টাঙ্গাইলে দানবীর রণদা প্রসাদ সাহা প্রতিষ্ঠিত ঐতিহ্যবাহী কুমুদিনী সরকারি কলেজের ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে দু’দিন ব্যাপী পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। মিলবো এবার হৃদয়পুরে, সকলে মিলে প্রাণের মেলায় স্মৃতির ভেলায় এই স্লোগানকে সামনে রেখে ২৮ ডিসেম্বর শনিবার সকালে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, জাতীয় পতাকা উত্তোলন, বেলুন উড়াঁনো, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে প্রথম দিনের অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
সকালে শহরে কুমুদিনী সরকারি কলেজের সামনে থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পূণরায় কলেজে গিয়ে শেষ হয়। এরপর জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও বেলুন উড়াঁনোর মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়।
আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক এমপি। তিনি বলেন, বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন বাংলাদেশে নির্ভরযোগ্য সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে না। আগামী সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে আপনারা আসতে চেয়েছেন এটি খুবই ভাল কথা। এ নির্বাচন যাতে সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ হয় সেটি আপনাদেরও দায়িত্ব রয়েছে। তিনি আরো বলেন, ক্যান্টনমেন্টে আপনাদের জন্ম। নীল কুঠির, লাল কুঠির ষড়যন্ত্র করে সেনাবাহিনীকে ব্যবহারসহ নানান রকম ক্ষমতার অপব্যাবহার করে আপনারা হ্যাঁ, না ভোট করেছেন। আপনারা এদেশে মিডিয়া ঐক্য করে নির্বাচন করেছেন। আগামী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অবশ্যই সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ হবে।
কুমুদিনী কলেজ প্রতিষ্ঠার ৭৫ বছর পর শিক্ষার্থীদের প্রথম পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে আলোচক ছিলেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. মুুরাদ হাসান এমপি। আলোচনায় প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য হিসেবে বক্তব্য রাখেন টাঙ্গাইল জেলা পরিষদের চেয়ারমান ফজলুর রহমান খান ফারুক। জেলা প্রশাসক মো. শহীদুল ইসলামের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন টাঙ্গাইল সদর আসনের এমপি ছানোয়ার হোসেন, টাঙ্গাইল-২ (ভূঞাপুর-গোপালপুর) আসনের এমপি ছোট মনির, সংরক্ষিত আসনের এমপি মমতা হেনা লাভলী, পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায়, পৌর মেয়র জামিলুর রহমান মিরন, কুমুদিনী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আবদুল মান্নান প্রমুখ। এসময় কলেজের অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষিকা ও সাবেক ছাত্রীরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য রাখেন কুমুদিনী সরকারি কলেজের প্লাটিনাম জয়ন্তী উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক নিগার আফতাব।
আলোচনা শেষে অতিথিদের ক্রেস্ট বিতরণ এবং ৭৫ পাউন্ডের একটি কেক কাটা হয়। প্রতিষ্ঠানে প্রাক্তন ছাত্রীদের উপস্থিতিতে এক মিলন মেলার সৃষ্টি হয়। এই মিলন মেলায় উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন এবং বর্তমান শিক্ষকরাও। প্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গনে বিভিন্ন স্টল বসানো হয়েছে। আগামী ২৯ ডিসেম্বর রবিবার বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে কুমুদিনী সরকারি কলেজের ইতিহাসে অনুষ্ঠিত প্রথম এই প্লাটিনাম জয়ন্তীর সমাপ্তি ঘটবে।
উল্লেখ্য, দানবীর রণদাপ্রসাদ সাহা নারী শিক্ষা প্রসারের লক্ষ্যে ১৯৪৩ সালে টাঙ্গাইল শহরে মায়ের নামে কুমুদিনী কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। নারীদের জন্য ১৪ দশমিক ১৩ একর জমিতে প্রতিষ্ঠিত বৃহত্তর ময়মনসিংহের এই কলেজের যাত্রা শুরু হয়েছিল উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণি দিয়ে। পরে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শ্রেণি চালু হয়। ১৯৭৯ সালে কলেজটি সরকারি করা হয়। বর্তমানে কলেজে ১৬টি বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) এবং ৮টি বিষয়ে স্নাতকোত্তর কোর্স চালু রয়েছে।
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি
আপনার মন্তব্য লিখুন...