একজন সুনাগরিকই পাড়ে তাদের নিজেদের সমস্যার সমাধান করতে। সম্প্রতি টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার লাউহাটি ইউনিয়নের পাচুরিয়া গ্রামের মানুষ তাদের নিজেদের উদ্যোগে এবং সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে তৈরী করছে দীর্ঘ দুই কিলোমিটার রাস্তা।
রাস্তাটি নির্মাণের প্রধান উদ্যোগক্তা জাকির হোসেন স্বপন, যার প্রচেষ্টায় এবং গ্রামবাসীদের প্রচেষ্টায় রাস্তা তৈরীর কাজ এগিয়ে চলছে।
পাচুরিয়া গ্রামটি ধলেশ্বরী নদীর তীরবর্তী হওয়ায় প্রতিবছরই ক্ষতিগ্রস্থ হয় গ্রামটি সে জন্য এখনো গ্রামটিতে উন্নয়নের ছোয়া লাগেনি। প্রায় দীর্ঘ দুই যুগ ধরে বন্দী অবস্থায় জীবন-যাপন করছে তারা। রাস্তা না থাকার কারনে প্রতিনিয়ত তারা দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছে। কখনো ধলেশ্বরী নদীর পাড় দিয়ে, কখনো আবার মানুষের বাড়ির উপর দিয়ে বাঁশ ঝাড় ঝোপ জঙ্গল দিয়ে যেতে হয় তাদের।
আর বৃষ্টি হলে দুঃখে সীমা থাকে না মানুষ গুলোর। বর্ষা মৌসুমে একটানা ২০-২৫ দিন পানি বন্দি থাকতে হয়। প্রতি দিন এই এলাকা থেকে শত, শত শিক্ষাথী লাউহাটি আসে।
রাস্তা ঘাট না থাকায় চরম দুর্ভোগ প্রহাতে হয় এসব এলাকার শিক্ষার্থীদের। এ এলাকায় যানবাহন তো দূরের কথা সাইকেল নিয়ে যাওয়া কঠিন ব্যাপার। এলাকার বেশির ভাগ মানুষ কৃষির ওপর নির্ভশীল ফলে প্রতিদিন তাদের কৃষিপণ্য নিয়ে যাতায়াতে কষ্ট বিপাকে পড়তে হয়। রাস্তা ঘাট না থাকায় এ এলাকায় মানুষ আত্মীয়তা করতে অনিহা প্রকাশ করে। অনেক সময় জরুরী রোগীদের নিয়ে বিপদে পড়তে হয়।
এলাকাবাসী আজাদ খান জানায় রাস্তা না থাকার কারণে আমরা অর্থনৈতিক ভাবে, সামাজিক ভাবে অন্য সব এলাকার থেকে পিছিয়ে আছি। শুধু মাত্র রাস্তা না থাকার কারণে আমাদের ছেলে মেদের ভাল জায়গায় বিয়ে দিতে পারি না, কেউ এলাকার সাথে আত্মীতা করতে চায় না।
মজ্জেম নামে একজন জানায়, আমরা কৃষি কাজ করি, প্রতিদিন কৃষি পর্ণ্য নিয়ে আমাদের বাজারে যেত হয়, এতে করে আমাদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়।
ফজল নামে আরেক জন জানায়, রাস্তার কারণে বর্ষা মৌসুমে আমাদের পানিতে ভাসতে হয়, রাস্তাটি হলে বর্ষা কালিন সময় আমরা অনায়াসে যাতায়াত করতে পাড়ব। হারুন ও সজিব নামে দুই শিক্ষার্থী জানায় তাদের চরম দুর্ভোগের কথা।
আফছাড় নামে এক জন জানায়, আমরা সবার জন্য রাস্তা তৈরী করছি, রাস্তাটি হলে আমরা সবাই মুক্তি পাবো। আর যার উদ্যোগে রাস্তাটি হচ্ছে সেই জাকির হোসেন (স্বপন) অর্থায়ন সম্পকে জানায়, রাস্তাটি আমারা এলাকাবাসী ধনি-গরিব সবাই মিলে করছি, এলাকাবাসীর কেউ, কেউ আমাকে দুই হালি ডিমের পয়সাও দিয়েছে।
তিনি আরো জানায়, আমাদের ক্ষিদ্র অর্থায়নে রাস্তাটি করা কঠিন তবু আমরা চেষ্টা করছি, যদি জেলা প্রশাসন কিনংবা বেসরকারি সহযোগিতা পেতাম তবে সুন্দর ভাবে কাজটি সম্পূণ করতে পাড়তাম।
এই রাস্তাটি হলে তাদের দীর্ঘ দিনের বন্দী অবস্থার মুক্তি মিলবে তারা স্বাধিন ভাবে চলা-চল করতে পাড়বে।রাস্তাটি হলে শুধু পাচুরিয়া গ্রাম নয় আশেপাশের দশ হাজার মানুষের চলাচলের সুবিধা হবে।
এলাকাবাসী বলছে তাদের ক্ষুদ্র অর্থায়নে রাস্তার পুরো কাজ করাটা কঠিন, তবে সরকারি সহযোগিতা পেল এ রাস্তা করা সহজ হবে।
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি
আপনার মন্তব্য লিখুন...