করোনা ভাইরাস আতঙ্কে সারা দেশে ১৭ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষনা করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। টাঙ্গাইলেও সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষনা করলেও ডিজিটাল পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষা প্রদান করছে হাতেখড়ি প্রি-প্রাইমারী স্কুল। স্কুলে না এসেই ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে ভিডিও কলে ও স্কুলের নিজস্ব পেইজের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পড়াশুনায় মনোযোগ রাখা হচ্ছে প্রতিদিন।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ ফাঁকা থাকলেও বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে মোবাইল হাতে ব্যস্ত রয়েছেন স্ব স্ব শ্রেণি শিক্ষক। এ্যানড্রয়েট ফোনে ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে ভিডিও কলে শিক্ষার্থীদের সাথে যোগাযোগ করছে শিক্ষকবৃন্দ। এমনকি স্কুলের চেয়ারম্যানসহ গানের শিক্ষকও শিক্ষা দিচ্ছেন ভিডিও কলের মাধ্যমে। সাথে যোগ দিচ্ছেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরাও।
শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে শুধু ভিডিও কলেই নয়, পড়ালেখার মাধ্যমগুলো ভিডিও করে ‘হাতেখড়ি প্রি-প্রাইমারী স্কুল’ নামের ফেসবুক পেইজে আপলোড করা হচ্ছে। এতে শিক্ষার্থীরা তাদের সুবিধাজনক সময়ে ভিডিও দেখে শিক্ষা নেয়ার সুযোগ পাচ্ছে। এদিকে জন সুবিধার্থে শেয়ার করছে ভিডিওগুলো। এতে বিভিন্ন মহল, প্রতিষ্ঠান ও সাধারণ জনগন সাধুবাদ পোষণ করেছে। শুধু হাতেখড়িই নয়, গুরুত্বপূর্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে এভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করার আহ্বান জানান অনেকেই।
তাদের ফেসবুক পেজে এসেছে নানা ধরণের কমেন্ট- আমিনুর রহমান আশিক লিখেছেন, আমি মনে করি স্কুলের এটি সৃজনশীল এবং মহতী উদ্যোগ।
একজন অভিভাবক ফাতেমা ইসলাম বলেন, আমার মেয়ে সুমাইয়া- প্লে-শ্রেণিতে পড়ে, ক্লাস টিচারের সাথে ভিডিও কলে দশ মিনিট ক্লাস করেছে। সে খুব খুশি।
অভিভাবক লতা ইসলাম বলেন, আমার ছেলে আজ ভিডিও কলে ক্লাস করেছে, এই ব্যতিক্রম ক্লাস পেয়ে সে অনেক উৎচ্ছসিত এবং আমরাও অনেক খুশি হয়েছি। বাচ্চারা ঘরে বসে থাকলে কার্টুন এর উপর নির্ভর হয়ে পরবে। তাই স্কুলের এই উদ্যোগে কার্টুন দেখা থেকে শিশুরা বিরত থাকবে। পরবর্তীতে তাদের স্কুলে যেতে অনিহা থাকবে না।
হাতেখড়ি প্রি-প্রাইমারী স্কুলের চেয়ারম্যান নওশাদ রানা সানভী বলেন, করোনা ভাইরাস আতঙ্কে সরকারের সিদ্ধান্ত আমরা সাধুবাদ জানাই। শিশুরা ঘরে বসে থাকলে অনেকটাই অমনোযোগি হয়ে পড়বে এবং চর্চা না থাকলে ভুলে যাবে। তাই আমরা ডিজিটাল পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে ঘরে বসেই শিক্ষা গ্রহণের ব্যবস্থা করেছি। এতে আমরা বেশ সাড়া পেয়েছি। অভিভাবকরা হতাশায় পরে যায়। আমাদের এই উদ্যোগে গ্রহনের পর তাদের হতাশা দুর হয়।
তিনি আরও বলেন, এখন আধুনিক যুগ, এ্যানড্রয়েট ফোন ও ইন্টারনেট সবাই ব্যবহার করেন। তাই আমরা এই সুযোগটা কাজে লাগাচ্ছি। শুধু মুখে বললেই হবে না ডিজিটাল বাংলাদেশ। যার যার জায়গা থেকে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করলে হবে দেশের উন্নতি।
শিক্ষকরা স্কুলের পাশাপাশি বাসায় বসেও ক্লাস নিতে পারবে ইন্টারনেট সেবার মাধ্যমে। শুধু অফিস সময়েই নয়, সকাল ৮টা থেকে ৯টা পর্যন্ত সময়ে আমরা ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে বাচ্চাদের পড়ালেখার তথ্য দিয়ে থাকবো। দেশের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের কাছে আমার অনুরোধ থাকবে তারাও যেন ডিজিটাল প্রযুক্তি কাজে লাগায়। এতে বর্তমান সময়ে বিশ্ব মহামারি করোনা ভাইরাস থেকে মুক্ত থাকতে পারবে। তার সাথে স্কুল বন্ধের প্রভাব পরবে না শিক্ষার্থীদের মাঝে।
এসআর
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি
আপনার মন্তব্য লিখুন...