সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত সাত বাংলাদেশির মধ্যে দুইজনের বাড়ি টাঙ্গাইলে। নিহত এই দুইজনের বাড়িতে এখন চলছে শোকের মাতম। নিহত এই দুই জনের মরদেহ দ্রুত ফিরে পাবার দাবি জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।
পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে পরিবারের সদস্যরা এখন দিশেহারা। সরকারের কাছে আর্থিকভাবে সহযোগিতা পাওয়ার আবেদন জানিয়েছেন তারা।
নিহত দুইজন হলেনÑ টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার ডুবাইল গ্রামের আব্দুর রহিম মিয়ার ছেলে আমিন মিয়া (৩২) এবং কালিহাতী উপজেলার কস্তুরিপাড়া এলাকার হামেদ আলীর শফিকুল ইসলাম (৩৫)।
দেলদুয়ার উপজেলার ডুবাইল গ্রামের নিহত আমিন মিয়ার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, নিহত এই পরিবারে চলছে শোকের মাতম। এলাকাবাসী এই পরিবারকে শান্তনা দিচ্ছেন।
এ বিষয়ে কান্না জড়িত কন্ঠে নিহতের পিতা আব্দুর রহিম মিয়া বলেন, ‘আমি খুব অসহায় মানুষ। আমার কিছু নাই। সরকারের কাছে একটাই আবেদন করি আমার ছেলের লাশ যেন দ্রুত দেশে ফিরিয়ে দেয়। আমি আর কিছু চাই না। তা নাহলে আমরা মইরা যামু গা।’
নিহতের স্ত্রী হ্যাপি আক্তার বলেন, ‘কিছুদিন আগে আমাদের বিয়ে হয়েছিল। গত ১ নভেম্বর তিনি সৌদি আরবে যায় উপার্জন করার জন্য। কিন্তু সেখানে তার নির্মমভাবে মৃত্যু হয়েছে। এখন আমি কি করবো। কোথায় যাবো।’
নিহতের মা আঙ্গুরি বেগম কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন বলেন, ‘আমার বাবা কই গেল। এখন আমি কি করমু। যে কোন মূল্যে আমি আমার বাবার লাশ বাড়ি পেতে চাই। এ ব্যাপারে সরকারের সহযোগিতা কামনা করছি।’
স্থানীয় বাসিন্দা রফিক খান বলেন, আমিন মিয়া পরিবারটি খুবই হত দরিদ্র। তাদের বাড়ি ভিটা ছাড়া আর কিছু নাই। তার বাবা অন্য মানুষের জমিতে বর্গাচাষী হিসেবে কাজ করে থাকেন। তারা ধার-দেনায় জর্জরিত। তাদের এখনো প্রায় ৩ থেকে ৪ লাখ টাকার মতো দেনা রয়েছে। এলাকাবাসী থেকে আমাদের দাবি এই পরিবারেক যাতে সরকারিভাবে সহযোগিতা করা হোক।
এদিকে নিহত আরেক জন কালিহাতীর শফিকুল ইসলামের বাড়িতেও চলছে শোকের মাতম। বাড়ির লোকজন তাদের পরিবারের অন্যতম সদস্যকে হারিয়ে একেবারে দিশেহারা। মৃত্যুর খবর পেয়ে তারা বারবার শোকে মূর্ছা লেগে যাচ্ছে। নিহতের পরিবারের সদস্যদের সান্তনা দেয়ার ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন এলাকাবাসী।
কালিহাতীর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি-তদন্ত) মনছুর আলী আরিফ বলেন আমরা শুনেছি বীরবাসিন্দা ইউনিয়নের কস্তুরিপাড়া এলাকায় শফিকুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি সৌদি আরবে মারা গেছেন। তবে আমরা এ বিষয়ে কোন কাগজ-পত্র হাতে পাই নাই।
সৌদি স্থানীয় সময় শনিবার সকালে সৌদির জিজান প্রদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই কোম্পানির পরিচ্ছন্নতাকর্মীসহ ৭জন নিহত হন।
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি
আপনার মন্তব্য লিখুন...