৫১ বছরের পুরোনো কলার হাট এখন সবার মুখে মুখে। কুতুবপুর বাজারের কলার হাটটি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। দিন যত যাচ্ছে ততই সুনাম ও খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ছে সারাদেশে। হাটবার আসলেই ক্রেতা ও বিক্রেতাদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠে পুরো এলাকা।
সপ্তাহে চারদিন হাটবার এলেই সরগরম হয়ে উঠে টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার বড়চওনা ইউনিয়নের কুতুবপুর বাজার। রাজধানীসহ দেশের অন্যান্য জেলার ব্যাপারীরা এ হাট থেকে কলা কিনে বিভিন্ন বাজারে সরবরাহ করে থাকেন। সম্প্রতি কুতুবপুরের কলার হাটটি উত্তরাঞ্চলের সবচেয়ে বড় কলার হাট হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। এ হাটে প্রতি সপ্তাহে প্রায় কোটি টাকার কলার কাঁদি বিকিকিনি হয়ে থাকে বলে জানিয়েছেন বাজার কমিটি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,কলা চাষিরা সাইকেল, ভ্যান, অটো, পিকআপে করে কলার কাঁদি নিয়ে বিক্রি করতে এসেছেন। নানা জাতের এসব কলা কিনতে দূর দূরান্তের ব্যাপারীরাও ভিড় জমিয়েছেন। চাষিদের সাথে দরদাম নিয়ে কথা বলছেন। চাষিদের সাথে দরদামে মিলে গেলে ব্যবসায়ীরা এসব কলা বিভিন্ন পরিবহনে করে নিয়ে চলে যাচ্ছেন রাজধানী ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ দেশের নানা প্রান্তে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলায় চলতি মৌসুমে ৪ হাজার ৮৮০ হেক্টর জমিতে কলার আবাদ হয়েছে। মধুপুর, ঘাটাইল, সখীপুর, কালিহাতীসহ পাহাড়ি এলাকায় কলার আবাদ বেশি হয়। এসব এলাকাতে বিভিন্ন জাতের কলার আবাদ হয়।সাগর কলা, সরবি কলা, হিম সাগর, মিহির সাগর ও অমৃত সাগরসহ নানা জাতের কলা চাষ করেন চাষীরা।
কলা চাষিরা বলেন,এ বছর দামটা ভালো পাচ্ছি। প্রতি কাঁদি কলা চারশো থেকে ছয়শো টাকা বিক্রি হচ্ছে। অনন্য বছরের চেয়ে এবছর প্রতি কাঁদি কলা একশো থেকে দুইশো টাকা দাম বেশি। এবছর কলা চাষিরা কাল চাষ করে লাভবান হচ্ছে। সার ও কীটনাশকের দাম কম থাকলে চাষিরা কলা বিক্রি করে আরও লাভবান হতো।
বেপারীরা জানান, প্রতি কাঁদি কলা দেড়শো থেকে আটশো টাকায় বিক্রি হয়। তবে কাঁদি, স্বাদ ও মানভেদে দাম ওঠানামা করে। ছোট আকারের কলা প্রতি কাঁদি দেড়শো টাকা, মাঝারি আকারের কাঁদি তিনশ টাকা, বড় আকারের কাঁদি সাড়ে চারশো থেকে আটশো টাকায় বিক্রি হয়।এবছর কলার দাম একশো থেকে দুইশো টাকা বেশি। প্রতি সপ্তাহে কলার হাট থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে কলা যাচ্ছে।
কুতুপুর বাজারের ইজারাদার মো. হাবিবুর রহমান বলেন, দূর-দূরান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা এসে কলা কিনে থাকেন।কুতুব বাজারের কলার হাটের সুনাম সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা কলা কিনতে এই হাটে আসেন।এই হাটে টোল অন্য সব হাটের চেয়ে কম। আগে এই হাট দুইদিন হতো এখন সপ্তাহ চার এই হাট হাট বসে। শনিবার, রোববার ও মঙ্গলবার, বুধবারের হাটে প্রায় কোটি টাকার কলা রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে। মূলত কলাচাষি ও ছোট ব্যবসায়ীরা এ হাটে কলা আমদানি করে থাকেন। এরপর তাদের কাছ থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা সেগুলো কিনে ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্রগ্রাম, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় নিয়ে বিক্রি করেন।
কুতুবপুর বাজার কমিটির সহ সম্পাদক আব্দুল কাদের বলেন,দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে বেপারিরা কলা কিনতে আসেন। এই বাজারে থাকা খাওয়ার কোনো সমস্যা নাই। ঢাকাসহ আশেপাশের সকল জেলার সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় দিন দিন এ হাট জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এই হাট আগে দুইদিন হলেও এখন চারদিন হাট বসে। এই হাটে প্রায় ৭০-৮০ লাখ টাকার কলা বিক্রি হয়।
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি
আপনার মন্তব্য লিখুন...