দুই বছর ধরে সরকারি বরাদ্দ বন্ধ থাকায় গোপালপুর উপজেলার দরিদ্র, অসহায় ও প্রবীণ মুক্তিযোদ্ধারা সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যের প্যাকেজ ভিত্তিক চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
জানা যায়, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয় ২০১৮ সালে উপজেলা, জেলা, মহানগর এবং রাজধানীর সকল সরকারি হাসপাতালে দরিদ্র, অসহায় ও প্রবীণ মুক্তিযোদ্ধাদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবার প্যাকজ ঘোষণা করে। সরকার হাট-বাজার ইজারালব্দ আয় থেকে ৪% এ খাতে ব্যয় করার ঘোষণা দেয়। কোন দরিদ্র মুক্তিযাদ্ধা অসুস্থ হয়ে উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি হলে সাধারণ চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি ঘোষিত প্যাকেজের আওতায় দশ হাজার টাকা সমমূল্যের ওষুধ, পথ্য ও ক্লিনিক্যাল সেবা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়। গোপালপুর উপজেলা হাসপাতাল ২০১৮ সালের জুলাই মাসে চিকিৎসা প্যাকেজটি চালু হয়। উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ অসুস্থ মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা দেয়ার জন্য হাসপাতালে দুই সিটের একটি সুসজ্জিত কেবিন চালু করে। আড়াই বছরে শতাধিক দরিদ্র ও অসহায় মুক্তিযোদ্ধা প্যাকেজের আওতায় চিকিৎসা নেন। কিন্তু ২০২২ সালের শুরুতে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্যাকেজ খাতের বরাদ্দ রহস্যজনক কারণে বন্ধ করে দেয়।
হাদিরা ইউনিয়নের চাতুটিয়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা কছিম উদ্দীন জানান, পঁচাত্তর বছর বয়সে তার শরীরে নানান ব্যাধি বাসা বেঁধেছে। সরকার চিঠি দিয়ে জানিয়েছিল যে, উপজেলা হাসপাতালে বিনামূল্যে দশ হাজার টাকার সমমানের চিকিৎসা সেবা পাওয়া যাবে। আশপাশের সব উপজেলায় এ সেবা চালু রয়েছে। কিন্তু বরাদ্দের টাকা না আসায় গোপালপুর হাসপাতালে এ প্যাকেজ বন্ধ। ফলে তার মতো অনেক মুক্তিযোদ্ধা এ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
সাবেক ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সমরেন্দ্র নাথ সরকার বিমল জানান, এ উপজেলায় ভাতাপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ৪৫৯ জন। জীবিত রয়েছেন ২৫৫ জন। অধিকাংশের বয়স সত্তর থেকে নব্বইয়ের মধ্যে। এদের অনেকেই দরিদ্র। সরকারি ভাতায় পেট চলে। অসুস্থরা বছর দুয়েক সরকার ঘোষিত বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা পয়েছেন। কিন্তু দুই বছর আগে বরাদ্দ বন্ধ হওয়ায় তারা বেকায়দায় পড়েছেন। হাসপাতালের সাধারণ চিকিৎসা সেবা নিয়েই এখন সন্তষ্ট থাকতে হচ্ছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার আলীম আল রাজী জানান, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় পাঁচ বছরে মাত্র এক লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়। কিন্তু দরিদ্র মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা সেবায় ইতিপূর্বে ব্যয় হয় দুই লক্ষাধিক টাকা। সরকারি বরাদ্দের আশায় বিভিন্ন দোকান থেকে বকেয়া হিসাবে ওষুধ পথ্য, চিকিৎসা সরঞ্জাম ক্রয় এবং ক্লিনিক্যাল পরীক্ষানিরীক্ষা করানো হয়। সেসব বকেয়ার জন্য পাওনাদাররা প্রায়ই হাসপাতালে এসে ঝামেলা করছেন। দুই বছর ধরে তাদের বকেয়া পাওনা যেমন মেটানো যাচ্ছেনা, তেমনি প্যাকজ চিকিৎসা চালু রাখাও সম্ভব হচ্ছেনা। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে একাধিকবার চিঠি দিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতি জানানো হয়েছে। কিন্তু রেজাল্ট জিরো।
এ ব্যাপারে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে সেলফোনে যোগাযোগ করা হলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা জানান, সরকার ঘোষিত বরাদ্দ এভাবে বন্ধ হওয়ার কোন কারণ নেই। প্রযুক্তিগত ও তথ্যগত সমস্যার দরুন হয়তো এমনটা ঘটেছে। বিষয়টা অবহিত হলাম। সমাধান করার চেষ্টা চালাব।
তপু আহম্মেদ
প্রকৌশলী সজল আহমেদ
সবুর খান টাওয়ার, বড় কালিবাড়ী রোড, টাঙ্গাইল-১৯০০
সেল: ০১৭১৯ ৯৬০ ৫৮৯/ ০১৯১১ ৬১৫ ৯৫৬, নিউজ রুম সেল: +৮৮ ০১৮৪৫ ৯৬৭ ২০১, +৮৮ ০১৮৪৫ ৯৬৭ ২০২
ই-মেইল: news.tangail24@gmail.com, এডিটর ইন চীফ ই-মেইল: topuahmed@gmail.com
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি
আপনার মন্তব্য লিখুন...