টানা ১২ দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন বেসরকারী টিভি চ্যানেল ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশন ও দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকার টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধি, টাঙ্গাইল প্রেসক্লাব, টেলিভিশন রিপোর্টার্স ফোরাম ও টাঙ্গাইল রিপোর্টার্স ইউনিটির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য এহসানুল হক শাহীন।
বুধবার সকাল ৯টার সময় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্নানিল্লাহে..রাজেউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৪৫ বছর।
শাহীন শহরের পলাশতলী এলাকার মৃত এনামুল হক খানের দ্বিতীয় ছেলে। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই মেয়েসহ অসংখ্য আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
বাদ মাগরিব টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় গোরস্থান জামে মসজিদে তার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. মাহবুব হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহের, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মুরাদ সিদ্দিকী, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব জামিলুর রহমান মিরন, টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি অ্যাডভোকেট জাফর আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক কাজী জাকেরুল মওলা, সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার টাঙ্গাইল জেলার সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট আতাউর রহমান আজাদ, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের ন্যাশনাল ডেস্ক ইনচার্জ তমাল মাহমুদ, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফরহাদ ইকবাল, প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, টাঙ্গাইল জেলা ও বিভিন্ন উপজেলায় কর্মরত সকল মিডিয়ার সংবাদ কর্মী, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গসহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার কয়েক হাজার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বিকেলে সাংবাদিক শাহীনের মৃতদেহ টাঙ্গাইল প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে আনা হলে সেখানে সংবাদকর্মীদের ঢল নামে। দীর্ঘদিনের সহকর্মীর অকাল মৃত্যুতে শেষ শ্রদ্ধা জানান সাংবাদিকরা।
এর আগে গতকাল দুপুর ৩টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে শাহীনের মৃতদেহ তার বাসভবনে এসে পৌঁছলে সেখানেও ভীড় করেন তার সহকর্মীরা। এসময় অনেকে কান্নায় ভেঙ্গে পরেন।
শাহীনের বড়ভাই মাছরাঙ্গা টেলিভিশন ও দৈনিক মানবকন্ঠ পত্রিকার টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধি এবং দৈনিক আজকের দেশবাসী পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক একরামুল হক তুহিন জানান, গত ১৭ নভেম্বর রাতে শাহীনের পেটে তীব্র ব্যথা অনুভব হলে তাকে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন ১৮ নভেম্বর শুক্রবার সকালে চিকিৎসকরা শাহীনকে ঢাকা মেডিকেলে রেফার্ড করেন। পরে ওইদিন রাতে ঢাকা মেডিকেলে শাহীনের সার্জিক্যাল টয়লেটিং অপারেশন করা হয়।
চিকিৎসকরা জানান, শাহীনের পেটে এপেন্ডিসাইড হয়েছিল। পরে এপেন্ডিসাইড পেটের মধ্যে ফেঁটে যাওয়ায় তার ফুসফুসসহ পুরো শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। ওইদিন অপারেশনের পর থেকেই শাহীনকে ঢাকা মেডিকেলের আইসিইউতে (লাইফ সার্পোট) রাখা হয়। এর মাঝে চিকিৎসকরা তার চিকিৎসা দিতে থাকেন। দীর্ঘ ১২ দিন আইসিইউতে থাকার পর বুধবার সকালে চিকিৎসকরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন। এর মধ্য দিয়েই শাহীন না ফেরার দেশে সবাইকে ছেড়ে চলে যান।
এদিকে সাংবাদিক শাহীনের অকাল মৃত্যুতে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে ৩ দিনের শোক কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে কালো পতাকা উত্তোলন, কালো ব্যাচ ধারণ ও দোয়া মাহফিল।
এছাড়া দৈনিক আজকের দেশবাসী পত্রিকার পক্ষ থেকেও তিনদিনের শোক কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে।
শোক প্রকাশ করেছেন, জেলা প্রশাসক, প্রেস ক্লাব, বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা, ইন্ডিপেন্ডন্ট টেলিভিশন, বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতি (বাকশিস), বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, আজকের দেশবাসী, টাঙ্গাইল২৪.কম, বংশাই টেলিভিশন, খবরবাংলা২৪.কম, টিনিউজ.কম, উত্তর টাঙ্গাইল সাংবাদিক ফোরাম, টেলিভিশন রিপোর্টার ফোরাম, মজলুমের কণ্ঠ, প্রগতির আলো, দৈনিক কালের বার্তা, কালের স্রোত, দৈনিক লোককথা, সাপ্তাহিক প্রযুক্তি ও সাপ্তাহিক মৌবাজার।
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি
আপনার মন্তব্য লিখুন...