প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের আবাসিক এলাকায় স্থাপিত এএনবি-২ ভাটায় ফের পোড়ানো হচ্ছে ইট। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
গত ২০ মে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. মঈনুল হক ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে তিন মাসের মধ্যে ওই এলাকা থেকে ইটভাটাটি সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেন। এছাড়া আবাসিক এলাকায় অনুমোদনহীন ইটভাটা স্থাপনের অপরাধে ভাটা মালিকের কাছ থেকে এক লাখ টাকা জরিমানাও আদায় করা হয়।
এ সময় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) টাঙ্গাইল জেলার উপ-পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান, কোর্ট পরিদর্শক মো. বুলু মিয়া, এসি মো. সিরাজুল হক, টাঙ্গাইল জেলা পরিবেশ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ মুজাহিদুল ইসলাম ও পরিদর্শক সজীব কুমার ঘোষ উপস্থিত ছিলেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মির্জাপুরের গোড়াই ইউনিয়নের সোহাগপাড়া গ্রামের আব্দুর রহিম ও তার আত্মীয় রেজাউল করিম উপজেলার বহুরিয়া ইউনিয়নের বহুরিয়া পূর্বপাড়া এলাকায় প্রায় ১৭ একর আবাদি জমির ওপর এএনবি-২ নামে একটি ইটভাটা স্থাপন করেন। ভাটাটির তিনদিকে বিপুল পরিমাণ আবাদি জমি ও একপাশে নদী রয়েছে। সংশ্লিষ্ট দফতরের অনুমোদন ছাড়াই সেখানে তৈরি হতো ইট।
গত মে মাসে ভাটার চিমনি থেকে বের হওয়া ধোঁয়ায় আশপাশের প্রায় ১৬ একর জমির ধান নষ্ট হয়। এছাড়া ভাটা সংলগ্ন এলাকার বিভিন্ন গাছের ফল নষ্ট হয়ে ঝরে পড়ে। এ সংবাদ পেয়ে প্রশাসনের নির্দেশে উপজেলার সহকারী ভূমি কমিশনার (এসি ল্যান্ড) মো. মঈনুল হকের নেতৃত্বে দুদক ও পরিবেশ অধিদফতরের একটি দল যৌথভাবে ওই ইটভাটায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।
এ সময় আবাসিক এলাকায় অনুমোদনহীন ইটভাটা স্থাপনের অপরাধে ভাটা মালিকের কাছ থেকে এক লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। সেই সঙ্গে তিনমাসের মধ্যে ইটভাটাটি ওই এলাকা থেকে সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
এরপর ওই ভাটায় কিছুদিন ইট তৈরি বন্ধ ছিল। কিন্তু সম্প্রতি সেখানে ফের ইট তৈরি ও পোড়ানোর কাজ শুরু হয়েছে। এ নিয়ে স্থানীয় কৃষক ও সাধারণ মানুষের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
ইটভাটার ম্যানেজার জুয়েল রানা জানান, কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেয়াসহ বিভিন্ন দফতরে প্রায় ২০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে।
ইটভাটা মালিক মো. আবদুর রহিম জানান, ২শ শতাংশ জমির মধ্যে ইটভাটা স্থাপনের জন্য টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে গত ২৮ অক্টোবর ১০ লাখ পিস ইট পোড়ানোর জন্য অনুমতি পত্র পেয়েছেন (লাইসেন্স নম্বর ০৮/২০১৯-২০২০)।
তবে ভাটার জন্য ১৭ একর জমি কেন ব্যবহার করা হচ্ছে এমন প্রশ্নে নীরব থাকেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে মির্জাপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মঈনুল হক জানান, অনুমোদন ছাড়াই আবাসিক এলাকায় এএনবি-২ নামে একটি ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে। ওই ভাটার ধোঁয়ায় আশপাশের জমির ধান নষ্ট হওয়ার খবর পেয়ে ও সেখানে অভিযান চালিয়ে তিন মাসের মধ্যে সেটি সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। অভিযানকালে ওই ইটভাটা মালিকের কাছ থেকে এক লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছিল।
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি
আপনার মন্তব্য লিখুন...