টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় এক কলেজ ছাত্রীকে একই কলেজের সাবেক ও বর্তমান চার ছাত্র পিটিয়ে আহত করেছে। এ সময় ওই ছাত্রী দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে তারা মেয়েটির মাথায় থাকা স্কার্প টেনে খুলে ফেলেন বলে জানা গেছে। ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে পরে কলেজের অধ্যক্ষ ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের মধ্যস্থতায় শালিশি বৈঠকের মাধ্যমে বেতাঘাত করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ঐ এলাকার মেয়েদের মধ্যে আতংক দেখা দিয়েছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, মঙ্গলবার বেলা পৌনে দুইটার দিকে উপজেলার বাঁশতৈল খলিলুর রহমান কলেজের সামনে দিয়ে এক ছাত্রী হেটে যাচ্ছিল। এসময় একই কলেজের সাবেক ও বর্তমান চার ছাত্র সজিব, অনিক, খালিদ ও ফাহাদ নানা ধরনের কটুক্তি করে উত্ত্যক্ত করতে থাকেন। এর প্রতিবাদ করায় প্রথমে সজিব ওই ছাত্রীটির গালে চড়-থাপ্পর মারেন। ভয়ে ওই ছাত্রী দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে অনিক, খালিদ ও ফাহাদ ছাত্রীটির মাথায় থাকা স্কার্প টেনে খুলে ফেলেন এবং চর-থাপ্পর মারে।
এ সময় ছাত্রীটি দৌড়ি গিয়ে পাশে বাঁশতৈল পুলিশ ফাঁড়িতে আশ্রয় নেয় এবং মৌখিক অভিযোগ করে। বাঁশতৈল পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফয়সাল আহম্মেদ ঘটনাস্থলে গেলেও ওই চার ছাত্রকে আটক করতে পারেনি বলেন জানান।
এদিকে বিষয়টি কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। পরে ঘটনাটি মিমাংসার জন্য বিকেলে বাঁশতৈল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতিকুর রহমানের সভাপতিত্বে কলেজ প্রাঙ্গণে সালিশ হয়। সালিশে ওই চার ছাত্রকে বেত্রাঘাত করা হয় বলে জানা গেছে।
কলেজের অধ্যক্ষ ফায়জুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, উত্যক্তকারী চার ছাত্রের মধ্যে দুইজন বর্তমানে ডিগ্রিতে পড়েন এবং বাকী দুইজন সাবেক ছাত্র। এদের মধ্যে একজন প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের হওয়ায় দুই পরিবারের সমঝোতায় শালিশ হয়।
তবে কলেজ পরিচালনা পরিষদের সদস্য বাবুল আহমেদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন ছাত্রীর অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় ওই চার ছাত্রকে বেত্রাঘাত করা হয়েছে।
বাঁশতৈল পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এস আই) ফয়সাল আহম্মেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মিমাংসা হয়েছে বলে তাকে জানানো হয়েছে।
মির্জাপুর থানা অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) এ কে এম মিজানুল হক বলেন, ঘটনার সত্যতা প্রমানিত হলে জড়িতদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
তবে ওসির নির্দেশ থাকলেও অপরাধীরা গ্রেফতার না হওয়া স্থানীয় ছাত্রীদের মাঝে আতংক বিরাজ করছে। এ ঘটনায় দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
যেসময় সরকারী ভাবে মেয়েদের এ ধরনের ঘটনার প্রতিবাদ করতে মানসিক ভাবে তৈরির উদ্যেগ বাস্তবায়ণ করা হচ্ছে সেসময় বিষয়টি এভাবে ধামাচাপা দেওয়ায় প্রশাসনের ভ‚মিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে নানা মহলে।
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি
আপনার মন্তব্য লিখুন...