ব্যক্তিগত ব্যয়ে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের করোনা আইসোলেসন ইউনিটের সেবাকর্মীসহ ১৩০ জন রোগীর সহযোগিদের তিন বেলা খাবার দিচ্ছেন কামরুজ্জামান আনসারী রানা (৪২)। তিনি হাসপাতাল সংলগ্ন বাংলাদেশ ফার্মা নামক একটি ফামের্সীর মালিক ও শহরের একজন উদীয়মান ব্যবসায়ি।
জানা যায়, করোনা সংক্রমন এড়াতে গত ৭ এপ্রিল টাঙ্গাইল জেলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য লকডাউন ঘোষণা করেন জেলা প্রশাসন। এর ফলে জেলায় ওষুধের দোকান আর জরুরী কিছু সেবা ছাড়া সকল কিছুই এ লকডাউন সফল করতে বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এর ফলে বন্ধ হয়ে যায় টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল সংলগ্ন ও আশপাশের সকল হোটেল রেস্তোরা। এতে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন হাসপাতালে আগত রোগীরা সহযোগীরা। ব্যক্তি উদ্যোগে গত ১২ এপ্রিল থেকে প্রতিদিন টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের করোনার আইসোলেসন ইউনিটের দায়িত্বরত ১০জন সেবাকর্মী তিন বেলা রানা করা খাবার সরবরাহ করাসহসহ হাসপাতালে ভর্তিরত ১২০জন রোগীর সহযোগিদের খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে।
উপকারভোগী রোগীর সহযোগি রফিক, আমেনাসহ কয়েকজন জানান, লক ডাউনের কারনে জেলা শহর ছাড়াও বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা রোগীর স্বজনরা চরম খাদ্য সংকটে পড়লে তাদের প্রতি সহযোগীতার হাত বাড়িয়েছেন টাঙ্গাইল শহরের কামরুজ্জামান আনসারী রানা সাহেব। তার ব্যক্তি খরচে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা শতাধিক রোগীর স্বজন এখন পাচ্ছেন খাবার। প্রতিদিন রান্না করা খাবার পেয়ে অন্তত তারা এখন পেটের ক্ষুধা মেটানোর সুযোগ পেয়েছে। এ সাহায্য না পেলে হয়ত তাদের না খেয়েই রোগীর পাশে থাকতে হতো। তার এই মানবিক সেবার প্রশংসা করছেন তারা।
খাবার সরবরাহ প্রসঙ্গে কামরুজ্জামান আনসারী রানা বলেন, ডাউনের কারনে যানবাহন চলাচলের পাশাপাশি হোটেল রেস্তোরা বন্ধ থাকায় চরম খাবার সংকটে পড়েছে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর স্বজনরা। এ অবস্থায় হাত বাড়িয়ে ক্ষুধার্ত মানুষের পাশে দাড়িছেন তিনি। প্রতিদিন শতাধিক মানুষের মাঝে পৌছে দিচ্ছে রান্না করা খাবার প্যাকেট। এ খাবার পাচ্ছে রোগীসহ ও হাসপাতালের কর্মচারী ও নার্সরাও। নিজের ব্যবসায়িক উপার্জনের অর্থ ব্যয়ে আর মানবসেবার লক্ষেই তিনি গত ১২ এপ্রিল তিন বেলা হাসপাতালের করোনা ইউনিটে কর্মরতদের খাবার দেয়াসহ দুপুরে শতাধিক হাসপাতালে ভর্তিরত রোগীর সহযোগিদেও খাবার সরবরাহ করছেন তিনি। পরিস্থিতির পরিবর্তন না হলে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত এভাবেই প্রতিদিন হাসপাতালে খাবার পৌছে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন সাহায্য নিয়ে এগিয়ে আসা ব্যাক্তি।
করোনায় হাসপাতালের বিপদগ্রস্থ এসব মানুষের জন্যে সহযাগীতার হাত বাড়ানোর বিষয়টিকে খুবই মানবিক বলে মনে করছেন ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক শফিকুল ইসলাম সজিব।
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি
আপনার মন্তব্য লিখুন...