টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে চোর সন্দেহে সন্ধা রানী (৩৫) নামে এক আদিবাসী নারীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার সাগরদিঘী ইউনিয়নের মালিরচালা গ্রামে। তার স্বামীর নাম নারায়ন বর্মণ। এ ব্যাপারে গতকাল রোববার (১০ জানুয়ারি) রাতে নির্যাতিত নারী বাদি হয়ে ৫ জনকে আসামী করে থানায় মামলা করেছেন।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, নির্যাতিত সন্ধা রানীর দুই ছেলে ও এক মেয়ে জননী। তার ছোট ছেলে পলাশ (৮) একই গ্রামের মনিরুল ইসলাম ভূইয়ার পরিবারের ছেলে মেয়েদের সাথে প্রায়ই খেলা করত। ঘটনার ১৫দিন আগে পলাশ মনিরুল ভূইয়ার বাড়ি থেকে ঘুড়ি বানানোর জন্য পত্রিকা নিয়ে আসে এবং তার সন্তানদের সঙ্গে ঘুড়ি উড়ায়। হঠাৎ মনিরুলের বাড়ি থেকে স্বর্ণ ও টাকাসহ মূল্যবান কাগজপত্র চুরি হয়ে যায়। এ ঘটনার জের ধরে ৩ জানুয়ারি শিশু পলাশকে তারা বাড়ি ধরে নিয়ে মারধর করে এবং মালামাল চুরি করে তার মায়ের কাছে জমা দেয়ার স্বীকাররুক্তি আদায় করে।
৯ জানুয়ারি মনিরুলের দুই বোন মোছাঃ খুকি (৩৭) ও সুমি আক্তার (৩২) সন্ধা রানীর বাড়ি গিয়ে তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায়। পরে তারা সন্ধা রানীকে বাড়ির পাশের করিম ভূইয়ার আকাশমনি গাছের বাগানে নিয়ে রশি দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখে। এ সময় মনিরুল ভূইয়া তার দুই ছেলে মোস্তফা ও দুই বোন মিলে তাকে লাঠি দিয়ে এলোপাথারি মারধর করে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান দেন।
মামলার আসামীর মোস্তফা ভূইয়া বলেন, আমার ছোট বোনের গহনা চুরি করে সন্ধা রানীর ছেলে পলাশ। সে চুরি করা গহনা তার মায়ের কাছে জমা দেয়। বারবার চাইলেও তারা দেয়না। তাই আমার ছোট বোন সুমি সন্ধা রানীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখে। আমরা কিছু জানিনা।
প্রত্যেক্ষদর্শী মহানন্দ চন্দ্র বর্মন বলেন, ঘটনার দিন সন্ধা থেকে প্রায় চার ঘন্টা সন্ধা রানীকে বেধে রাখা হয়। এ সময় তার ৬ মাসের শিশু বাচ্চাকে মায়ের বুকের দুধও খেতে দেয়নি। পরে আমি দুই বন্ধুর সহযোগিতায় সন্ধা রানীকে উদ্ধার করি। বর্তমানে সে আমার বাড়িতে আছেন।
ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মো.ছাইফুল ইসলাম বলেন, মামলার তদন্ত কাজ চলমান রয়েছে। আসামীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি
আপনার মন্তব্য লিখুন...