টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে মহাসড়কের পাশে জন্ম নেওয়া সেই পাগলীর শিশু সন্তানটিকে দত্তক দেয়া হয়েছে। শিশুটির নামে ১০ লাখ টাকা এফডিআর করার শর্তে লাল মাহমুদ ও রিয়া মাহমুদ দম্পতির কাছে দত্তক দেয়া হয়েছে। এর আগে শিশুটিকে দত্তক পেতে ২৮টি পরিবার আবেদন করে। যাচাই বাছাই শেষে জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ড শিশুটিকে ওই দম্পত্তির কাছে দত্তক দেয়া হয়। লাল মাহমুদ দম্পতির বাড়ি টাঙ্গাইলের ভুঞাপুর উপজেলার নিকলা ইউনিয়নের ভারৈ গ্রামে বলে জানা গেছে।
রোববার বিকেলে টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দার তাঁর কার্যালয়ে শিশুটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে ওই দম্পতির কাছে হস্তান্তর করেন। এর আগে বৃহস্পতিবার শিশু কল্যাণ বোর্ডের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এসময় মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাকিলা বিনতে মতিন, জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক শাহ্ আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, গত ৫ জুলাই সকাল ৬টার দিকে মির্জাপুর উপজেলা সদরের পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে এক পাগলী প্রসব ব্যাথায় ছটফট করছিলেন। ওইসময় প্রাতভ্রমনে বের হওয়া বাওয়ার কুমারজানী গ্রামের মজিরন বেগম ও আরো দুই নারী এগিয়ে যান । কিছুক্ষন পর পাগলীটি একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। পাগলী ওই শিশুকে দুরে সরিয়ে দিলে প্রাথমিক পরিচর্যা শেষে মজিরন বেগম শিশুটিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাকিলা বিনতে মতিনের অফিসে নিয়ে যান। পরে মাকে খুজে বের করে মা ও শিশুকে কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ বিষয়ে একাধিক পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হলে অনেক পরিবার শিশুকে দত্তক নেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে। শিশুটি দত্তক নিতে আগ্রহীদের কাছে আবেদন চাওয়া হয়। মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ২৮টি আবেদন পত্র জমা পড়ে।
টাঙ্গাইল জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ড যাচাই বাছাই শেষে ভুঞাপুরের ওই দম্পতিকে নির্বাচন করেন। রবিবার (১৬ জুলাই) বিকেলে জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দার তার কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শিশুটিকে লাল মাহমুদ ও রিয়া মাহামুদ দম্পতির কাছে হস্তান্তর করেন।
শিশুটি দত্তক পাওয়া লাল মাহমুদ বলেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে জানতে পারি মির্জাপুরে এক পাগলী রাস্তায় একটি সন্তান প্রসব করেছে। আমরা শিশুটিকে দত্তক নিতে জেলা প্রশাসকের নিকট আবেদন করি। আজ আমরা শিশুটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে পেলাম।
টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দার বলেন, ফুটফুটে নিস্পাপ শিশুটিকে পেতে ২৮টি পরিবার আবেদন করেছিলেন। আমরা যাচাই বাছাই করে একটি নিঃসন্তান সক্ষম দম্পতিকে নির্বাচন করতে পেরেছি। দত্তক নেয়া পরিবার শিশুটি যাতে স্বচ্ছল ও নিরাপদ পরিবেশে বেড়ে উঠতে পারে সেজন্য শিশুর নামে ১০ লাখ টাকা এফডিআর করেছে। আমরা আশা করি শিশুটি ওই দম্পতির কাছে ভাল থাকবে।
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি
আপনার মন্তব্য লিখুন...