শিক্ষার্থীদের মধ্যে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সৃষ্টি করার লক্ষ্যে সারা দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ন্যায় টাঙ্গাইলের পুলিশ লাইনস্ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়েও স্টুডেন্ট কেবিনেট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮ টা থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বিরতিহীনভাবে ভোট গ্রহন চলে।
সরেজমিনে পুলিশ লাইনস্ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকেই সারিবদ্ধভাবে লাইনে দাড়িয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
নির্বাচনে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ১ জন প্রধান নির্বাচন কমিশনার, ২ জন নির্বাচন কমিশনার, ১০ জন প্রিজাইডিং অফিসার এবং ২০ জন পোলিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করেন। নির্ধারিত সময়ে ভোট গ্রহন শেষে দুপুরে ফলাফল ঘোষনা করা হয়।
নির্বাচনে ৬ষ্ঠ (প্রভাতি, জবা) শ্রেণিতে ২৮৭ ভোট পেয়ে জান্নাতুল তাজনিন দিয়া, ৭ম (প্রভাতি, গোলাপ) শ্রেণিতে ৪৮৬ ভোট পেয়ে নৈঋতা হালদার, ৮ম (প্রভাতি, গোলাপ) শ্রেণিতে ৪০৯ ভোট পেয়ে সামিন খান ও শাপলা শাখায় ৩৭৯ ভোট পেয়ে জিতু খান, ৯ম (দিবা, গোলাপ) শ্রেণিতে ৩৬৪ ভোট পেয়ে রাফাত চাকলাদার, ৯ম (প্রভাতি, গোলাপ) শ্রেণিতে মো. হাসিবুর রহমান, ১০ম (দিবা, গোলাপ) শ্রেণিতে ৫২৩ ভোট পেয়ে তাসনিম তালুকদার প্রিয় এবং ১০ম (প্রভাতি, শাপলা) শ্রেণিতে ৩৫৭ ভোট পেয়ে সুমাইয়া আক্তার বিজয়ী হয়েছেন।
নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে নিয়োজিত ছিল শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেকেই ম্যাজিস্ট্রেট, র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
এছাড়া নির্বাচন দেশ ও বিদেশে সকলের কাছে স্বচ্ছ করতে বিদেশী নির্বাচন পর্যবেক্ষক এবং গণমাধ্যম কর্মীর সংখ্যাও ছিল চোখে পড়ার মত। আর এই সকল দায়িত্বও পালন করেছে শিক্ষার্থীরাই।
বিদেশী পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পালন করা নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী আস-সামী তাহিয়াত জানান, “এবছর নির্বাচনের পরিবেশ ছিল খুব ভালো। অত্যন্ত শৃঙ্খলার সহিত ভোট চলছে। ভবিষ্যতের নেতৃত্ব দিতে এ ধরনের নির্বাচন আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে খুবই কাজে দিবে।”
দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সালগী নকরেক জানান, “নির্বাচনে বিদেশী পর্যবেক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। এতে আমার খুবই ভালো লাগছে। নির্বাচনে শিক্ষার্থীরা উৎসাহ নিয়ে ভোট প্রদান করছে।”
৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী মার্জিয়া হোসেন জানান,“এ ধরনের নির্বাচন আমাদের প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা বজায় রাখার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি।”
৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. নাঈম জানান, “আমি প্রথমবারের মত এ নির্বাচনে ভোট দিতে পেরেছি। এতে আমার খুব ভালো লাগছে। যে প্রার্থী আমাদের শিক্ষার্থীদের ভাল-মন্দ দেখবে আমি তাকেই ভোট দিয়েছি।”
প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আব্দুল কাদের জানান, “সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বিরতীহীনভাবে ভোট গ্রহন চলে। জাতীয় নির্বাচনের আদৌলে প্রতিষ্ঠানে এ নির্বাচন করার চেষ্টা করেছি। শিক্ষার্থীরাই নির্বাচনের সকল দায়িত্ব পালন করেছে। শিক্ষকরা শুধু তাদেরকে সহযোগিতা করেছে। দেশের গণতান্ত্রিক চর্চার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের নির্বাচন খুব কার্যকরী হবে বলে আমি মনে করি।”
জেলা শিক্ষা অফিসার লায়লা খানম জানান, শিশুকাল থেকে শিক্ষার্থীদের মধ্যে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সৃষ্টি করা স্টুডেন্ট কেবিনেট নির্বাচনের মূল উদ্দেশ্য। শিক্ষার্থীদের অন্যের মতামতের প্রতি সহিষ্ণুতা এবং শ্রদ্ধা প্রদর্শন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিখন-শিখানো কার্যক্রমে শিক্ষকমন্ডলীকে সহায়তা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ঝরেপড়া রোধে সহযোগিতা, শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে অভিভাবকদের সম্পৃক্ত করা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ উন্নয়ন কর্মকান্ডে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহন নিশ্চিত করা এবং ক্রীড়া, সংস্কৃতি ও সহ-শিক্ষা কার্যক্রমে শিক্ষার্তীদের অংশগ্রহন করার লক্ষ্যে স্টুডেন্ট কেবিনেট নির্বাচন করা হয়।
বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে ১০ শ্রেণিতে অধ্যয়নরত প্রত্যেক শিক্ষার্থীই ভোটার তালিকার অন্তর্ভুক্ত। শিক্ষার্থীদের স্বত:ফ‚র্তভাবে অংশগ্রহনের মধ্য দিয়ে এ নিবার্চন সম্পন্ন হয়েছে।”
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি
আপনার মন্তব্য লিখুন...