টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার যদুরপাড়া গ্রামে বিদেশ থেকে আগত এক প্রবাসীর করোনা হয়েছে বলে এলাকায় মিথ্যে গুজব ছড়িয়ে প্রবাসী ওই পরিবারের কাছে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি ও প্রশাসনকে হয়রানি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রকৃতপক্ষে ওমান প্রবাসী হাফিজুর রহমান দুলাল এখনো দেশেই আসেননি বলে জানান তার পরিবার। এ বিষয়ে কালিহাতী থানায় ওই প্রবাসীর স্ত্রী রেহেনা পারভীন বাদি হয়ে একটি চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করেছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ৩০ মার্চ (সোমবার) কালিহাতীর তোফাজ্জল হোসেন তুহিন (৪২) নামের এক সাংবাদিক ওমান প্রবাসী এক পরিবারের কাছে করোনা ভাইরাসের ভয় দেখিয়ে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দিলে সে প্রশাসনকে দিয়ে হয়রানি করবে বলে তাদের হুমকি দেন। কিন্তু এরপরেও ওই পরিবার চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানান। আর এর পরিপ্রেক্ষিতে সাংবাদিক পরিচয়ে ওমান ফেরত প্রবাসী হোম কোয়ারেন্টাইন মানছে বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একাধিকবার ফোন করে সাংবাদিক তুহিন মিথ্যা অভিযোগ করেন। তুহিনের তথ্যের ভিত্তিতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে থেকে একটি টিম ওই প্রবাসীর বাড়িতে আসেন এবং পরিবার ও এলাকাবাসীর কাছে খোঁজ নিয়ে দেখেন ওই সাংবাদিকের তথ্যের কোন ভিত্তি নেই।
তোফাজ্জল হোসেন তুহিন ইংরেজী দৈনিক নেক্সট নিউজ এর সম্পাদক ও স্থানীয় তালেমন হযরত আলী মৎস প্রযুক্তি ইনস্টিটিউট কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও অধ্যক্ষ।
ভুক্তভোগী পরিবারের ছেলে রুহুল আমিন রাসেল জানান, তুহিন আমার আব্বা এসেছে এবং তার করোনা হয়েছে বলে মিথ্যে গুজব ছড়িয়ে আমাদের কাছে ১ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে সে প্রশাসনের ভয় দেখায় । তার মিথ্যা তথ্যে প্রশাসনের লোক আমাদের বাড়িতে আসায় আমাদের এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। আমরা এখন ঘর থেকে বের হতে পারছি না। মানুষ আমাদেরকে করোনা আক্রান্ত বলে তাড়িয়ে দিচ্ছে। সবাই আমাদের থেকে দূরে দূরে থাকছে । আমরা পরিবারের পক্ষ থেকে আসামীর গ্রেফতার দাবি করছি ও শাস্তি দাবি করছি ।
এ বিষয়ে তোফাজ্জল হোসেন তুহিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান অভিযোগটি মিথ্যা ও বানোয়াট।
উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) শাহরিয়ার রহমান বলেন, সে সাংবাদিক ও শিক্ষক। তার কাছ থেকে আমরা এমন মিথ্যে অভিযোগ আশা করিনি। যেখানে আমরা করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সারাদিন কাজ করে যাচ্ছি সেখানে তার নিজের স্বার্থের জন্যে এরকম মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ দিয়ে আমাদেরকে হয়রানি করা মোটেও ঠিক হয়নি। এটি একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীমা আরা নীপা বলেন, আমি করোনা ভাইরাস প্রতিরোধের একটি জরুরী প্রোগ্রামে ছিলাম। প্রবাসী হোমকোয়ারেন্টিন মানছে না বলে ওই দিন সাংবাদিক তুহিন পরিচয়ে একাধিকবার আমাকে মুঠোফোনে অভিযোগ করেন। তার তথ্যের ভিত্তিতে আমরা সেখানে গিয়ে দেখি তার অভিযোগের কোন ভিত্তি নেই। সেইসাথে তিনি আরো বলেন দেশের ক্রান্তিলগ্নে প্রত্যেক সাংবাদিকের পেশাদার মনোভাব থাকা প্রয়োজন।
এ বিষয়ে কালিহাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি ) হাসান আল মামুন জানান , আসামীকে দ্রুত গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
এসআর
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি
আপনার মন্তব্য লিখুন...