০৯:১৮ এএম | টাঙ্গাইল, শুক্রবার, ৩ মে ২০২৪
প্রতিষ্ঠাতা মরহুম আব্দুল ওয়াহেদ মিয়া

ঢাবিতে দ্বিতীয় এবং জাবিতে প্রথম টাঙ্গাইলের ঊর্মি

স্টাফ রিপোর্টার | টাঙ্গাইল২৪.কম | বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর ২০১৯ | |
, টাঙ্গাইল :

একজন আদর্শ পিতা-মাতা, শিক্ষকদের সঠিক দিকনির্দেশনা, নিজের কঠোর পরিশ্রম, অধ্যবসায় এবং মেধার সমন্বয় থাকলে যে কোন শিক্ষার্থীই সফলতা পাবে।  এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ টাঙ্গাইলের নুরুন নাহার ঊর্মি। 

শিক্ষার শহর নামে পরিচিত টাঙ্গাইলের মেয়ে নুরুন নাহার ঊর্মি ঢাকা বিশ্যবিদ্যালয়ের স্নাতক প্রথম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষায় ‘খ’ ইউনিটে দ্বিতীয়  এবং জাহাঙ্গীর নগর বিশ্যবিদ্যালয়ে কলা ও মানবিকী অনুষদভূক্ত ‘সি’ ইউনিটে প্রথম স্থান অর্জন করেছে। 

প্রকাশিত ফল অনুযায়ী ঢাকা বিশ্যবিদ্যালয়ের কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘খ’ ইউনিটে এবছর সর্বমোট ১৭৭.৭৫ নম্বর পেয়ে দ্বিতীয় হয়েছে মেধাবী ঊর্মি। তার রোল নম্বর ৩১২৩৭০। প্রাপ্ত নম্বরের মধ্যে এসএসসি ও এইচএসসিতে প্রাপ্ত সিজিপিএর ভিত্তিতে ৮০ নম্বরের মধ্যে তিনি পেয়েছেন ৮০। 

এবছর ‘খ’ ইউনিটে সমন্বিতভাবে পাশের হার মোট শিক্ষার্থীর ২৩.৭২ শতাংশ। ভর্তি পরীক্ষায় নৈর্ব্যক্তিক অংশে পাশ করেছেন ১৮ হাজার ৫৮১ জন পরীক্ষার্থী। নৈর্ব্যক্তিক ও লিখিত অংশে সমন্বিতভাবে পাশ করেছেন ১০ হাজার ১৮৮ জন পরীক্ষার্থী। অনুত্তীর্ণ হয়েছেন ৩২ হাজার ৭৬৬ জন। 

রোববার দুপুরে বিশ্যবিদ্যালয়ের ভর্তি অফিসে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান আনুষ্ঠানিকভাবে এ ফল ঘোষনা করেন। বিশ্যবিদ্যালয়ের ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ২১ সেপ্টেম্বর। 

ফল প্রকাশ শেষে জানানো হয়, পাশ করা ১০ হাজার ১৮৮ জনের মধ্যে থেকে মেধাক্রম অনুযায়ী ভর্তি করা হবে। মোট দুই হাজার ৩৭৮ জন শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পাবে। 

উল্লেখ্য, ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা বিশ্যবিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও ক্যাম্পাসের বাইরে মোট ৭২ টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়। এবছর ‘খ’ ইউনিটে দুই হাজার ৩৭৮ টি আসনের জন্য ভর্তিচ্ছু আবেদনকারীর সংখ্যা ছিল ৪৫ হাজার ১৮ জন। 

এছাড়া নুরুন নাহার ঊর্মি জাহাঙ্গীর নগর বিশ্যবিদ্যালয়ে কলা ও মানবিকী অনুষদভূক্ত ‘সি’ ইউনিটে প্রথম স্থান অর্জন করেছে। তার রোল নম্বর-৩৫৪৯৫৬।

নুরুন নাহার ঊর্মি ২০০২ সালের ৬ মার্চ টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার গংগাবর গ্রামে শিক্ষক পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। 

তার পিতা নজরুল ইসলাম এবং মাতা লুৎফুননিসা খানম দুজনই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন । 

ঊর্মি ছোট বেলা থেকেই লেখাপড়ায় বেশ মনযোগী ছিল বলে জানা গেছে। সে পর্যায়ক্রমে ধারাবাহিক ভবে ভাল ফলাফল করে লেখাড়ায় বেশ সুনাম কুড়িয়েছে। 

শিক্ষাজীবনে পঞ্চম শ্রেণি থেকে সকল বোর্ড পরীক্ষতেই জিপিএ ৫ পেয়েছে ঊর্মি। সে ধনবাড়ী প্রি-ক্যাডেট ইনস্টিটিউট থেকে ২০১১ সালে পিইসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়ে পাশ করে। 

২০১৪ সালে ধনবাড়ী কলেজিয়েট স্কুল থেকে জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পায়। ২০১৭ সালে এই স্কুল থেকেই গোল্ডেন জিপিএ ৫ পেয়ে এসএসসি পাশ করেন। 

এবছর ময়মসিংহের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম কলেজ থেকে জিপিএ ৫.০০ পেয়ে এইচএসসি পাশ করেন। লেখাপড়ার পাশাপাশি বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করেও অনেক পুরস্কার পেয়েছে মেধাবী ঊর্মি। 

নুরুন নাহার ঊর্মি ঢাকা বিশ্যবিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় দ্বিতীয় এবং জাহাঙ্গীর নগর বিশ্যবিদ্যালয়ে কলা ও মানবিকী অনুষদভূক্ত ‘সি’ ইউনিটে প্রথম স্থান অর্জন করায় নিজ  গ্রাম এবং টাঙ্গাইল শহরেরর সকল শ্রেণির মানুষে নিকট বেশ প্রশংসিত হযেছে। তার এই অর্জনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও তাকে সকল শ্রেণির মানুষ অভিনন্দন জানিয়েছেন।

নুরুন নাহার ঊর্মি’র বাবা নজরুল ইসলাম জানান, “ আমি একজন শিক্ষক হিসেবে নিজের মেয়েকে যে ভাবে দিক নির্দেশনা দিয়েছি ঠিক তেমনি আমার অন্যান্য শিক্ষার্থীদেরকেও নিজের সন্তানদের মত লেখাপড়ায় অনুপ্রাণিত করার চেষ্টা করেছি। আমার মেয়েটা বেশির ভাগ সময় আমাদের সাথে স্কুলে যেতো। 

মেয়টা যখন চতুর্থ শ্রেণিতে পড়তো ঠিক তখন থেকেই মেয়েকে বাংলা এবং ইংরেজী সাহিত্যের প্রতি অনুপ্রানিত করতাম। সে স্কুল এবং কলেজের শিক্ষকদের সঠিক দিক নির্দেশনায় মনোযোগী হয়ে লেখাপড়া করায় এই সাফল্য পেয়েছে বলে আমি মনে করি। 

প্রত্যেক সন্তানের সাফল্যে যে কোন পিতাই আনন্দিত হয়। ঠিক তেমনি আমি নিজেও আমার সন্তানের সাফল্যে গর্বিত। আমি চাই আমার মেয়েটা শুধু একজন ভাল শিক্ষার্থী নয় একজন ভাল মানুষ হিসেবে নিজেকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করবে।” 

কৃতি শিক্ষার্থী নুরুন নাহার ঊর্মি জানান, “ আমার সাফল্যের নেপথ্যে মূলত পরিশ্রম । আমি মনে করি পরিশ্রম না করে শুধু মাত্র ট্যালেন্ট থাকলেই সফলতা পাওয়া সম্ভব না। 

আমি এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার পর থেকেই আমার পরিবারের সকল সদস্য আমাকে ঢাকা বিশ্বিদ্যালয়ে চান্স পাওয়ার জন্য অনুপ্রাণিত করেছেন। শুধু চান্স পেলেই হবে না তারা আমাকে ঢাকা বিশ্যবিদ্যালয়ে একটি ভাল অবস্থান তৈরি করার জন্য উৎসাহ-যুগিয়েছেন। আমার বিশ্বাস ছিল অমি চান্স পাবোই। 

আমি মনে করি সফল হতে হলে আত্মবিশ্বাসটা বেশি জরুরী। আমার বাংলা, ইংরেজী, সাহিত্য, ভূগোল এবং ইতিহাসের প্রতি আগ্রটা বেশি ছিল। তাই বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পাশ করে নিজের ইচ্ছায় মানবিক বিভাগে এইচএসসিতে ভর্তি হই। আমি উচ্চ শিক্ষায় নিজেকে শিক্ষিত করতে চাই। 

আমার জীবনের প্রথম শিক্ষক আমার বাবা। আমি আমার বাবা-মার কাছ থেকেই শিক্ষা জীবনের মূলমন্ত্র নিজের জীবনে ধারন করি এবং শিক্ষকদের প্রতি আমার শ্রদ্ধা এবং সম্মানের জায়গাটা অনন্য উচ্চতায়। তাই আমি ভবিষ্যতে বিশ্যবিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে চাই। আমি ঢাকা বিশ্যবিদ্যালয় এবং জাহাঙ্গীর নগর বিশ্যবিদ্যালয়ে ভাল ফলাফল করায় অবশ্যই আনন্দিত। আমি এই ফলাফলটা ধরে রাখতে চাই । এই অর্জন শুধু আমার একার নয় । 

এই অর্জন আমার পরিবার, স্কুল ও কলেজের শিক্ষক, এলাকার মানুষসহ পুরো টাঙ্গাইলবাসীর। তাই আমি ভবিষ্যতে যাতে ফলাফলের এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে পারি সে জন্য সকলের দোয়া চাই।”

আপনার মন্তব্য লিখুন...

নাগরপুরে দু''পক্ষের সংঘর্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান নি সখীপুর বনে দুর্বৃত্তের আগুন, বিলুপ্ত হচ্ছে বন্য প্রাণী কালিহাতীতে মে দিবস পালিত মেয়ে ও জামাতার বিরুদ্ধে বাবাকে নির্যাতনের অভিযোগ, বৃদ্ধ প্রধান শিক্ষককে বাড়িতে ডেকে নিয়ে মারধর, থানায় মামলা গোপালপুরে বিদেশ ফেরত পুনরেকত্রীকরন শীর্ষক কর্মশালা নাগরপুরে খাদ্যভিত্তিক পুুষ্টি (ফলিত পুষ্টি) বিষয়ক প্রশি করটিয়া হাটে আল আরাফা ইসলামী ব্যাংকের শাখা উদ্বোধন মেয়ের বাড়ি বেড়াতে এসে লাশ হলেন বাবা ৫০০ টাকা চাঁদা নেওয়ার অভিযোগে ছাত্রলীগ-যুবলীগের ৪ নেতা গোপালপুরে হিটস্ট্রোকে চা বিক্রেতার মৃত্যু  নাগরপুরে বালুবাহী ট্রাক্টর কেড়ে নিল যুবকের প্রাণ গোপালপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ স্থগিত  হিটস্ট্রোকে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর মৃত্যু, নির মওলানা ভাসানীর মাজারের দানবাক্সে মিলল ২ লক্ষ ৮৩ হাজার ট

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি