সরকারি স্বাস্থ্যবিধি আর সামাজিক দূরত্ব মেনে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনার শর্তে আবার খুললো টাঙ্গাইলের মার্কেট,শপিংমলসহ সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত খোলা থাকবে মার্কেট ও শপিংমলগুলো। সরকার নির্ধারিত স্বাস্থ্যবিধিমালা মেনে ব্যবসা পরিচালনা করার শর্ত পূরন করায় টাঙ্গাইলে মার্কেট ও শপিংমল রোববার দুপুর থেকে খোলার অনুমতি দিয়েছেন জেলা প্রশাসক শহীদুল ইসলাম।
এর আগে সামাজিক দূরত্ব বজায় না রাখায় গত ১৪ মে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদী, কাঁচাবাজার আর ওষুধের দোকান ব্যতিত বন্ধ করে দেয়া হয় সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এ নিয়ে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়িরা।
রোববার দুপুরে জেলা প্রশাসক শহীদুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় শহরের বিভিন্ন মার্কেট ও শপিংমলগুলোর স্বাস্থ্যবিধিমালা সরেজমিনে পরির্দশন করে এ নির্দেশনা দেন। প্রতিটি মার্কেট ও শপিংমলের প্রবেশ পথে স্থাপন করা হয়েছে জীবানুনাশক ট্যানেল। দোকানে প্রবেশের আগে প্রতিটি ক্রেতার শরীরে ছিটানো হচ্ছে জীবানুনাশক স্প্রে। প্রতিটি ক্রেতা-বিক্রেতার মাস্ক ও হ্যান্ড গøাভ্স পরা বাধ্যতামুলক করা হয়েছে।
এসময় জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার জানান, স্বাস্থ্যবিধিমালা মেনে চলার বিষয়টি সার্বক্ষনিক মনিটরিং করা হবে।
ফরিদা, রিনা বেগমসহ কয়েক ক্রেতা স্বস্তি প্রকাশ করে বলেন, মার্কেট খোলায় আমাদের বাচ্চাদের পোশাক আর জুতা কেনা সম্ভব হয়েছে। এতে বাড়ির বাচ্চাদের মন কিছুটা হলেও ভালো হবে।
স্বস্তি প্রকাশ করে নিউ রোড ব্যবসায়ী সমিতির থ্রীপিস বিক্রেতা রাজিব বলেন, কয়েকটি উৎসবকে ঘিড়ে দোকান মালিকের ব্যবসা আর নির্ভর করে কর্মচারীদের বেতন বোনাস। তবে মুসলমানদের সর্বোচ্চ বড় উৎসব ঈদুল ফিতর এ ব্যবসায়িক সময়ে চলছে বিশ^মহামারি করোনার প্রাদুর্ভাব। দীর্ঘ দেড় মাস বন্ধ থাকায় দেউলিয়া হয়ে পরেছেন ব্যবসায়িরা। তবে এ উৎসবকালীন সময়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলে না খেয়ে মরার উপক্রম হতো তাদের। এতে তাদের বেতন আর বোনাস দেয়া সম্ভব হতোনা। তাই একটু দেরিতে হলেও স্বাস্থ্যবিধির সকল ব্যবস্থা সম্পন্ন করে মার্কেট খোলার অনুমতি দেয়ায় জেলা প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছেন তিনিসহ ব্যবসায়িরা।
এ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, সরকার নির্ধারিত স্বাস্থ্যবিধিমালা মেনে ব্যবসা পরিচালনা করার শর্ত পূরন করায় রোববার দুপুর থেকে পূনরায় মার্কেট, শপিংমলহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলার অনুমতি দেয়া হয়েছে। তবে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে কার্যক্রম। এছাড়াও প্রতিটি মার্কেট ও শপিংমলের প্রবেশ পথে স্থাপন করা হয়েছে জীবানুনাশক ট্যানেল। দোকানে প্রবেশের আগে প্রতিটি ক্রেতার শরীরে ছিটানো হচ্ছে জীবানুনাশক স্প্রে। প্রতিটি ক্রেতা-বিক্রেতার মাস্ক ও হ্যান্ড গøাভ্স পরা বাধ্যতামুলক করা হয়েছে। এরপরও ব্যবসায়ীরা যদি সরকার নির্ধারিত স্বাস্থ্যবিধিমালা আবার অমান্য করেন তাহলে পূনরায় বন্ধ করার কথাও বলেন তিনি। মার্কেট চলাকালিন সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে কিনা তা তদারকিতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন দায়িত্ব পালন করাসহ ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার কথাও জানান তিনি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায়, টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র জামিলুর রহমান মিরন, টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি অ্যাডভোকেট জাফর আহমেদ, টাঙ্গাইল চেম্বার এন্ড কমার্সের সভাপতি খান আহমেদ শুভসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যবসায়িক নেতৃবৃন্দ।
উল্লেখ্য, সরকারী নির্দেশনায় গত ১০ মে থেকে দোকান, মার্কেট ও শপিংমল খুলে ব্যবসা শুরু করেন টাঙ্গাইলের ব্যবসায়ীরা। খোলার পর থেকেই দোকান, মার্কেট ও শপিংমলগুলোতে ক্রেতাদের উপচে পরা ভীড় পরে যায়। এতে বিঘ্নিত হয় স্বাস্থ্যবিধিমালা মেনে চলার বিষয়। পরে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক গত ১৩ মে বিকেলে এক গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে পরদিন ১৪ মে থেকে দোকান, মার্কেট ও শপিংমলগুলো অর্নিদ্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষনা করেন। এর প্রতিবাদে ব্যবসায়ীরা মানববন্ধন করেন এবং স্বাস্থ্যবিধিমালা মেনে দোকান, মার্কেট ও শপিংমলগুলো খুলে দেয়ার দাবী জানান জেলা প্রশাসকের কাছে।
জেলা প্রশাসক ব্যবসায়ীদের শতভাগ স্বাস্থ্যবিধিমালা বাস্তবায়নের শর্ত দেন। শর্ত মেনে ব্যবসায়ীরা নিজ উদ্যোগে বিভিন্ন স্থানে জীবানুনাশক ট্যানেল স্থাপন করেন, প্রতিটি মার্কেটের সামনে পানির বেসিন স্থাপন ও ক্রেতা-বিক্রেতাদের সামাজিক দুরত্বের বজায় রাখার জন্য সীমানা নির্ধার করেন।
রোববার দুপরে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে একটি টিম দোকান, মার্কেট ও শপিংমলগুলো পরিদর্শন করেন। পরে জেলা প্রশাসক দোকান, মার্কেট ও শপিংমলগুলো খোলার নির্দেশনা দেন।
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি
আপনার মন্তব্য লিখুন...