টাঙ্গাইলের ঘাটাইলের সাতকোয়া পাহাড়ি বন এলাকায় বেড়াতে গিয়ে তিন স্কুল ছাত্রীকে গণধর্ষণের মামলায় গ্রেফতারকৃত তিন আসামীকে আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার বিকেলে টাঙ্গাইল জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে গ্রেফতারকৃত তিন আসামীর মধ্যে দুই আসামি বাবুল( ৩০) ও ইউসুফ( ৩৫)।
জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম সুমন কুমার কর্মকার ও আরিফুল ইসলাম জবানবন্দি রেকর্ড করেন। অপরদিকে ধর্ষিতা ওই তিন স্কুল ছাত্রীর ডাক্তারী পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। ধর্ষিতা ছাত্রীদের ২২ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণের জন্য আদালতে নেয়া হয়েছে।
টাঙ্গাইল জর্জ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট এস আকবর খান আসামির জবানবন্দি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ইউসুফ ও বাবু সহযোগী মিলে ওই তিন স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ করার কথা স্বীকার করেছেন। জবানবন্দির পরে আসামিদের জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত ।
এর আগে ঘটনায় জড়িত উপজেলার সন্ধানপুর ইউনিয়নের সাতকুড়া গ্রামের ইউসুফ, বাবুল এবং ঘাটাইল পৌর এলাকার উত্তর পাড়া গ্রামের সুমন নামের ওই তিন আসামীকে আদালতে প্রেরণ করা হয়। এছাড়াও সোমবার রাতে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে আসামীদের আটক করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ঘাটাইল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম জানান, গ্রেফতারকৃত তিন আসামীকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। দ্রুতই এ ঘটনায় জড়িত সকল আসামীদের গ্রেফতার করা হবে। ভিকটিমরা সবাই ঘাটাইল এ.সি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণির ছাত্রী।
এ ঘটনায় গত সোমবার এক মেয়ের বাবা আবুল কালাম আজাদ বাদি হয়ে বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামা ৫-৭ জনের বিরুদ্ধে অপহরণ ও ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য ভিকটিমদের টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হলে প্রাথমিক পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। ২২ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণের জন্য ভিকটিমদের আদালতে নেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, গত রোববার উপজেলার এসই বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের দোয়া ও বিদায় অনুষ্ঠান ছিলো। ওই বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির চার ছাত্রী বিদ্যালয়ে এসে ঘুরতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। সেই মোতাবেক দুপুর দেড়টায় তারা ঝড়কা এলাকায় যায়। সেখানে তাদের সাথে যোগ দেয় বন্ধু হৃদয় ও শাহীন।
পরে তারা আশিক নামের এক ব্যক্তির ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সাযোগে সাতকুয়া এলাকায় সেনাবাহিনীর ফায়ারিং রেঞ্জের উত্তর-পশ্চিম দিকে ঘুরতে যায়। এসময় ৫-৭জন ব্যক্তি তাদের ঘিরে ফেলে, হৃদয়, শাহীন ও আশিককে মারধর করে তিনজনকে ধর্ষণ করে এবং অপরকে ভাগ্নির মতো দেখা যায় বলে তাকে ধর্ষণ করা থেকে বিরত থাকে। দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত আটকে রেখে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়।
পরে ওই চার ছাত্রী সেখানে তাদের একজনের নানীর বাড়িতে আশ্রয় নেয়। সেখান থেকে মোবাইল ফোনে অভিভাবকদের বিষয়টি জানানো হয়। অভিভাবকরা থানা পুলিশকে জানালে তারা চার স্কুল ছাত্রীকে উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় সোমবার (২৭জানুয়ারি) মেয়ের বাবা আবুল কালাম আজাদ বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামা ৫-৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
এআরটি/এসআর
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি
আপনার মন্তব্য লিখুন...