টাঙ্গাইলের মধুপুরে প্রভাবশালীদের পোল্ট্রি মুরগির খামারের বর্জ্যে আশপাশের আবাদী জমি নষ্ট হয়ে ফসল আবাদে অযোগ্য হয়ে পড়া ও পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় জমির মালিকসহ এলাকাবাসী চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।
এ নিয়ে প্রশাসনে ভুক্তভোগীরা একে একে দুইবার লিখিত দিয়ে কোন সুরাহা তো পাননি বরং উল্টো প্রভাবশালীদের করা মামলার আসামী হয়েছেন এলাকার ১৪ ব্যক্তি।
ঘটনাটি উপজেলার আলোকদিয়া ইউনিয়নের রানিয়াত ভাঙ্গাবাজার এলাকায়।
অভিযোগে জানা গেছে, রানিয়াত ভাঙ্গাবাজার এলাকার মৃত বছির উদ্দিনের দুই ছেলে শামসুল হক ও আবদুল লতিফ বাড়ির পাশে এক এক করে চারটি পোল্ট্রি ও লেয়ার মুরগির খামার গড়েছেন।
খামারের ৪ সহস্রাধিক মুরগির ব্যবহার করা পানি,বিষ্ঠা, বর্জ্য নালার মাধ্যমে আশে পাশের ১০/১৫ বিঘা জমি আবাদের বাইরে চলে গেছে। চেষ্টা করেও জমির মালিকরা কোন ফসল আবাদ করতে পারছেন না তাদের জমিতে। চাষ করলেও টিকছে না শেষ পর্যন্ত।
সরেজমিনে গেলে খামারের আশপাশের জমির মালিক আবু হানিফ, তুলা মিয়া, ওহাদ আলী, সেকান্দর,বারেক, মাহা, আবুল মিয়া, কবজ আলীসহ স্থানীয়রা জানান, পোল্ট্রি খামারের বর্জ্যে শুধু পাশের জমি নষ্ট নয় দুর্গন্ধেএলাকায় টেকা দায়।
বাজারে ব্যবসা বাণিজ্য করা কঠিন। ঔষধ ব্যবসায়ী আতিকুর রহমান সেন্টু জানান, মুরগির বর্জ্যরে গন্ধে এলাকা দুষিত হয়ে গেছে।
বাজারের মসজিদের ইমাম মৌলবী মনিরুজ্জামান জানান, পোল্ট্রি খামারের গন্ধে নির্বিঘ্নে নামাজ আদায়ে প্রতিটি ওয়াক্তে মুসুল্লিদের বিপাকে পড়তে হয় ।
স্থানীয়রা জানান, এমন সমস্যায় ইউপি চেয়ারম্যানকে জানিয়ে ছিলেন তারা। এ নিয়ে মীমাংসার শালিসে শামসুল হাজির হননি। ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাঈদ তালুকদার দুলাল ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন।
স্থানীয়দের আরও অভিযোগ- খামার মালিক শামসুল কারো কথা শুনেন না। তার বিরুদ্ধে কিছু বললে তাকে নানাভাবে বিপদে ফেলার চেষ্টা করেন। বাড়ির পাশে মরা মুরগি, মুরগির বিষ্ঠা ফেলে দিয়ে সাধারণ জীবন যাপনে বিঘ্ন ঘটান।
তারপরও বাগে না এলে মামলা করে হয়রানী করেন। প্রমাণ মিললো এমন অভিযোগের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেল, স্থানীয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রাণি সম্পদ কার্যালয়ের কর্মকর্তা বরাবর গণস্বাক্ষর সম্বলিত এ বিষয় উল্লেখ করে পৃথক আবেদন করেছিলেন ২ জুলাই।
চার মাসে কোন সুরাহা পাননি। উল্টো পোল্ট্রি খামার নিয়ে অভিযোগ করা ভুক্তভোগীরা খামারী মালিক শামসুল হকের রোষানলে পড়েছেন।
এলাকার ১৪ ব্যক্তিকে আসামী করে ১৫ সেপ্টেম্বর আদালতে ফৌ.কা. বি. আইনের ১০৭/১১৭(গ) ধারায় মামলা ঠুকে দিয়েছেন শামসুল হক। এ নিয়ে এলাকায় বেশ চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
ভুক্তভোগীরা প্রশাসনে যোগাযোগ করলে আবারও এ বিষয়ে লিখিত আবেদন নিয়েছে সংশ্লিষ্ট কার্যালয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাসলিমা আহমেদ পলি আবেদন প্রাপ্তির কথা স্বীকার করেছেন। তিনি জানান, প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তাকে তদন্ত করতে বলা হয়েছে। তার প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।
প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা হারুন অর রশীদের সাথে বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেয়া যায়নি।
উল্লিখিত বিষয়ে তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই বলে জানিয়েছেন অভিযুক্ত শামসুল হক । কেন মামলা করা হয়েছে সে বিষয়েও স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে পারেননি।
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি
আপনার মন্তব্য লিখুন...