০৭:৫২ এএম | টাঙ্গাইল, সোমবার, ৬ মে ২০২৪
প্রতিষ্ঠাতা মরহুম আব্দুল ওয়াহেদ মিয়া

এমপি’র ১০ একর জমিতে ড্রাগন বাগান, লাভের টাকায় চলছে এতিমখানা

স্টাফ রিপোর্টার | টাঙ্গাইল২৪.কম | রোববার, ১ অক্টোবর ২০২৩ | |
, টাঙ্গাইল :

টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনের সাবেক এমপি’র পাঁচ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পতিত জমিতে হচ্ছে ড্রাগন ফল চাষ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পড়ে থাকা পতিত জমিতে লাগানো ড্রাগন ফল থেকে প্রতি মৌসুমে আয় হচ্ছে লাখ লাখ টাকা। লাভের সেই টাকা ব্যয় হচ্ছে নিজ উদ্যোগে নির্মিত এতিমখানায়। এতে সুরক্ষিত হয়েছে এতিমখানাসহ শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ।

একান্ত সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনের সাবেক এমপি আলহাজ্ব মো. আবুল কাশেম।

সরেজমিনে দেখা গেছে, দেলদুয়ার উপজেলায় দেউলি ইউনিয়নের আলালপুর গ্রামে পাশাপাশি কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। বোরহানুল উলুম আহমাদিয়া ইয়াছিনিয়া ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসা, সুফিয়া কাশেম বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, আবুল কাশেম ট্রাষ্ট মসজিদ, আল জামিয়াতুল কাছেমিয়া ও জামেরুন্নেছা এতিমখানা, কমিউনিটি ক্লিনিক, পোস্ট অফিস ও সামাজিক কবরস্থান। প্রায় ১৮ একর জমির উপর গড়ে উঠা প্রতিষ্ঠানগুলো ১০ একর পতিত জমিতে চাষ করা হয়েছে ড্রাগন ফল।

বাগানের কৃষক মো. আব্দুল কাদের বলেন, ১০ একর জমির উপর এই ড্রাগন বাগান করা হয়েছে। বাগানে ড্রাগনের চারা রয়েছে পনের হাজার। আমাদের বাগানে লাল,গোলাপী, বেগুনী, হলুদ ও সাদা জাতের ফল রয়েছে।

তিনি বলেন, এখন ড্রাগন ফলের মৌসুম। তবে আমাদের বাগানে ফল বেশি বড় হচ্ছে না। কেজিতে ধরছে পাঁচ ছয়টা। 

তিনি আরও বলেন, ড্রাগন ফল বাজারজাত করতে কোন কষ্ট হয় না। আমরা স্থানীয় পাইকারীদের কাছে বিক্রি করে থাকি। এছাড়াও নিজস্ব খরচে ঢাকায় পৌঁছিয়ে দিলে পাইকারীরা ন্যয্যমুল্যে দিয়ে থাকেন। প্রতিদিন প্রায় ৬শ থেকে ৮শ কেজি ড্রাগন ফল উত্তোলন করা যায়। তবে আমরা তা না করে মাসে মাসে উত্তোলন করছি। মাঝে মাঝে স্থানীয় পাইকারদের দাবির কারণে এর আগেও উত্তোলন করে বিক্রি করি। স্থানীয় পাইকারদের কাছে প্রতি কেজি দুই থেকে আড়াইশ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে আমাদের ড্রাগন ফল। 

বোরহানুল উলুম আহমাদিয়া ইয়াছিনিয়া ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী কবিরসহ কয়েক জন জানায়, ড্রাগন ফলের বাগানে সজ্জিত আমাদের বিদ্যাপিঠ। এই বাগান দেখে শুধু আমরাই আনন্দ পাইনা, বিভিন্ন এলাকা থেকেও বাগানগুলো দেখতে মানুষ আসছেন। এছাড়াও আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি অনেক জায়গায় থাকায় পর্যাপ্ত আলো বাতাস পাওয়া যায়। শিক্ষা ব্যবস্থাও ভালো বলে জানান তারা।

আল জামিয়াতুল কাছেমিয়া ও জামেরুন্নেছা এতিমখানার মুহতামিম হাফেজ ইমরান হোসেন বলেন, এতিমখানা ও হিফজ শাখায় বর্তমানে অধ্যায়ন শিক্ষার্থী সংখ্যা ৪২জন। অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীদের খানাপিনা ভোরণ পোষণের দায়িত্ব পালন করছেন প্রতিষ্ঠাতা টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনের সাবেক এমপি আলহাজ্ব মো. আবুল কাশেম।

এতিমখানার শিক্ষার্থীদের ভোরণ পোষণের চাহিদা মেটাতে তিনি ১০ একর পতিত জমিতে ড্রাগন বাগান করেছেন। ওই ফল বিক্রির টাকা ব্যয় হচ্ছে এতিমখানার শিক্ষার্থীদের পিছনে বলেও জানান তিনি।

বোরহানুল উলুম আহমাদিয়া ইয়াছিনিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মো. ইব্রাহিম খলিল বলেন, আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চারদিকে ড্রাগন ফলের বাগান। বাগানটি দেখতে অসাধারণ। শিক্ষা প্রতিগুলোতে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীরা প্রকৃতির মনোরম পরিবেশে বেড়ে উঠছে। 

তিনি বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠান গুলোর প্রতিষ্ঠাতা ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়েই এই ড্রাগন বাগান করেছেন। উনার অবর্তমানে প্রতিষ্ঠানগুলো যেন বন্ধ না হয়, সে লক্ষেই উনার এই বাগান করা। বাগান থেকে উপার্জিত টাকা এতিমখানাসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালনায় ব্যয় করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ও আবুল কাশেম ট্রাষ্ট বোর্ডের চেয়ারম্যান টাঙ্গাইল-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মো. আবুল কাশেম জানান, ১৯৭৩ সালে আমার পিতা ইন্তেকাল করেন। উনার রুহের মাগফিরাতের জন্য ওই সালেই আমি এখানে একটি  মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করি। আমার প্রতিষ্ঠিত বোরহানুল উলুম আহমাদিয়া ইয়াছিনিয়া ফাজিল মাদ্রাসাটি বর্তমানে ডিগ্রী মাদ্রাসা উন্নতি হয়েছে। এর পাশাপাশি এখানে প্রতিষ্ঠা করেছি সুফিয়া কাশেম বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, আবুল কাশেম ট্রাষ্ট মসজিদ, আল জামিয়াতুল কাছেমিয়া ও জামেরুন্নেছা এতিমখানা, কমিউনিটি ক্লিনিক, পোস্ট অফিস আর একটি সামাজিক কবরস্থান। এই প্রতিষ্ঠাগুলোর পরিচালনার ব্যয় মিটাতে আমার এই ড্রাগন বাগান করার উদ্যোগ।

তিনি জানান, আমার ১৮ একর জমির ৮ একর জমিতে প্রতিষ্ঠানগুলো নির্মিত হয়েছে। বাকি ১০ একর পতিত জমিতে ড্রাগন বাগান করা হয়েছে। আমার এই ড্রাগন বাগানের বয়স প্রায় দেড় বছর। এ বছর আমি প্রায় ১৩/১৪ লাখ টাকার ফল বিক্রি করতে পেরেছি। ড্রাগন ফল বিক্রির টাকা এতিমখানাসহ প্রতিষ্ঠানগুলোর পিছনে ব্যয় করা হচ্ছে। ওই টাকা আমি আমার ব্যক্তিগত কোন কাজে খাটাই না। আমার ইচ্ছে আমার সকল সম্পতি আমি ট্রাস্টের নামে দিয়ে যাবো। সম্পতির সকল আয়ে চলবে আমার প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানগুলো।

তিনি আরও জানান, আগামীতে প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে পরনির্ভরশীল না হয় সেই লক্ষেই আমার এই বাগান করার উদ্যোগ। আমার প্রতিষ্ঠিত এতিমখানায় যাতে দুই থেকে তিনশ এতিম সন্তান থাকতে পারে। তাদের আর্থিক কোন কষ্ট না হয় সেটিকেই প্রাধান্য দিয়ে আমি ড্রাগন চাষে এগিয়ে যাচ্ছি। বাগানটি করতে আমাকে দেশের অনেক জায়গাতে ঘুরতে হয়েছে। সর্বশেষ নাটোর থেকে এই ড্রাগনের চারা এনে বপন করা হয়েছে।

আপনার মন্তব্য লিখুন...

কালিহাতীতে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে চালক নিহত মির্জাপুরে বিল থেকে কঙ্গাল উদ্ধার এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অ গোপালপুরে বিপুল পরিমাণ নিষিদ্ধ ঔষধসহ আটক ১ নাগরপুরে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির নির্বাচন সম্পন মির্জাপুরে তীব্র পানির সংকট নিরসনে এমপি শুভর নলকুপ স্থা বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে গণমাধ্যমকর্মীদের সমাবেশ  গুচ্ছ ‘বি’ ইউনিট ভর্তি পরীক্ষায় মাভাবিপ্রবি কেন্দ্রে উ মির্জাপুরে রাতের আঁধারে কৃষি শ্রমিককে কুপিয়ে হত্যা নাগরপুরে দু''পক্ষের সংঘর্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান নি সখীপুর বনে দুর্বৃত্তের আগুন, বিলুপ্ত হচ্ছে বন্য প্রাণী কালিহাতীতে মে দিবস পালিত মেয়ে ও জামাতার বিরুদ্ধে বাবাকে নির্যাতনের অভিযোগ, বৃদ্ধ প্রধান শিক্ষককে বাড়িতে ডেকে নিয়ে মারধর, থানায় মামলা গোপালপুরে বিদেশ ফেরত পুনরেকত্রীকরন শীর্ষক কর্মশালা

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি