সনাতন ধর্মের সার কথা হচ্ছে, ঘোর কলিযুগে জীবের দুঃখ মোচন ও শান্তি লাভের একমাত্র উপায় হরিনাম মহাসংকীর্তন। সেমতে, মহাবতার শ্রীশ্রী গৌর সুন্দর সত্য, সুন্দর ও জগতের সকল জীবের মুক্তির দূত হয়ে আবির্ভূত হন। তিনি লীলাচ্ছলে বিলিয়েছেন শাশ্বত বিশ্বশান্তির মহামন্ত্র “হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে, হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে”।
বিশ্বমানবতা এবং দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় কালীবাড়িতে বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে শ্রী শ্রী মহানামযজ্ঞ ও অষ্টকালীন লীলা কীর্তন।
জানা যায়, গত সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত শ্রীমদ্ভাগবত ও শ্রী চৈতন্য চরিতামৃত পাঠ করা হয়। পাঠক ছিলেন মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্টর পীযূষ কান্তি দাস (মানিক), সরকারী এম এম আলী কলেজের প্রভাষক ভক্ত কল্যাণ দাস (রিপন) ও নাগরপুর কলেজের অধ্যাপক লক্ষ্মীকান্ত সাহা।
বুধবার রাতে অধিবাস কীর্তনের পর বৃহস্পতিবার ভোর থেকে শুরু হয় ৫৬ প্রহরব্যাপী নাম কীর্তন।
নাম কীর্তন পরিবেশন করবেন দেশের সবচেয়ে স্বনামধন্য জয়গুরু সনাতন সম্প্রদায়, ফরিদপুর শ্রী গৌরাঙ্গ সম্প্রদায়, খুলনা রঘুনাথ জিউ সম্প্রদায়, মাদারীপুর অচ্যুতানন্দ সম্প্রদায়, মাদারীপুর বঙ্কবিহারী সম্প্রদায়, ঢাকা মা ভবতারিণী সম্প্রদায়, গোপালগঞ্জ শান্তি নিকেতন সম্প্রদায়, মানিকগঞ্জ কীর্তনীয়া দল।
এ নাম কীর্তন চলবে আগামী বৃহস্পতিবার রাত্রি পর্যন্ত।
আগামী শুক্রবার ভোর হতে শনিবার ভোর পর্যন্ত লীলা কীর্তন পরিবেশন করবেন শ্রী অমলেশ ব্যানার্জী, ফরিদপুর শ্রী দুলাল চক্রবর্তী, পাকুল্যা, টাঙ্গাইল ও শ্রীমতি তৃষ্ণা দেবনাথ, বগুড়া।
এরপর ২১ মে ২০১৬ ইং শনিবার শ্রী শ্রী মহাপ্রভুর ভোগ দিয়ে মহন্ত বিদায়ের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটবে।
অনুষ্ঠান সম্পর্কে পরপর ৩ বারের আহ্বায়ক প্রদীপ কুমার গুণ (ঝন্টু) বলেন, বিগত ৭২ বৎসর যাবৎ কালীবাড়িতে এই অনুষ্ঠানটি চলছে এবং এটি টাঙ্গাইলের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানে সারা বাংলাদেশ থেকে ভক্তরা অনুষ্ঠানে আসেন। তাদের জন্য থাকার সুব্যবস্থা না থাকলেও তাদের প্রতিদিন দুইবেলা সব ভক্তদের প্রসাদ বিতরণ করা হয়। প্রতিদিন ৪ থেকে ৫ হাজার ভক্ত প্রসাদ গ্রহণ করেন। তিনি আরো বলেন, এই অনুষ্ঠানটি টাঙ্গাইলের সকল ধর্মের মানুষের আন্তরিক সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
এলাকার হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে দিনরাত এই অনুষ্ঠানকে সফল করার জন্য শারীরিক, মানসিক ও আর্থিক সহযোগিতা করে থাকে।
তিনি আরো জানান, বিশ্বের যে প্রান্তেই আমাদের টাঙ্গাইলের বাসিন্দা আছে, তারা সবাই এই অনুষ্ঠানকে ঘিরে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। অনুষ্ঠানে টাঙ্গাইলের রাজনৈতিক, সামাজিক ও প্রশাসনিক ব্যক্তিত্বরা সার্বিক সহযোগিতা করে থাকেন। সেজন্য তিনি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ বলে জানান।
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি
আপনার মন্তব্য লিখুন...