে মোটামুটি ভালই লাভবান হই।

বিক্রেতারা আরো জানান, এ বছর বেলের দাম বাড়ার কারণে বেচাকেনা কমে গেছে। সাধারণ গ্রাহকদের ধারণা ব্যবসায়ীরা মনগড়া দাম চাইছে। কিন্তু চট্টগ্রাম থেকে টাঙ্গাইল পর্যন্ত একটি বেল আনা ও যাতায়াতসহ প্রতি বেলে দুই  থেকে আড়াই হাজার টাকা খরচ বেশি হওয়ায় মালের দাম কিছুটা বেড়েছে। তাদের প্রশ্ন, রোদে পুড়ে ও কষ্ট করে প্রতি বেলে এক হাজার টাকার ব্যবসা না হলে তারা বাঁচবেন কিভাবে?

এ প্রসঙ্গে টাঙ্গাইল জেলা হকার্স লীগের সভাপতি মো. বাদশা মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক মো. বাবলু মিয়া জানান, তারা সম্পূর্ণ অস্থায়ী ভিত্তিতে সরকারি পরিত্যক্ত জায়গায় দোকান করে জেলার সাধারণ মানুষের সেবার পাশাপাশি নিজেদের সংসার চালাচ্ছেন। এখান থেকে জেলার ১২টি উপজেলার মানুষ সস্তায় শীতের কাপড় কিনে থাকেন। পরিত্যক্ত হলেও মাঝে মাঝে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উচ্ছেদ করার কথা বলা হয়, যা তাদের কাম্য নয়। সরকারের প্রয়োজনে এসব অস্থায়ী দোকানগুলো যেকোন সময় সরিয়ে দেয়া যাবে। তবে অহেতুক হকারদের উচ্ছেদ না করার দাবি জানান তারা।

আপনার মন্তব্য লিখুন...

ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মসজিদ কর্তৃপক্ষকে মারধরের হু সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে আহত এসআই : গ্রেফতার ১৬ মির্জাপুরে গরীব ও দুস্থ মহিলাদের মাঝে সেলাই মেশিন বিতরণ মির্জাপুরে প্রতিপক্ষের হামলায় নারীসহ এক পরিবারের ৪জন আহ মির্জাপুরের বাঁশতৈলে ৮টি অবৈধ কয়লার চুল্লি ধ্বংস ধনবাড়ীতে প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত চলন্ত ট্রেনের ছা‌দ থে‌কে যাত্রীর মর‌দেহ উদ্ধার নাগরপুরে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার দিলেন তারানা হালিম বঙ্গবন্ধু সেতুতে একদিনে ৩কোটি টাকার টোল আদায় ''মানুষের কল্যাণে মানুষ'' ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ঈদ সামগ্র ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে ১৭ কিলোমিটার এলাকা ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং, ফুড সাইন্স এন্ড টেকনোলজি বা ফুড টেকনো ঈদের বাজার নিয়ে এবার বাড়ি ফিরবে না মেহেদী ৩২ ঘন্টায় বঙ্গবন্ধু সেতু পাড় হয়েছে প্রায় ৪২ হাজার পরিবহ পীর শাহজামান মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির উদ্যোগে ইফতার মাহফ

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি