টাঙ্গাইলের সখীপুরে অস্ট্রেলিয়া পাঠানোর নামে শতাধিক মানুষের কাছ থেকে প্রায় ২০ কোটি টাকা আত্মসাতের মূলহোতা সোহাগসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গত ২৪ নভেম্বর প্রতারণার শিকার আনিসুর রহমান বাদী হয়ে মামলা করলে পুলিশ তাদেরকে গ্রেফতার করেন।
গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে- সখীপুর পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সৌখীন মোড় এলাকার সোহাগ মিয়া (২৪), তার বাবা মজিবর রহমান, বোন জামাই শাহজাহান আলী, সহযোগী নাসির উদ্দিন এবং অপর দুই প্রতারক সুমন ও তার স্ত্রী নাবিলা অস্ট্রেলিয়ার ভানুয়াতুতের পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়।
গ্রেফতারের খবর ছড়িয়ে পড়লে ভূক্তভোগীরা থানায় এসে হাউমাউ করে কাঁদতে থাকেন। পরে সখীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আমির হোসেন প্রতারকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও বাকীদের গ্রেফতারের প্রতিশ্রæতি দিলে তারা শান্ত হন।
মামলা ও ভূক্তভোগীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত এক বছর ধরে সখীপুর উপজেলাসহ টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহের বিভিন্ন উপজেলার বিদেশগামী ১’শ ১০ জন লোকের কাছ থেকে ১৫ ও ১৮ লাখ টাকা করে প্রায় ২০কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় সোহাগ ও তাঁর পরিবার। এদের মধ্যে কয়েকজনকে নিয়ে সোহাগের পার্টনার সুমন ও তাঁর স্ত্রী নাবিলা অষ্ট্রেলিয়ার ভানুয়াতুতের পুলিশের কাছে গ্রেফতার হয়।
গ্রেফতারের খবর ওই দেশের ভানুয়াতুত ডেইলী পোস্ট ও ডেইলী ফিজি পত্রিকায় প্রকাশিত হলে তাদের প্রতারণার বিষয়টি প্রকাশ পেয়ে যায়।
পরে গত ২৪ নভেম্বর প্রতারক সোহাগ ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে ভূক্তভোগীদের পক্ষে আনিসুর রহমান বাদী হয়ে মামলা করলে পুলিশ ওই দিনই সোহাগের বাবা মজিবর রহমান, তার বোন জামাই শাহজাহান এবং সহযোগী নাসির উদ্দিনকে গ্রেফতার করে টাঙ্গাইল আদালতে পাঠায়। আদালতে আসামীরা ৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দেন।
গত ৪ ডিসেম্বর টাঙ্গাইল ডিবি পুলিশের হাতে প্রতারক চক্রের মূলহোতা সোহাগ গ্রেফতার হলে তাকে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়। পরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত সখীপুর’র বিচারক নওরিন মাহবুব তাকে তিন দিনের রিমান্ড মুঞ্জুর করেন।
প্রতারণার শিকার অস্ট্রেলিয়ার ভানুয়াতুতে পুলিশের হেফাজতে থাকা সখীপুর উপজেলার কাকড়াজান ইউনিয়নের নাদিমের বাবা আলম মিয়া বলেন- আমার ছেলেকে অস্ট্রেলিয়া নেওয়ার কথা বলে সোহাগ আমার কাছ থেকে ১৮ লাখ টাকা নিয়েছে। পরে খবর পাই আমার ছেলে এখন ভানুয়াতুতের জেল খানায় আছে। আমি প্রতারকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
মামলার বাদী মো. আনিসুর রহমান বলেন- আমিসহ টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহ জেলার বিভিন্ন উপজেলার তালিকা পাওয়া ১১০ জন লোকের কাছ থেকে সোহাগ ও তার পবিারের লোকজন ১৫-১৮ লাখ টাকা করে প্রায় ২০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। আমরা আমাদের টাকা ও প্রতারকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
সখীপুর থানার ওসি (তদন্ত) ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা লুৎফুল কবির বলেন- এ মামলায় সোহাগসহ ৬জন গ্রেফতার হয়েছে। রিমান্ডে সোহাগ অস্ট্রেলিয়া নেওয়ার নামে প্রায় ২০ কোটি হাতিয়ে নেওয়ার কথা স্বীকার করেছে। প্রতারণার সাথে আরো যারা জড়িত তাদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি
আপনার মন্তব্য লিখুন...