১৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে ‘যমুনা নদী ইকোনমিক করিডোর উন্নয়ন (নেভিগেশনাল চ্যানেল উন্নয়ন)’ প্রকল্প হাতে নিচ্ছে সরকার। যমুনা নদী ঘিরে ব্যাপক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের অংশ হিসেবে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আর প্রকল্পের পুরো কাজটি হবে বিশ্ব ব্যাংকের সমীক্ষার উপর ভিত্তি করে।
প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনায় ব্যাপক ইতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে প্রভূত উন্নতি সাধিত হবে বলে ধারণা করছে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি)।
এই বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) সত্যজিত কর্মকার বলেন, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের যৌথ প্রকল্প এটি। এর জন্য বিশ্ব ব্যাংক থেকে ১৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থায়নের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে এ বিষয়ে ইআরডি’র সঙ্গে বিশ্ব ব্যাংকের কোন আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ হয়নি।
তাই ঋণের বিষয়ে ইআরডি’র সাথে যোগাযোগ করে বৈদেশিক ঋণের ধরণ ও পরিমাণ নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। একই সাথে এই ঋণের সুদ কত হবে তাও আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করে নিতে বলা হয়েছে।
পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, নদী, নালা, খাল-বিল সমৃদ্ধ বাংলাদেশ ব-দ্বীপের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য ‘বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০’ প্রণয়ন হয়েছে। এ ব-দ্বীপ বিনিয়োগ পরিকল্পনার অন্যতম প্রকল্প হচ্ছে ‘সমন্বিত যমুনা নদীর স্থিতিশীলতা ও পুনরুদ্ধার’ প্রকল্প।
ব-দ্বীপ পরিকল্পনায় বর্ণিত ‘মাল্টি সেক্টরাল অ্যাপ্রোচ জিএস অ্যাডাপটিভ ডেল্টা ম্যানেজমেন্ট’ কৌশলের সাথে প্রস্তাবিত এ প্রকল্প বাস্তবায়ন কৌশলের সামঞ্জস্যতা রয়েছে।
এ বিষয়ে বিশ্ব ব্যাংকের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান আইডাব্লিউএমের সহায়তায় একটি সমীক্ষা চালানো হয়েছে। ইতোমধ্যে ‘যমুনা নদী ইকোনমিক করিডোর উন্নয়ন’ শীর্ষক একটি মেগা প্রকল্পের রূপরেখা প্রণয়ন করেছে কমিশন। ১০ বছরে তিন ধাপে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।
প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে- নদীর তীর সংরক্ষণ এবং নদী শাসন, নেভিগেশন চ্যানেল উন্নয়ন, দুর্যোগ ঝুঁকি অর্থায়ন এবং প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়ন ও প্রকল্প পরিচালনা। প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ঘটবে ব্যাপক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড।
বাংলাদেশের প্রধান তিনটি নদীর একটি যমুনা। এটি ব্রহ্মপুত্র নদীর প্রধান শাখা। কয়েকশত মিটার থেকে কয়েক কিলোমিটার প্রশস্ততাবিশিষ্ট বিশাল আকৃতির চর এবং সর্পিলাকৃতির বিভিন্ন প্যাটার্নের প্রবাহ নিয়ে নদীটি গঠিত। চরগুলো বর্ষা মৌসুমে ডুবে যাওয়ায় এটি একক নদীতে পরিণত হয়। নদীতে পানি প্রবাহ ধারণ করার পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় বন্যার সৃষ্টি হয়।
“তীর সংরক্ষণ ও নদীর শাসন” বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড আর “নেভিগেশন চ্যানেল উন্নয়ন” দেখবে বিআইডব্লিউটিএ।
“নেভিগেশন চ্যানেল” উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান আইএমডিসি, এমটিবিএস এবং ট্র্যাকটেবেলের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে জয়েন্ট ভেঞ্চার কনসোর্টিয়াম অ্যাসোসিয়েশনের (জেভিসিএ)। তাদের সমীক্ষার ভিত্তিতে “যমুনা নদী ইকনোমিক করিডোর উন্নয়ন (নেভিগেশনাল চ্যানেল উন্নয়ন-১ম পর্যায়)” শীর্ষক প্রকল্প প্রস্তাব প্রণয়ন করা হয়েছে।
বাস্তবায়ন পরিবীক্ষন ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) প্রধান (অতিরিক্ত সচিব) এস এম হামিদুল হক বলেন, সমন্বিত মাস্টার প্ল্যান তৈরি না করে নেভিগেশনের কাজ শুরু করলে সাংঘর্ষিক হতে পারে।
তিনি বলেন, যমুনা নদীতে যে চ্যানেলের নেভিগেশন করার প্রস্তাব করা হয়েছে- সেখানে যে পরিমাণ পানির প্রবাহ দরকার তা আদৌ নিশ্চিত হবে কিনা সেই বিষয়টি দেখতে হবে। আর যে চ্যানেলগুলো করা হবে সেখানে পানির প্রাপ্যতা কেমন তা বিবেচনায় রেখে কাজ শুরু করা উচিত।
এই বিষয়ে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব দীপান্বিতা সাহা জানান, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে একটি গুচ্ছ প্রকল্পের দুটি উপ-প্রকল্প পাশাপাশি চলমান থাকলে তা অধিকতর ফলপ্রসূ হবে। সূত্র- বিজনেসপোষ্ট অনলাইন।
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি
আপনার মন্তব্য লিখুন...