টাঙ্গাইলের ভুঞাপুরে নোটিশ না দিয়েই লীজ নিয়ে ভবনে থাকা সেতু রেস্ট হাউজের বাসিন্দাদের উচ্ছেদ করেছে সেতু কর্তৃপক্ষ।
শনিবার (০২ জানুয়ারি) দুপুরে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সালাহউদ্দিন আইয়ূবীর নেতৃত্বে এই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় রেস্ট হাউজের চারটি ভবনের বাসিন্দা ও ২০টি দোকানদারকে সেখান থেকে নামিয়ে দিয়ে রুমগুলোতে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়। পরে সেতু কর্তৃপক্ষ জেলার সড়ক ও জনপদ বিভাগকে রেস্ট হাউজ বুঝিয়ে দেয়া হয়।
জানা গেছে, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের ভুঞাপুরে অবস্থিত সেতুর রেস্ট হাউজটি দশ বছরের জন্য গত ৬ বছর আগে পরিত্যাক্ত অবস্থায় ইজারারা নেয় স্থানীয় রাবিতা এন্টারপ্রাইজ। এতে প্রতিবছর ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান রাবিতা এন্টারপ্রাইজ ভাড়া হিসেবে ২লাখ ২০ হাজার টাকা সেতু কর্তৃপক্ষকে পরিশোধ করে আসছিল। এরপর কোন কারণ দর্শানোর ছাড়াই সেতু কর্তৃপক্ষ ইজারা বাতিলসহ এর জামানত বাজেয়াপ্রাপ্ত করে নোটিশ দেয়। পরে ইজারাদারী প্রতিষ্ঠান টাঙ্গাইলের ভুঞাপুর সহকারি জজ আদালতে মামলা দায়ের করেন। পরে আদালত গত ৫ নভেম্বর অন্তর্বর্তিকালীন নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন। এছাড়া পনের দিনের মধ্যে সেতু কর্তৃপক্ষকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় আদালত। এরপর গত ৬ ডিসেম্বর ইজারাদারী প্রতিষ্ঠান পুনরায় আদালতে স্থিতিবস্থার আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন।
এদিকে আদালতের স্থিতিবস্থার আদেশ থাকলেও তড়িঘড়ি সেতু কর্তৃপক্ষ কোন নোটিশ না দিয়ে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে।
উচ্ছেদ অভিযানে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ সেতু কতৃপক্ষ (বিবিএ) যুগ্ম সচিব (পরিচালক প্রশাসন) মো, রেজাউল হায়দার, যুগ্ম সচিব(পরিচালক পরিকল্পনা) ড. মনিরুজ্জামান, যুগ্ম সচিব (পরিচালক অর্থ) রুপম আনোয়ার, উপ সচিব ( প্রশাসন) মনিরুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, মোছা. ইশরাত জাহান, উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. আসলাম হোসাইন, বঙ্গবন্ধু সেতুর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী তোফাজ্জল হোসেন, নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবির পাভেল, জেলার সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী ইমরান ফারহান সোমেল প্রমুখ।
রেস্ট হাউজের এক ভবনের ভাড়াটিয়া শাহআলম সরকার বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই বাসায় ভাড়া থাকতাম। হঠাৎ করেই গতকাল রাতে ভবন খালির জন্য মাইকিং করা হলেও কোন নোটিশ দেয়নি। বিকল্প কোন থাকার ব্যবস্থা এখনও হয়নি। পরিবারের লোকজন নিয়ে কোথায় থাকবো সেটা নিয়ে চিন্তায় আছি।
আরেক ভাড়াটিয়া লুৎফর রহমান জানান, ভবন খালির জন্য কোন নোটিশ না দিয়ে হঠাৎ করে এমন উচ্ছেদে আমাদের রাস্তায় থাকা ছাড়া কোন জায়গা নেই। সময় না দিয়ে এভাবে উচ্ছেদের ফলে শিশু সন্তানদের নিয়ে খোলা আকাশের নিচে থাকতে হবে।
রাবিতা এন্টারপ্রাইজের লেলিন খান বলেন, সেতু কর্তৃপক্ষকে বারবার বাৎসরিক ইজারার টাকা দিতে চাইলেও কর্তৃপক্ষ নেয়নি। পরে কোন কারন ছাড়াই সময় না দিয়ে সেতু কর্তৃপক্ষ উচ্ছেদ করছে। এর আগে জজ কোর্টে স্থিতাবস্থার আদেশও রয়েছে আমাদের কাছে।
জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সালাহউদ্দিন আইয়ূবী বলেন, উচ্ছেদের বিষয়টি পুরোটাই সেতু কর্তৃপক্ষ করছে। আমরা শুধু আইনশৃঙ্খলা যাতে অবনতি না হয় সেই দিকটা দেখভাল করছি।
তবে এবিষয়ে বাংলাদেশ সেতু কতৃপক্ষ (বিবিএ) যুগ্ম সচিব (পরিচালক প্রশাসন) মো, রেজাউল হায়দার কোন বক্তব্য দিতে রাজি হয়নি।
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি
আপনার মন্তব্য লিখুন...