টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানার জামিনের শুনানীকে কেন্দ্র করে শহরে ব্যাপক উত্তেজনা চলছে। এমপির সমর্থকদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার সেল নিক্ষেপ ও লাঠি চার্জ করেছে পুলিশ। এসময় ৮ রাউন্ড গুলি, ২টি ম্যাগজিন ও একটি বিদেশী পিস্তলসহ এমপি রানার দুই সমর্থকসহ আরো ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বুধবার সকালে এমপি রানাকে টাঙ্গাইল অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজের আদালতে হাজির করার পর এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, সকালে এমপি রানাকে আদালতে হাজির করার পর কোর্ট চত্তরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। কোর্ট চত্তর ঘিরে মুক্তিযোদ্ধা ফারুক এর সমর্থকরা এমপি রানার শাস্তির দাবীতের মিছিল করতে থাকে।
অপরদিকে এমপি রানার সমর্থকরা কোট চত্তরের বাইরে শাসছূল হক তোরণের সামনে জামিনের সমর্থনে মিছিল করতে থাকে। পুলিশ বার বার মিছিলটিকে রাস্তা থেকে সরে যেতে বললেও মিছিলকারীরা তাদের অবস্থানে অনড় থাকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও মিছিলকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে এক পর্যায়ে বেলা ১২টার দিকে পুলিশ ২ রাউন্ড টিয়ার সেল নিক্ষেপ ও ব্যাপক লাঠিচার্জ শুরু করে। এ সময় পুলিশ টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের সম্মুখ সড়ক থেকে ৮ রাউন্ড গুলি, ২টি ম্যাগজিন ও একটি বিদেশী পিস্তলসহ এমপি রানার দুই সমর্থকসহ আরো ১১ জনকে গ্রেফতার করে। এ নিয়ে শহরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
এ প্রসঙ্গে দুপুর দেড়টার দিকে হাসপাতাল গেট সম্মুখে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরিফুল হক অস্ত্রসহ গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, টাঙ্গাইল-৩ ঘাটাইল আসনের এমপি আমানুর রহমান খান রানার জামিন শুনানীকে কেন্দ্র শহরে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। বিরাজমান উত্তেজনা ও যে কোন নাশকতা ঠেকাতে শহরের পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে
এদিকে সকালে জেলা আওয়ামী লীগ নেতা মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদ হত্যা মামলার প্রধান আসামী টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানাকে আদালতে হাজির করা হয়। পরে টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মাকসুদা খানমের আদালতে শুধু মাত্র জামিন শুনানী হয়। জামিন শুনানীর পর আজ বিকাল ৪ টায় রায় ঘোষনা সময় ধার্য করা হয়।
এছাড়া মামলার পরবর্তী শুনানীর দিন ২৭ সেপ্টেম্বর ধার্য্য করেছে আদালত।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ লাশ তার কলেজপাড়া এলাকার বাসার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনার তিনদিন পর তার স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদি হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
২০১৪ সালের আগস্টে গোয়েন্দা পুলিশের তদন্তে এই হত্যায় এমপি রানা ও তার ভাইদের নাম বের হয়ে আসে। ২০১৬ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় গোয়েন্দা পুলিশ। এই মামলায় এমপি রানা ছাড়াও তার তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পাসহ ১৪জন আসামী রয়েছে।
গত ৬ সেপ্টেম্বর আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত।
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি
আপনার মন্তব্য লিখুন...