০৩:২৫ এএম | টাঙ্গাইল, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
প্রতিষ্ঠাতা মরহুম আব্দুল ওয়াহেদ মিয়া

ফেসবুকে আবেগঘন পোষ্ট, সহকর্মীদের ভালোবাসায় সিক্ত

একজন নন্দিত মামুনের গল্প

ডেস্ক রিপোর্ট | টাঙ্গাইল২৪.কম | রোববার, ৬ মে ২০১৮ | |
, টাঙ্গাইল :

“একজন নন্দিত মামুনের গল্প” শিরোনামে টাঙ্গাইল জেলা পুলিশে কর্মরত উপ-পরিদর্শক আব্দুল­াহ আল মামুনকে নিয়ে এক পুলিশ সদস্যর দেওয়া আবেগঘন ফেসবুক পোষ্ট ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে। একজন পুলিশ কর্মকর্তার কর্মময় জীবনের সংক্ষিপ্ত বিবরণটি আসলাম ভাই নামের এক ফেসবুক আইডির টাইমলাইনে পোষ্ট করার পর থেকেই টাঙ্গাইলে কর্মরত ও পূর্বে যারা দায়িত্বপালন করেছেন তাদের মধ্যে ব্যপক সাড়া পড়ে। সবাই সবার মত করে তার প্রতি শ্রদ্ধা আর ভালোবাসর বহিঃপ্রকাশ করেন।

নানা সময়েই পুলিশকে নিয়ে মানুষের খারাপ ধারনা পাল্টে দিতে পারে এমন এক পুলিশ কর্মকর্তার নাম এখন আব্দুল­াহ আল মামুন। হঠাৎই কেন তাকে নিয়ে এমন পোষ্ট তার কারণ জানা না গেলেও টাঙ্গাইল পুলিশ লাইনে কর্মরতদের মধ্যমনি যে তিনি তা প্রকাশ পেয়েছে লেখাটিতে। 

পুলিশ সদস্যর দেওয়া ফেসবুক পোষ্টটি টাঙ্গাইল২৪.কম এর পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো-
জনাব আব্দুল­াহ্ আল মামুন, এসআই (ফোর্স) টাংগাইল পুলিশ লাইন্স। টাংগাইল জেলা পুলিশের প্রত্যেকটা পুলিশ সদস্য চেনেন ওনাকে। ২০১৫ সাল থেকে তিনি ২০১৬ সাল টাঙ্গাইল জেলার মেজর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। টাঙ্গাইল জেলার বিগত মেজরদের ইতিহাস খুব একটা ভালোনা। অনেকেই ছিলেন যারা নিতী বিসর্জন দিয়ে ব্যস্ত সময় পার করতেন তাদের আখের গোছাতে। কিন্তু এসআই মামুনই একমাত্র ব্যক্তি যিনি নিজের সাথে কখনোই অন্যকে গুলিয়ে ফেলতেন না। ডিউটি আর ছুটি বানিজ্য তিনি কখনোই করেনননি।

টাঙ্গাইল পুলিশ লাইন্সে প্রায় ৭০০ ফোর্স। আর এই সাতশ লোকের ভালো মন্দ, ছুটি-রুটি, কে কোথায় ডিউটি করবে, কে কতটুকু ডিউটি করার পর বিশ্রাম করবে সেটা তিনিই নির্ধারন করে থাকেন। সাতশ লোকের কারোর ভেতর কোনদিন কোন সমস্যা মনে হলে তারা প্রথমেই খুজেন মামুন স্যারকে। ছোট-বড় যে কোন সমস্যায় তিনি সবাইকে তিনি সাহায্যে করে থাকেন। পর্যন্ত আমি ৯ মে-২০১৬ টাংগাইল জেলায় যোগদান করি। ওনাকে সেদিনই প্রথম দেখি। সেদিন থেকেই ব্যক্তিগত ভাবে আমি ওনার একজন ফ্যান/ভক্ত।

পুলিশ লাইন মাঠের রোল গ্রাউন্ডে বলছিলেন, আপনারা যারা আর্থিক সমস্যার জন্য ছুটি যেতে পারছেন না তাদেরকে বলছি, সমস্যা থাকলে বলবেন। দশ, বিশ যা লাগে বলবেন সমস্যা নেই দিবো। যেদিন পারেন দিয়ে দিবেন। এমন কথা ক'জনই বলে? নিজের বাবাও কখনো সন্তানকে বলেন না। 

আর তার কথাগুলো সেদিনই আমার খুব ভালো লেগে যায়। বলতে পারেন তার ভক্ত হয়ে যাই আমি। সেদিন থেকেই তাকে নিয়ে একটা কিছু লেখার লোভ আমার ভেতর কাজ করে। তবে সেটা তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে না তার কর্মজীবন নিয়ে। যেটা আমি বিগত পাঁচ মাসে দেখেছি। একজন মানুষ সবার কাছে ভালো হতে পারেনা এটা আমাদের সবারই জানা। তবে এই যে মানুষটা তিনি সবার কাছেই ভালো। টাংগাইল জেলার কনস্টবল টু এসপি পর্যন্ত। সততা, ন্যায়-নিতীর সাথে আপোষ তিনি কখনই করেন না। আর তার নিতীর উপর আস্থা রেখেই পুলিশ সুপার টাঙ্গাইল মহোদয় তাকে এসআই ফোর্স এবং অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে ওসি ক্লোথিং স্টোর- এর দায়িত্ব দিয়েছেন। যে কোন মানুষকে সরকার অতিরিক্ত আরেকটা দায়িত্ব নিশ্চয়ই দিবেনা। আর উনি এতোটাই এ্যাক্টিভ যে আর দুইটা দায়িত্বও তার নেবার মত এনার্জি কার ভেতরে আছে। 

টাংগাইল জেলার পুলিশ লাইনসের সকল সদস্যের ডিউটি বন্টন, ছুটি ভোগ, সুবিধা-অসুবিধা দেখার গুরু দায়িত্ব অর্পিত তার হাতে। তিনি নিজের নিতি আদর্শকে যদি জলাঞ্জলি দিতেন তাহলে তিনি অনেক কিছুই করতে পারতেন আর অনেকে করেনও। কিন্তু মামুন স্যার এসবকে মনে প্রানে ঘৃনা করেন। এক টাকা নিয়ে তিনি কাউকে কোন সুযোগ সুবিধা দিয়ে এমন নজির টাঙ্গাইল পুলিশ লাইন্সে নেই। তিনি বীরের মত অন্যায়ের প্রতিবাদ করেন। কোথাও কোন অনিয়ম দেখলেই দূর্বার গতিতে প্রতিরোধ। শত মানুষের মাঝেও তার গর্জন শোনা যায় প্রতিবাদের গর্জন। সত্য বলতে তার ভেতরটা এক বিন্দুও কাপেনা। জেলা পুলিশের একটা সদস্যও নেই যিনিএসআই মামুন কে খারাপ জানেন। সবার কাছে তিনি অত্যন্ত সম্মানের পাত্র। পুলিশ লাইন্সের যে কোন সমস্যার সমাধানের নাম এসআই মামুন। 

এবার আসা যাক তার বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কে। উনাকে আমি দেখেছি প্রায় তিনশত পুলিশ সদস্যের নাম, নাম্বার মুখস্ত করার মত দুঃস্বাধ্য কাজ করতে। উনি মুখ দেখে বলে দিতে পারেন দশদিন আগে কে কোন ডিউটি করেছে। কার ব্যবহার কেমন। আমলনামা ওনার মাথার ভেতরই গচ্ছিত থাকে।

এসআই মামুন ১৯৭৫ সালের ২৩ শে ডিসেম্বর ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর থানার অন্তর্গত জাটিয়া গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তার বাবা মোঃ গোলাম কিবরিয়া, মাতা মৃতঃ মাজেদা খাতুন। ৫ ভাই দুই বোনের ভেতর তিনি  মেজো সন্তান। তিনি ১৯৯২ সালে মিচকীপাড়া নৌজোয়ান উচ্চ বিদ্যালয় হতে এসএসসি এবং ১৯৯৪ সালে ফুলপুর ডিগ্রী কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন।

তিনি ১৯৯৫ সালের ২৯ শে আগষ্ট বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করেন। তিনি ২০০০ সালে নায়েক এবং ২০০৫ সালে এএসআই হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন।  ২০০৮ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি/বিপিএ সারদায় প্রশিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন এবং এর মাঝেই তিনি ২০০৯ সালে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহন করেন।

২০১২ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ তিন বসর তিনি চাঁদপুর জেলার মেজর হিসেবে তিনি কর্মরত ছিলেন। ২০১৫ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত মেজর টাঙ্গাইল এর দায়িত্ব তিনি অত্যন্ত সুনাম এবং দক্ষতার সহিত পালন করেন। 
 
আমার চাকরিজীবন খুব ছোট মাত্র ছয় বসর। আমার বিগত দিনগুলিতে এমন সৎ,নীতিবান, আদর্শবান,অ্যাক্টিভ মানুষ সশস্সত্র শাখায় আর দ্বিতীয়টি নেই। উনাকে সশস্ত্র শাখার রোল মডেল বলা যেতে পারে। মাথাটা বোঝাই বুদ্ধি গিজগিজ করে। হঠাৎ কোন বিপদের মাঝ থেকে কিভাবে স্বাভাবিক হওয়া যায় সেটা ওনার বেশ ভালো করে জানা।চেহারা যেমন সুন্দর তার ব্যবহারটা তার চেয়ে কয়েক গুন বেশি সুন্দর। খুব সাদামাটা হাসিখুশি মানুষ তিনি। চোখের পলকেই তিনি সবার সাথে তিনি মিশে যেতে পারেন। 

ভালো কে ভালো রাখা আমাদের দায়িত্ব। আর জেলা পুলিশের সবাই ওনাকে ব্যপক সম্মানের চোখে দেখেন।এমন মানুষকে ভালো না বললে তার প্রতি অন্যায় করা হবে।সবাই ওনাকে প্রচন্ড ভালোবাসেন।চাকরি যে যেখানেই করুন ওনাকে কেউ ভুলতে পারবেন না। হানড্রেড পারসেন্ট গ্যারান্টেড।

দোয়া থাকলো স্যার। আপনার আগামির দিনগুলি সুন্দর হোক। আমরা আপনাকে আগামিতে এএসপি হিসেবে দেখতে চাই হোক সেটা আর দশ বসর পরে।

ভালো থাকবেন সব সময়। অব্যাহত থাকুক আপনার এই সততার ধারা।

আপনার মন্তব্য লিখুন...

ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মসজিদ কর্তৃপক্ষকে মারধরের হু সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে আহত এসআই : গ্রেফতার ১৬ মির্জাপুরে গরীব ও দুস্থ মহিলাদের মাঝে সেলাই মেশিন বিতরণ মির্জাপুরে প্রতিপক্ষের হামলায় নারীসহ এক পরিবারের ৪জন আহ মির্জাপুরের বাঁশতৈলে ৮টি অবৈধ কয়লার চুল্লি ধ্বংস ধনবাড়ীতে প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত চলন্ত ট্রেনের ছা‌দ থে‌কে যাত্রীর মর‌দেহ উদ্ধার নাগরপুরে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার দিলেন তারানা হালিম বঙ্গবন্ধু সেতুতে একদিনে ৩কোটি টাকার টোল আদায় ''মানুষের কল্যাণে মানুষ'' ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ঈদ সামগ্র ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে ১৭ কিলোমিটার এলাকা ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং, ফুড সাইন্স এন্ড টেকনোলজি বা ফুড টেকনো ঈদের বাজার নিয়ে এবার বাড়ি ফিরবে না মেহেদী ৩২ ঘন্টায় বঙ্গবন্ধু সেতু পাড় হয়েছে প্রায় ৪২ হাজার পরিবহ পীর শাহজামান মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির উদ্যোগে ইফতার মাহফ

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি