টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই বেপরোয়াভাবে চলাচল করছে শতাধিক হাইড্রোলিক ট্রাক। ফলে প্রতিনিয়ত দূর্ঘটনায় পঙ্গুবরণসহ প্রাণঘাতির ঘটনা ঘটছে। দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে এসব পরিবহন বেপরোয়াভাবে চলাচল করলেও আইনগত কোন কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার গোবিন্দাসীর জিগাতলা হতে বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব সিরাজকান্দি ও কালিহাতী উপজেলার জোকারচর, পুংলি পর্যন্ত অসংখ্য বালু ঘাট হতে বালু পরিবহন করে বিভিন্নস্থানে যাতায়াত করছে। এতে গ্রামীণ রাস্তাগুলোতে ওভার লোড হয়ে বালুবাহী হাইড্রোলিক ট্রাক চলাচল করায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। রেজিস্ট্রেশন বিহীন এসব ট্রাকগুলোর চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই।
জানা গেছে, বছরখানেক আগে ভূঞাপুর-তারাকান্দি সড়কের ভূঞাপুর বাজার সড়কে রেজিস্ট্রেশন বিহীন একটি হাইড্রোলিক ট্রাক পথচারী এক নারীকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। সম্প্রতি ভূঞাপুর-বঙ্গবন্ধুপূর্ব সড়কের খুপিবাড়ি এলাকায় বালুবাহী দুইটি হাইড্রোলিকের মুখোমুখি সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হয়।
এঘটনায় ট্রাক চালক ছাব্বিশা গ্রামের টনি পঙ্গুত্ববরণ করেন। বর্তমানে তার পরিবারের লোকজন অসহায় জীবন-যাপন করছে। এতে সেখানে থাকা আরেকজন পথচারী ভাদুরী চর গ্রামের আব্দুর বারীর একটি পাঁ ভেঙে পঙ্গু হয়ে ঘরে পড়ে রয়েছে। গত সপ্তাহে ভূঞাপুর-টাঙ্গাইল সড়কের শিয়ালকোল বাজারে জাহাঙ্গীর নামের এক পথচারীকে হাইড্রোলিকের একটি ট্রাক তাকে ধাক্কা দেয়। এতে তার বুকের পাজর ভেঙে যাওয়ায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন।
উপজেলা ট্রাক শ্রমিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাইনুল ইসলাম তালকুদার বলেন, দশ চাঁকার হাইড্রোলিকের অধিকাংশ ট্রাক বাইরে থেকে এসে ভূঞাপুরে চলাচল করছে। ট্রাকের রেজিস্ট্রেশন না থাকার বিষয়টি প্রশাসন দেখভাল করে। এতে শ্রমিক সংগঠনের কোন দায় নেই। ভূঞাপুর শ্রমিক সমিতিতে ২০/২৫টি ট্রাক অর্ন্তভুক্ত হয়েছে। বাকিগুলো এখনও সমিতিতে অর্ন্তভুক্ত হয় নাই।
উপজেলা এলজিইডি কর্মকর্তা আলী আকবর খান বলেন, দশ চাঁকার গাড়িগুলো বন্ধ করা প্রয়োজন। এই ট্রাকগুলোর কারনে উপজেলার বিভিন্ন রাস্তা অধিক ওজনের কারনে অল্পদিনেই নষ্ট হয়ে যায়। অনেক ইউপি চেয়ারম্যান রাস্তা নষ্টের জন্য হাইড্রোলিক ট্রাকগুলোকে দায়ী করে অভিযোগ দিয়েছেন। এবিষয়ে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে।
ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. রাশিদুল ইসলাম জানান, রেজিস্ট্রেশন বিহীন এসব ট্রাকগুলোর বিষয়ে পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ দেখভাল করে। উর্ধ্বতন কর্মকর্তার অনুমতি সাপেক্ষে হাইড্রোলিক ট্রাকগুলোর বিষয়ে অতিদ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
টাঙ্গাইল ট্রাফিক পুলিশের (প্রশাসন) ইনচার্জ মো. রফিকুল ইসলাম সরকার বলেন, রেজিস্ট্রেশন বিহীন কোন ট্রাক মহাসড়ক বা আঞ্চলিক সড়কে চলাচল করতে পারবে না।
ঢাকা-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ের এলেঙ্গাতে ট্রাফিক পুলিশ নিয়মিত তদারকি করছে। ভূঞাপুর থানায় কোন ট্রাফিক পুলিশ নেই। তবে অতিদ্রুতই ওই সব নম্বরবিহীন ট্রাকগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে।
এসআর
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি
আপনার মন্তব্য লিখুন...