নানা ধর্ম আর বর্ণের ১৬ কোটি মানুষের এই বাংলাদেশ। ৬৮ হাজার গ্রামের এই বাংলায় রয়েছে নানা সংস্কৃতি আর ঐতিহ্য। যুগ যুগ ধরে চলে আশা এই সকল সংস্কৃতির সাথে মিশে আছে বাঙ্গালীর প্রাণ। প্রকৃতির নিয়মে মানুষ হারিয়ে গেলেও হারিয়ে যায়নি বাঙ্গালীর এই সকল ঐহিত্য।
কথায় আছে ১২ মাসে বাঙ্গালীর ১৩ পার্বন। সংস্কৃতিমনা এই বাঙ্গালীরা বিনোদনের খোয়ার হিসেবে পালন করে নানা উৎসব। আর বৈশাখ তথা বাংলা নববর্ষ এলে এই উৎসবের আয়োজনটা খানিকতা যেন বেড়েই যায়।
শতভাগ বাঙ্গালীআনার এই উৎসবকে ঘিরে আনন্দের জোয়ারে ভাসে বাঙ্গালীরা। বাঙ্গালীদের এই উৎসবের আনন্দে রাঙ্গাতে টাঙ্গাইলে অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো দুইদিন ব্যাপী ওয়ালটন বৈশাখী মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
টাঙ্গাইল সদর উপজেলার গোসাই জোয়াইর আজিম মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গণে ওয়ালটনের সৌজন্যে ৬ষ্ঠ বারের মতো দুইদিন ব্যাপী এই মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে স্থানীয় আদর্শ যুব সংঘ।
দুইদিন ব্যাপী এই মেলায় আজ প্রথম দিনে আয়োজন করা হয় আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের।
বিকেলে আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন গ্রুপের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এস.এম নূরুল আলম রেজভী। মেলার উদ্ভোধন ঘোষনা করেন টাঙ্গাইল সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এডভোকেট খোরশেদ আলম, বিশেষ অতিথি ছিলেন কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু নাসের।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন গ্র“পের ডেপুটি ডিরেক্টর নাজমুল আহসান, ডেপুটি ডিরেক্টর মহসিন মোলা, সিনিয়র এজিএম শাফায়াত হুদা।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আদর্শ যুব সংঘর্ষের সভাপতি আমিনুর ইসলাম তুষার।
আলোচনা সভা শেষে মেলা প্রাঙ্গণে আয়োজন করা হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন ঢাকা থেকে আগত শিল্পী তন্নী, আভা ও মামুন। ২ দিন ব্যাপী এই মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অনলাইন মিডিয়া পার্টনার ছিলো নিউজ পোর্টাল রাইজিংবিডিডটকম।
এদিকে মেলাকে ঘিরে সকাল থেকেই গোসাই জোয়াইর গ্রামে সৃষ্টি হয় এক উৎসবের আমেজ। দূর-দূরান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন পন্য নিয়ে আসে এই মেলায়। আর গোসাই জোয়ার সহ আশেপাশের সুরুজ, শালিনাসহ প্রায় ১৫টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের আগমন ঘটে এই মেলায়। বাঙ্গালীদের অনান্য বৈশাখী মেলার মতো এই মেলাতেও বসে মুড়ি, আকড়ি, মিষ্টিসহ নানা খাবাবের আসর। বসে আসবাবপত্র ও নিত্যপন্যের বাজার।
করটিয়া থেকে আসবাবপত্র নিয়ে আসা জাহাঙ্গীর আলম জানান, খাট, সোফা, আলমারীসহ ঘরসাজানোর কাঠের নানা ফার্নিচার নিয়ে এসেছি। অন্যান্য বৈশাখী মেলা থেকে এখানে ভালোই সাড়া পেয়েছি। আর তাছাড়া আমাদের এখানে বাইড়ে থেকে আসবাবপত্রের দাম অনেক কম, সাথে মানও ভালো।
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর থেকে মেলায় ঘুরতে আসা আব্দুল জলিল বলেন, শুনেছি এই মেলায় ভালো স্টীলের আসবাবপত্র পাওয়া যায়। তাই একটি আলমারী কিনতে এসেছি। দামের ব্যাপারে তিনি বলেন, এখানে বাইড়ের দোকান থেকে দাম অনেক কম। তবে মান কেমন হবে সেটা এখনো বুঝতে পারছি না।
মেলাকে ঘিরে উৎসবে মেতেছে স্থানীয় শিশু কিশোররা। মেলা প্রাঙ্গণে চোখে পরে হাতে-গালে রং দিয়ে বৈশাখ লেখার হিরিক।
পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মেলায় ঘুরতে আসা পার্শ্ববর্তী সুরুজ গ্রামের রেজাউল জানান, আগে বৈশাখে এই এলাকায় কোন মেলা হতো না। কিন্তু গত ৪ বছর ধরে এমন একটি মেলা হওয়ায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বৈশাখে বেড়াতে পারি।
মেলায় আসা কসমেটিক ও খেলনার দোকানগুলোতে ছিলো ক্রেতাদের ভিড়। আর ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হয় বিক্রেতাদের।
এদিকে মেলা উপলক্ষে ওলায়টনের পক্ষ থেকে পুরো মেলা প্রাঙ্গণে নেয়া হয় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি
আপনার মন্তব্য লিখুন...