টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে শ্রেণিকক্ষে আটকিয়ে শ্লীলতাহানীর চেষ্টা চালিয়েছে ওই মাদ্রাসার তিন ছাত্র। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ দুই দফায় হাজির করার চেষ্টা করেও ব্যার্থ হয়েছে বলে জানা গেছে। উল্টো ছাত্রীর পরিবারকে নানাভাবে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার লতিফপুর ইউনিয়নের গোড়াকী হারুনীয়া দাখিল মাদরাসায়।
জানা গেছে, গত সপ্তাহে গোড়াকী হারুনীয় দাখিল মাদ্রাসায় ‘ক্রীড়া সপ্তাহ’ ঘোষণা করে সপ্তাহব্যাপী খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। গত মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যšত্ম খেলাধুলা শেষে মাদ্রাসা ছুটি ঘোষণা করে শিক্ষকরা যোহরের নামাজ পড়তে যান। একে একে সকল শিক্ষার্থী মাদ্রাসা থেকে বেরিয়ে গেলেও ৯ম শ্রেণির এক ছাত্রীকে দশম শ্রেণির ছাত্র আলামীন ক্লাস রুমে আটকিয়ে ভেতর থেকে রুমের দরজার ছিটকারি বন্ধ করে দেয়। ওই সময় মাদ্রাসার দশম শ্রেণির অপর দুই ছাত্র আলামীনের সহযোগী রাকিব ও ফাহিম দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে তাকে পাহাড়া দেয়।
মাদরাসা বন্ধ ঘোষণা করায় দপ্তরি জাহেদ ক্লাস রুমের দরজা বন্ধ করতে এসে ওই রুমের দরজা ভেতর থেকে ছিটকারী আটকানো দেখতে পায় এবং ভেতরে চিৎকার চ্যাঁচামেচির শব্দ শুনতে পায়। পরে সে বাইরে থেকে দরজা খুলতে বললেও দরজা না খোলায় জাহেদ মাদ্রাসার বিএসসি শিক্ষক জহিরুল ইসলামকে ডেকে আনেন।
পরে শিক্ষক জহিরুল ইসলাম এসে উত্তেজিত হয়ে দরজা খোলতে বললে আলামীন ক্লাস রুমের দরজা খুলে পালিয়ে যায়। এসময় ওই ছাত্রী কান্নায় ভেঙে পড়েন।
শিক্ষক জহিরুল ইসলাম এ ঘটনা মাদ্রাসা সুপার শামসুদ্দিনকে জানালে তিনি ঘটনাটি পরিচালনা পরিষদের সভাপতিসহ অন্য সদস্যদের জানান।
গোড়াকী হারুনীয়া দাখিল মাদ্রাসা পরিচালনা পরিষদের সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান মন্টুসহ সদস্যরা বিষয়টি মীমাংসার জন্য গত শনিবার ও আজ মঙ্গলবার পরপর দুই দিন বৈঠক ডাকলেও অভিযুক্ত শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা কেউ বৈঠকে হাজির হয়নি। উল্টো তারা ছাত্রীর পরিবারকে নানভাবে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে মাদ্রাসার সুপার শামসুদ্দিনের সঙ্গে কথা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ঘটনাটি জানার পর মাদ্রাসা পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও সদস্যসহ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকেও বিষয়টি অবগত করেছি।
মাদ্রাসা পরিচালনা পরিষদের সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান মন্টুর সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি অবগত হয়ে পরপর দুই বার অভিযুক্তদের বৈঠকে ডাকা হলেও তারা উপস্থিত হয়নি। আগামী শনিবার পূর্নরায় বৈঠকের দিন নির্ধারণ করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. জাকির হোসেন মোল্লার সঙ্গে কথা হলে তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হয়ে প্রাথমিক ভাবে এলাকায় মীমাংসার পরামর্শ দিয়েছেন বলে জানান। তবে অপরাধের ধরন বুঝে অপরাধী যেন যথাযথ শা¯িত্ম পায় সে কথাও বলা হয়েছে বলে উলেখ করেন।
মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইসরাত সাদমীন বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই। জেনে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি
আপনার মন্তব্য লিখুন...