১১:২৩ পিএম | টাঙ্গাইল, শনিবার, ৪ মে ২০২৪
প্রতিষ্ঠাতা মরহুম আব্দুল ওয়াহেদ মিয়া

৩ লাখ টাকায় পাকা ৩ ভবনের নিলাম!

স্টাফ রির্পোটার | টাঙ্গাইল২৪.কম | শুক্রবার, ১৭ জুলাই ২০২০ | |
, টাঙ্গাইল :

পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি ব্যতিত আর মাত্র তিন লাখ দশ হাজার টাকায় পাকা তিনটি ভবন নিলাম দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডির বিরুদ্ধে এ অভিযোগ ঠিকাদারসহ স্থানীয়দের। তাদের দাবি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয়ার বিধান অমান্য করাসহ নামমাত্র নোটিশে আর পছন্দের ঠিকাদার নিয়ে যোগসাজসে এই নিলাম কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। এতে সরকারের বড় অংকের রাজস্ব ফাঁকি দেয়ার দূর্নীতি হয়েছে বলেও অভিযোগ তাদের। এ নিয়ে জেলা প্রশাসন, দুদকসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন নিলামে অংশগ্রহণ করতে না পারা ঠিকাদারসহ স্থানীয়রা। এছাড়াও অনুষ্ঠিত নিলাম নিয়ে ক্ষোভ বিরাজ করছে স্থানীয় আওয়ামীলীগসহ সহযোগী সংগঠণে।

জানা যায়, চলতি বছরের জুনেই ১৫% ভ্যাট আর ৪% ট্যাক্সসহ ৩ লাখ ১০ হাজার টাকায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দ্বিতল বিশিষ্ট বাসভবনসহ সরকারি কর্মচারী ভবন আর সেমি পাকা একটি উপজেলা অডিটরিয়ামের নিলাম দেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) বাসাইল। ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবন ও ২০২০ সালের ১৬ মার্চে দ্বিতল বিশিষ্ট সরকারি কর্মচারী ভবন আর সেমি পাকা উপজেলা অডিটরিয়ামটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়।

পরবর্তীতে চলতি বছরের ৬ জুন এ নিলাম কার্যক্রমের নোটিশ হয় ও ১৮জুন এর কার্যাদেশ হস্তান্তর হয়। এর মধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দ্বিতল বিশিষ্ট বাসভবন আর বাউন্ডারির মূল্য নির্ধারণ হয়েছে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। দ্বিতল বিশিষ্ট সরকারি কর্মচারী ভবন আর বাউন্ডারির মূল্য ৭০ হাজার টাকা আর সেমি পাকা উপজেলা অডিটরিয়ামের মূল্য নির্ধারণ হয়েছে ৬০ হাজার টাকা। এর সাথে যুক্ত হবে ১৫% ভ্যাট আর ৪% ট্যাক্স। নিলামকৃত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দ্বিতল বিশিষ্ট বাসভবনসহ বাউন্ডারি আর সেমি পাকা উপজেলা অডিটরিয়ামের কাজ দুটি পেয়েছেন স্থানীয় ঠিকাদার এম.এন নাহিদ মমিন। এছাড়াও সরকারি কর্মচারী ভবন আর বাউন্ডারির কাজটি পেয়েছেন শাহজাহান মিয়া।

স্থানীয় ঠিকাদার ও উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক মশিউর রহমান খান বলেন, নিলামে অংশগ্রহণ করার একজন প্রার্থী ছিলাম। তবে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি বা নিলামের নোটিশ না পাওয়ায় এতে অংশ গ্রহণ করতে পারেননি তিনি। অনুষ্ঠিত নিলাম কার্যক্রমের ত্রুটি উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমানে বসবাসরত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনটি কিভাবে এ নিলামে ঝুঁকিপূর্ণ দেখানো হলো।

ঠিকাদার ও বাসাইল পৌর এলাকার ১ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি সহিদুর রহমান বলেন, সম্পূর্ণ গোপনীতার মাধ্যমে নিলাম কার্যক্রমটি সম্পন্ন হয়েছে। এ কারণে তিনি নিলামের অংশগ্রহণ করতে পারেননি। দুটি দ্বিতল বিশিষ্ট ভবন আর একটি সেমি পাকা ভবনের নুন্যতম নিলাম মূল্য হবে দশ লাখ টাকা। সেখানে কিভাবে এত অল্প টাকায় এই নিলাম কার্যক্রম সম্পন্ন হলো এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।

এ নিয়ে ঠিকাদার এম.এন নাহিদ মমিন বলেন, অনুষ্ঠিত নিলাম কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন ছয়জন। সরকারি বিধি অনুযায়ী সর্বোচ্চ দর দাতা হিসেবে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দ্বিতল বিশিষ্ট বাসভবনসহ বাউন্ডারি আর ৬০ হাজার টাকায় সেমি পাকা উপজেলা অডিটরিয়ামের কাজটি পেয়েছেন তিনি। এ মূল্যের পরেও আছে ১৫% মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) আর ৪% আয়কর। এছাড়াও সর্বোচ্চ ৭০ হাজার টাকা মূল্য দরে দ্বিতল বিশিষ্ট সরকারি কর্মচারী ভবন আর বাউন্ডারির কাজটি পেয়েছেন শাহজাহান নামের অপর একজন ঠিকাদার।

টেন্ডার কমিটির সদস্য হওয়ার বিধান স্বত্তেও অনুষ্ঠিত নিলাম প্রসঙ্গে কিছুই জানেন না বাসাইল উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শাহাদত হোসেন।

তবে এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে উপজেলার বিশিষ্ট ঠিকাদার ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী মতিয়ার রহমান গাউস বলেন, একজন ঠিকাদার হয়েও ওই নিলামের বিষয়ে কিছু জানিনা আমি। এছাড়াও প্রতিটি দপ্তরে অনুষ্ঠিত টেন্ডারে এ উপজেলার শতাধিক ঠিকাদার দরপত্র ক্রয় করাসহ অংশগ্রহণ করলেও উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ ওই তিনটি ভবন নিলামে অংশগ্রহণ করতে না পারার বিষয়টি রহস্যজনক বলে দাবি করেছেন তিনি।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডি বাসাইল উপজেলা প্রকৌশলী রোজদিদ আহম্মেদ বলেন,পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয়া ছাড়াই শুধুমাত্র নোটিশের মাধ্যমে এ ধরণের নিলাম কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এছাড়াও সরকারি বিধি অনুসারে আর সর্বোচ্চ দরদাতা নির্ধারণের মাধ্যমেই ওই নিলাম কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। এ সময় তিনি আরো জানান, ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবন ও ২০২০ সালের ১৬ মার্চে দ্বিতল বিশিষ্ট সরকারি কর্মচারী ভবন আর সেমি পাকা উপজেলা অডিটরিয়ামটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়। পরবর্তীতে চলতি বছরের ৬ জুন এ নিলাম কার্যক্রমের নোটিশ দেয়াসহ ১৮জুন অংশগ্রহণকারীদের সর্বোচ্চ দরদাতাদের কার্যাদেশ দেয়া হয়। পরিত্যক্ত ভবন গুলোর বিপরীতে নতুন ভবন নির্মাণের টেন্ডারও সম্পন্ন হয়েছে বলেও জানান তিনি।

এ নিলাম প্রসঙ্গে অবগত নন বলে জানিয়েছেন বাসাইল পৌরসভার মেয়র মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহিম আহম্মেদ।

এ বাসাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামসুন্নাহার স্বপ্না বলেন, তিনি উপজেলায় যোগদানের আগেই বাসভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছিল। এরপরও বাসভবনের সংকটে দীর্ঘদিন তিনি ওই ভবনটিতে বসবাস করেছেন। নিলাম কার্যক্রম পরিচালনা আর নতুন ভবন নির্মাণ কার্যক্রম সম্পন্ন করতে বর্তমানে তিনি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের বাসভবনে বসবাস করছেন।

আপনার মন্তব্য লিখুন...

বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে গণমাধ্যমকর্মীদের সমাবেশ  গুচ্ছ ‘বি’ ইউনিট ভর্তি পরীক্ষায় মাভাবিপ্রবি কেন্দ্রে উ মির্জাপুরে রাতের আঁধারে কৃষি শ্রমিককে কুপিয়ে হত্যা নাগরপুরে দু''পক্ষের সংঘর্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান নি সখীপুর বনে দুর্বৃত্তের আগুন, বিলুপ্ত হচ্ছে বন্য প্রাণী কালিহাতীতে মে দিবস পালিত মেয়ে ও জামাতার বিরুদ্ধে বাবাকে নির্যাতনের অভিযোগ, বৃদ্ধ প্রধান শিক্ষককে বাড়িতে ডেকে নিয়ে মারধর, থানায় মামলা গোপালপুরে বিদেশ ফেরত পুনরেকত্রীকরন শীর্ষক কর্মশালা নাগরপুরে খাদ্যভিত্তিক পুুষ্টি (ফলিত পুষ্টি) বিষয়ক প্রশি করটিয়া হাটে আল আরাফা ইসলামী ব্যাংকের শাখা উদ্বোধন মেয়ের বাড়ি বেড়াতে এসে লাশ হলেন বাবা ৫০০ টাকা চাঁদা নেওয়ার অভিযোগে ছাত্রলীগ-যুবলীগের ৪ নেতা গোপালপুরে হিটস্ট্রোকে চা বিক্রেতার মৃত্যু  নাগরপুরে বালুবাহী ট্রাক্টর কেড়ে নিল যুবকের প্রাণ

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি