টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও বীরমুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলার অন্যতম পলাতক আসামি সাংসদ আমানুর রহমান খানের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
আজ রোববার সকালে আকর্শিক টাঙ্গাইল আদালতে হাজির হন টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা। তিনি টাঙ্গাইলের চাঞ্চল্যকর আ’লীগ নেতা ও বীরমুক্তিযোদ্ধা হত্যা মামলার পলাতক আসামী। দীর্ঘদিন লোকচক্ষুর অন্তরালে থাকা সাংসদের হঠাৎ আদালত চত্ত্বরে উপস্থিতিতে পাল্টে যায় এ এলাকার স্বাভাবিক পরিস্থিতি।
সাংসদের আদালত চত্ত্বরে অবস্থান করার বিষয়টি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে শহরের আনাচে-কানাচে। এসময় সাংসদের পক্ষ ও বিপক্ষের লোকজন জমায়েত হতে থাকে আদালত এলাকায়।
পরে তিনি আদালতের স্বাভাবিক র্কাযক্রম শুরু হওয়ার আগেই টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে ঢুকে পড়েন।
আদালতে আত্মসর্মপণ করার পরে সাংসদ আমানুরের পক্ষের আইনজীবীরা জামিন চান। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে জামিনের বিরোধিতা করা হয়।
এসময় উভয় পক্ষের বক্তব্য শেষে আদালতের বিচারক আবুল মনসুর আহমেদ জামিন নামঞ্জুর করে সাংসদকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এ সময় আদালতে মামলার বাদী নিহত ফারুক আহমেদের স্ত্রী নাহার আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে সাংসদ আমানুরের মুক্তির দাবিতে নানা কর্মসূচীর প্রস্তুতি নিচ্ছে তার সমর্থকরা। আর সাংসদের কঠোর শাস্তির দাবিতে জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান নেতা-কর্মীরা কর্মসূচী পালনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ নিয়ে টাঙ্গাইল শহর ও ঘাটাইলে উত্তেজনা কর পরিবেশ বিরাজ করছে।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি রাতে ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ লাশ টাঙ্গাইলে তাঁর কলেজ পাড়া এলাকার বাসার সামনে পাওয়া যায়। ঘটনার তিন দিন পর তাঁর স্ত্রী নাহার আহমেদ টাঙ্গাইল সদর থানায় মামলা করেন।
প্রথমে থানার পুলিশ ও পরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) মামলার তদন্ত শুরু করে। ২০১৪ সালের আগস্টে এই মামলার আসামি আনিছুল ইসলাম ওরফে রাজা ও মোহাম্মদ আলী গ্রেফতার হন। আদালতে তাদের স্বীকারোক্তিতে সাংসদ আমানুর ও তাঁর তিন ভাইয়ের এ হত্যায় জড়িত থাকার বিষয়টি বেরিয়ে আসে। এরপর থেকে সাংসদ ও তাঁর ভাইয়েরা আত্মগোপনে আছেন।
এ বছরের ৩ ফ্রেবুয়ারী সাংসদ আমানুর ও তাঁর তিন ভাইসহ ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। ৬ এপ্রিল আদালত মামলার অভিযোগপত্র গ্রহণ করে পলাতক আমানুরসহ ১০ জনরে বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
১৭ মে এই ১০ জনের বিরুদ্ধে হুলিয়া ও মালামাল জব্দ করার নির্দেশ দেন আদালত। ২০ মে পুলিশ সাংসদ ও তাঁর তিন ভাইয়ের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মালামাল জব্দ করে। তবে সেখানে তেমন কিছু ছিল না।
র্সবশষে ১৬ জুন আদালত আসামিদের হাজির হওয়ার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার নির্দেশ দেন। সাংসদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির বিষয়টি চিঠি দিয়ে জাতীয় সংসদের স্পীকারকে জানানো হয়।
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি
আপনার মন্তব্য লিখুন...