১০:৪১ পিএম | টাঙ্গাইল, বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০২৪
প্রতিষ্ঠাতা মরহুম আব্দুল ওয়াহেদ মিয়া

চা বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন আ’লীগ সভাপতি

স্টাফ রিপোর্টার | টাঙ্গাইল২৪.কম | বৃহস্পতিবার, ৩ আগস্ট ২০২৩ | |
, টাঙ্গাইল :

চা বিক্রি করে পরিবারের চাহিদা মেটানোসহ জীবিকা নির্বাহ করছেন আওয়ামীলীগ সভাপতি নূরু। নূরুল ইসলাম মোল্লা নূরু (৫৯) টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কাতুলী ইউনিয়নের বাগবাড়ী গ্রামের মৃত. মো. আবেদ আলী মোল্লার ছেলে ও ৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি। প্রায় ৪০ বছর ধরে ইউনিয়নের তোরাপগঞ্জ বাজারে বঙ্গবন্ধু স্টোর নামে একটি চায়ের দোকান পরিচালনা করেছেন তিনি। গাভীর দুধের চা বিক্রি করায় বেশ জনপ্রিয় তার ওই চা স্টল। টাঙ্গাইল পৌর শহরসহ আশপাশের বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে ওই চা খেতে যান গাভীর দুধের চা প্রেমিরা। প্রতিদিন গড়ে চার থেকে পাঁচ হাজার টাকার চা বিক্রি হচ্ছে তার ওই দোকানে। 

এ ইউনিয়নসহ জেলা জুরে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীর অনেকেই অনৈতিক কর্মকান্ড আর অপরাজনীতিতে বিতর্কিত হলেও, তৃণমূল আওয়ামীলীগের গুরুত্বপূর্ণ নেতা নূরুর চা বিক্রি করে সংসার চালানোর বিষয়টি আদর্শ আর নিবেদিত রাজনীতির এক অনন্য দৃষ্টান্ত বলে দাবি করেছেন দলীয় নেতৃবৃন্দসহ স্থানীয়রা।

জানা যায়, ১৯৮৬ সাল থেকে তোরাপগঞ্জ বাজারে পরিচালিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধু স্টোর নামের ওই চা স্টল। বাৎসরিক ৮ হাজার টাকা দোকান বাবদ ভাড়া নিচ্ছেন বাজার কর্তৃপক্ষ। দোকানটিতে প্রতিদিন বিক্রি হচ্ছে ২০ কেজি গাভীর দুধ। ওই দুধ দিয়ে চা, মালাই আর কফি বিক্রি করা হচ্ছে। ওই চা স্টলে বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা গ্লাস মালাই (দুধের সর), ৪০ টাকা গ্লাস দুধ, ১০ টাকা কাপ দুধ চা, ২০ টাকা কাপ কফি আর ৫ টাকা কাপ লাল চা। এছাড়াও বিক্রি হচ্ছে বিস্কুট, পান আর সিগারেট। প্রতিদিন বিকেল ৪ টা থেকে রাত ২ টা পর্যন্ত চলছে দোকানটি বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু স্টোরের মালিক ও দুই ছেলে সন্তানের জনক নূরুল ইসলাম মোল্লা নূরু।

স্থানীয়রা জানায়, দীর্ঘদিন যাবৎ আওয়ামীলীগের রাজনীতি করছেন নূরুল ইসলাম মোল্লা নূরু। ব্যক্তি হিসেবে অত্যান্ত সাধারণ মানুষ তিনি। রাজনৈতিক নেতা হিসেবেও নেই তার কোন বিতর্ক। এ ইউনিয়নসহ আশপাশের ক্ষমতাসীন দলের অনেক নেতাকর্মীর নামে নিয়োগ বাণিজ্য, তদবির বাণিজ্য, ড্রেজার ব্যবসা, নানা ধরণের অবৈধ ব্যবসা পরিচালনাসহ টিআর, সরকারি ঘর ও করোনাকালীন সরকারের দেয়া সাধারণ মানুষের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ থাকলেও ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি নূরুর বিরুদ্ধে নেই কোন বিতর্ক। চায়ের দোকানে উপার্জিত টাকায় পরিবারের খরচ বহন করাসহ নিজ টাকা ব্যয়ে রাজনৈতিক কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করার সুনামও রয়েছে তার। বিতর্কিত না হওয়ায় তার দোকানের ক্রেতা নিজ দলসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মী ও গ্রামের সাধারণ মানুষ। এছাড়াও টাঙ্গাইল শহরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের চা প্রেমিরা তার দোকানের ক্রেতা। এই বাজারসহ আশপাশে বেশকিছু চা স্টল থাকলেও বঙ্গবন্ধু স্টোরের ক্রেতা সর্বোচ্চ বলেও জানান তারা।

বাজারের ব্যবসায়ি ও চৌবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা ইয়াসিন বলেন, নূরু মিয়া অনেকদিন যাবৎ আওয়ামীলীগের রাজনীতি করছেন। লোক হিসেবেও ভালো মানুষ তিনি। টাঙ্গাইলসহ নানা দূর-দূরান্ত এলাকা থেকে লোক আসে তার দোকানে চা খেতে। তার দোকানে বেচাকেনা খুবই ভালো।

দোকানের ক্রেতা ও খোলাবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা শামছুল হক বলেন, এই দোকানের চা খুবই ভালো হয়। এ কারণে প্রতিদিন আসি চা খেতে। বাজারে বেশ কয়েকটি চায়ের দোকান থাকলেও এই দোকানের চা ব্যতিক্রম। গাভীর দুধের চা বিক্রি করায় ক্রেতা বেশি। 

তিনি আরও বলেন, এই চায়ের দোকানের মালিক নূরু দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামীলীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ব্যবসা আর পরিবারের দায়িত্ব পালন করা ব্যতিত তার বিরুদ্ধে নেই মারামারি কাটাকাটিসহ নোংরা রাজনীতির কোন অভিযোগ বলেও জানান তিনি।

অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য আব্দুর রহিম বলেন, এই দোকানের চা খুব ভালো হয় শুনে টাঙ্গাইল থেকে চা খেতে এসেছি। পাশের বাড়ির লোক আর টাঙ্গাইলের বিভিন্ন পরিচিত জনের কাছ থেকে এই দোকানের ভালো চায়ের প্রশংসা অনেক শুনেছি।

বঙ্গবন্ধু স্টোরের মালিক ও কাতুলী ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সভাপতি নূরুল ইসলাম মোল্লা নূরু বলেন, ৮/৯ বছর যাবৎ কাতুলী ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছি। চা বিক্রির টাকায় আমার সংসার চলে। অন্য কোন ব্যবসা বা জমিজমাও নেই আমার। আওয়ামীলীগের সভাপতি হয়ে চা বিক্রি করছি এটা অনেকে খারাপ চোখে দেখলেও আমাকে যারা পছন্দ করেন তারা প্রশংসা করেন। চা বিক্রি করে আমি গর্বিত। কারণ আমি পরিশ্রম করে টাকা উপার্জন করছি। দল ভালোবাসি। রাজনীতি করে কি পেলাম সেটি কখনও ভাবিনি।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ আর ভাষণ আমার খুবই পছন্দের। তাই বঙ্গবন্ধুর আদর্শ আর কথা বার্তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বঙ্গবন্ধুকে ভালোবেসেই তার নামে দোকানটি দিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, আগে খুবই ভালো ছিল। এখন বেচা বিক্রি একটু কম। আগে প্রতিদিন আট থেকে দশ হাজার টাকা বেচা বিক্রি হলেও এখন হচ্ছে চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা। 

কাতুলী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি নায়েব আলী সরকার বলেন, নূরু ছোট্ট বেলা থেকে আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত। বর্তমানে তিনি ৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি। 

তিনি বলেন, আওয়ামীলীগের সভাপতি চা বিক্রি করে খেলেও তাকে সম্মানের চোখে দেখেন স্থানীয়রা। দলীয় নেতা চা বিক্রি করায় আমরাও রীতিমত তার দোকান থেকেই চা খেয়ে আসছি।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইল সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন খান তোফা জানান, নূরু ভাই দলের একজন নিবেদিত তৃণমূল নেতা। চা বিক্রি করে যেমন জীবিকা নির্বাহ করছেন, তেমনি চা স্টল থেকে দলের নিবেদিত প্রচার প্রচারণা করছেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে তাকে খুবই সম্মানের চোখে দেখি।

আপনার মন্তব্য লিখুন...

নাগরপুরে দু''পক্ষের সংঘর্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান নি সখীপুর বনে দুর্বৃত্তের আগুন, বিলুপ্ত হচ্ছে বন্য প্রাণী কালিহাতীতে মে দিবস পালিত মেয়ে ও জামাতার বিরুদ্ধে বাবাকে নির্যাতনের অভিযোগ, বৃদ্ধ প্রধান শিক্ষককে বাড়িতে ডেকে নিয়ে মারধর, থানায় মামলা গোপালপুরে বিদেশ ফেরত পুনরেকত্রীকরন শীর্ষক কর্মশালা নাগরপুরে খাদ্যভিত্তিক পুুষ্টি (ফলিত পুষ্টি) বিষয়ক প্রশি করটিয়া হাটে আল আরাফা ইসলামী ব্যাংকের শাখা উদ্বোধন মেয়ের বাড়ি বেড়াতে এসে লাশ হলেন বাবা ৫০০ টাকা চাঁদা নেওয়ার অভিযোগে ছাত্রলীগ-যুবলীগের ৪ নেতা গোপালপুরে হিটস্ট্রোকে চা বিক্রেতার মৃত্যু  নাগরপুরে বালুবাহী ট্রাক্টর কেড়ে নিল যুবকের প্রাণ গোপালপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ স্থগিত  হিটস্ট্রোকে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর মৃত্যু, নির মওলানা ভাসানীর মাজারের দানবাক্সে মিলল ২ লক্ষ ৮৩ হাজার ট

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি