ডেল্টা ভাইরাসের সংক্রমণ আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় করোনার নতুন হটস্পট এখন টাঙ্গাইল। দিন দিন পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। বাড়ছে মৃত্যু, এরই সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যাও।
টাঙ্গাইল যখন মৃত্যু পরিতে পরিণত হতে চলেছে ঠিক তখনও উল্টোচিত্র মার্কেট গুলোতে। করোনা সংক্রমন নিয়ন্ত্রনে আনতে দেশব্যাপী কঠোর লকডাউন চললেও টাঙ্গাইলের বিভিন্ন মার্কেটে দেখা গেছে চুপিসারে দোকান খুলে বেঁচাকেনা করতে।
সরকারী নির্দেশনাকে বৃদ্ধাআঙ্গুলী দেখিয়ে কিছু ব্যবসায়ী ব্যবসা পরিচালনা করলেও নেই প্রশাসনের কোন নজরদারি। আর যারা সরকারী নির্দেশ মেনে ব্যবসা প্রতিষ্টান বন্ধ রেখেছে, তাদের মাঝে বিরাজ করছে চরম অসন্তোষ।
শহরের সকল মার্কেটেই চুপিসারে দোকান খোলা রেখে ব্যবসা করতে দেখা গেছে। এই সময়ে মার্কেটগুলোতে শুধুমাত্র নিরাপত্তা কর্মীদের অবস্থান করার কথা থাকলেও প্রতিটি মার্কেটের সামনেই নজর কাড়ে দোকান কর্মচারীদের অবস্থান। মার্কেট গুলোর প্রধান সড়কসহ সকল অলিগলিতে দোকান কর্মচারীদের একটি ছোট ছোট গ্রুপ নিয়মিত খোঁজখবর রাখছে কখন ভ্রাম্যমান আদালতের টীম আসবে। আর এরই ফাঁকে ব্যবসায়ীরা দেদারছে দোকান খোলা রেখে বেচা-বিক্রি চালিয়ে যাচ্ছে।
সরজমিনে মার্কেট গুলোতে গিয়ে দেখা যায়, কোন কোন দোকানের সাটার কিছুটা খোলা। আবার কোন কোন দোকানের একটি সাটার পুরো খুলেই ভিতরে দেদারছে বিক্রি চলছে। অল্প সংখ্যক দোকান খোলা থাকায় এসব দোকানে ভীড় লক্ষ্য করা গেছে। সেখানেও নেই স্বাস্থ্যবিধির কোন বালাই।
গত বছরের ৮ এপ্রিল জেলায় প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। সেসময় করোনা নিয়ন্ত্রনে লকডাউন দেওয়া হলেও তখনও এসব ব্যবসায়ীরা চুপিসারে দোকান খোলা রেখে ব্যবসা চালিয়েছে। সে সময় দু'একজনের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালত ব্যবস্থা নিলেও কঠোর কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় দিন দিন বাড়ছে সরকারী নির্দেশনা অমাণ্যকরার প্রতিযোগিতাও। এসব খোলা রাখা দোকান গুলোর মধ্যে কতিপয় ব্যবসায়ী নেতাদের দোকানও রয়েছে বলে জানা গেছে।
শহরের মার্কেটগুলোতে কাপড়ের দোকান, কসমেটিকস এর দোকান, মোবাইল এর দোকান থেকে শুরু করে সব ধরনের দোকানই খোলা হচ্ছে চুপিসারে। আর এসব দোকানে ক্রেতাও আছে।
সরকারী বিধি নিষেধ মেনে দোকান বন্ধ রাখা ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। আর প্রতিদিনই দোকান খোলার সংখ্যাও বাড়ছে। এভাবে চলতে থাকলে লকডাউন দেওয়ার কোন প্রয়োজনই ছিলো না বলেও তারা জানান।
এদিকে কিছু ব্যবসায়ী দোকান খোলা রেখে বেচা-কেনা করলেও বেশির ভাগ ব্যবসায়ীই হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্থ। এজন্য প্রশাসনের দূর্বল মনিটরিং ব্যবস্থাকেই দায়ি করেছেন ব্যবসায়ীরা। এ নিয়ে প্রশাসনের প্রতি চরম অসন্তোষ বাড়ছে ব্যবসায়ীদের মাঝে।
করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় গত ২০ জুন দুপুরে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক ড. আতাউল গনি টাঙ্গাইল ও এলেঙ্গা পৌরসভায় সাতদিনের কঠোর বিধিনিষেধ জারি করেন।
এর মাঝে দেশব্যাপী কঠোর লকডাউনের নির্দেশনা জারি করে সরকার। কঠোর লকডাউনের শুরুতে প্রশাসনিক কঠোর নজরদারি থাকলেও দিন যত যাচ্ছে ততই যেন ঢিলেঢালা হচ্ছে সবই।
এরই মাঝে চুপিসারে দোকান খুলে বেচা-কেনাও করছে এক শ্রেণীর ব্যবসায়ীরা। এ নিয়ে মিশ্রপ্রতিক্রয়া দেখা দিয়েছে ব্যবসায়ীদের মাঝে।
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি
আপনার মন্তব্য লিখুন...