টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে সহকারি প্রধান শিক্ষককে বরখাস্তের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। এসময় শিক্ষার্থীরা ক্লাশ বর্জন করে মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করে। এর আগে বলরামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক লিয়াকত হোসেন তালুকদারকে বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে বরখাস্ত করা হয়।
সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলার অর্জুনা ইউনিয়নের বলরামপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করে। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান দিদারুল আলম খান মাহবুব বিষয়টির সমাধানের আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরে যায়।
জানা গেছে, বলরামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক লিয়াকত হোসেন তালুকদারের বিরুদ্ধে প্রধান শিক্ষককে আইনগত হুমকি, অসদাচরণ, টাকা আত্মসাৎ ও কর্তব্য অবহেলার অভিযোগে গত ১৩ সেপ্টেম্বর বরখাস্ত করা হয়। এছাড়া পূর্বে ওই শিক্ষককে কারণ দর্শানো ও বিভিন্ন অভিযোগে নোটিশ প্রদান করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পরে ওই নোটিশের বিষয়ে উল্টো সহকারি প্রধান শিক্ষক লিয়াকত হোসেন তালুকদার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে আইনী নোটিশ (উকিল নোটিশ) প্রেরণ করেন। পরবর্তিতে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি, শিক্ষক ও গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশে সহকারি প্রধান শিক্ষক লিয়াকত হোসেন তালুকদারকে বরখাস্ত করা হয়। পরে তার স্থানীয় বরখাস্ত করার জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয়ে পাঠানো হয়।
এদিকে সহকারি প্রধান শিক্ষককে অবৈধভাবে বরখাস্তের প্রতিবাদে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেছে। এসময় তারা শিক্ষক লিয়াকত হোসেন তালুকদারকে পুনরায় বিদ্যালয়ে ক্লাস কার্যক্রমে ফিরিয়ে নেয়ার দাবী করা হয়।
বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা জানান, শিক্ষক লিয়াকত হোসেন তালুকদারকে বরখাস্তের বিষয়ে কিছুই জানিনা। কোন মিটিংও করা হয়নি। একতরফাভাবে প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি তাকে বরখাস্ত করেছে।
বরখাস্ত হওয়া সহকারি প্রধান শিক্ষক লিয়াকত হোসেন তালুকদার জানান, অবৈধভাবে এবং মিথ্যা অভিযোগে বরখাস্ত করা হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে উকিল নোটিশ দিয়েছি।
বলরামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. লুৎফর রহমান জানান, অর্থ আত্মসাতসহ বিভিন্ন অভিযোগে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এছাড়া তাকে মৌখিকভাবে নোটিশ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি জবাব না দিয়ে উকিল নোটিশ পাঠিয়ে আইনি হুমকি দিয়েছেন। বিদ্যালয় পরিচালনা পর্যদ তাকে বরখাস্ত করেছে।
এই বিষয়ে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সাইফুল ইসলাম লোটনের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
অজূর্না ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দিদারুল আলম খান মাহবুব বলেন, মানববন্ধনের শিক্ষার্থীরা ক্লাশ বর্জন করে অংশগ্রহন ও বিষয়টি সুষ্ঠ সমাধানের আশ্বাস দিলে তারা ক্লাসে ফিরে যায়। পরবর্তিতে বিদ্যালয়ে বসে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে সমাধানের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান বলেন, ওই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এর প্রতিবাদে বিদ্যালয়ে মানববন্ধন করা হয়েছে সেটা উচিত হয়নি। বহিরাগতদের বিদ্যালয়ে প্রবেশ ও বিশৃঙ্খলা এড়াতে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল।
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি
আপনার মন্তব্য লিখুন...