টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার কালিদাস-জিসি-বহুরিয়া ইউপি সড়কের করুটিয়াপাড়া বাজারের উত্তর পাশে কাকড়ার জোড়া নামক স্থানে নির্মাণাধীন পিএসসি গার্ডার ব্রিজের কাজ ১ বছরে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ২ বছরেও শেষ হয়নি। স্থানীয়দের দাবি পূরণে সরকারের শক্তিশালী করণ প্রকল্প উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্পের আওতায় ব্রিজটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। স্থানীয় এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবিতে কাকড়ার জোড়া নামক স্থানে একটি টেকসই ব্রিজের কাজটি শেষ না করে উধাও ঠিকাদার।
জানা গেছে, ২ কোটি ২৮ লাখ ৭০ হাজার ৭৩১ টাকা ব্যয়ে ২৫ মিটার দৈর্ঘ্য পিএসসি গার্ডার ব্রিজের কাজটি ঢাকার মাইন উদ্দিনবাসী নামক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পায়। ২০২১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি কাজটি শুরু হয়ে ২০২২ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি শেষ হওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু ঠিকদারি প্রতিষ্ঠান মাত্র ২/৩ মাস কাজটি শুরু করে অজ্ঞাত কারণে ফেলে রেখে উধাও হয়ে গেছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কাগজপত্রে ২৫ ভাগ কাজ সম্পন্ন দেখালেও উপজেলার করুটিয়াপাড়া বাজারের উত্তর পাশে কাকড়ার জোড়া নামক স্থানে নির্মাণাধীন পিএসসি গার্ডার ব্রিজটির বাস্তবে মাত্র কয়েকটি পিলার,পাইলিং হয়েছে। কাজ ফেলে ঠিকাদার এখন উধাও। বারবার তাগাদা দিলেও ঠিকাদার এলাকায় আসছে না। এতে প্রায় ২ বছরের অধিক সময় ধরে ব্রিজের দুই পাশে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন অন্তত ১৫/১৬টি গ্রামের মানুষ।
স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল জব্বার, রফিকুল ইসলামসহ অনেকেই বলেন, কাকড়ার জোড়ার ব্রিজটি নির্মাণ না হওয়ায় হতেয়া-রাজাবাড়ি, কালিদাস, ঠকাইনাপাড়া, ফুলঝুড়িপাড়া, ভাতকুড়াচালা, করুটিপাড়া, কালমেঘা, ছলংগা, বহুরিয়া চতলবাইদ, হারিঙ্গাচালাসহ অন্তত পক্ষে ১৫/১৬টি গ্রামের মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। এই এলাকার মানুষ সখীপুর শহরে বা অন্য এলাকায় যেতে চাইলে ২০/২৫ কিলোমিটার ঘুরে যাতায়াত করতে হচ্ছে। এতে অর্থ সময় দুই-ই বেশি ব্যয় হচ্ছে।
স্থানীয় কয়েকজন শিক্ষক বলেন, ব্রিজটি সম্পন্ন না হওয়ায় ও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় স্থানীয় স্কুল-কলেজ ও মাদরাসাগামী শিক্ষার্থীরা সময় মত বিদ্যালয়ে যেতে পারছেনা।
কালিদাস ও করুটিয়াপাড়া বাজার ব্যবসায়ী হাফিজুর রহমান ও সাইফুল ইসলাম বলেন, দুই পাশে পাকা সড়ক থাকলেও শুধুমাত্র ব্রিজের নির্মাণ সম্পন্ন না হওয়ায় যানবাহন চলাচল করতে পারছেনা। এতে তাদের মালামাল পরিবহন করা কষ্টকর হয়ে উঠেছে। হাটবাজারগুলোতে আসতে মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই।
বহুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সরকার নূরে আলম মুক্তা বলেন, ব্রিজটি ২ বছর ধরে ফেলে রাখায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন গ্রামবাসি। ওই সড়ক ব্যবহার করে ইউনিয়ন পরিষদে উপকারভোগী, বিভিন্ন সেবাপ্রার্থীদের আসা-যাওয়া করতে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিকল্প সড়ক ঘুরে অনেক সময় লেগে যায়, এতে বয়োবৃদ্ধ মানুষের কষ্টের সীমা থাকে না। তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত ব্রিজটি নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।
একাধিক বার যোগাযোগ করেও ঢাকার মাইন উদ্দিনবাসী নামক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের কোনো বক্তব্য নেওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উপসহকারী প্রকৌশলী ফরিদ আহমেদ জানান, বারবার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে তাগাদা দিয়েও কোনো লাভ হচ্ছে না।
তিনি জানান, কাজটি সময় মত শেষ না করায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ঢাকা অফিস থেকে চিঠি দিয়ে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। বর্ষা মৌসুম গেলে প্রাক্কলন ব্যয় নির্ধারণ করে পুনরায় টেন্ডারের মাধ্যমে অসমাপ্ত কাজটি শেষ করা হবে।
তিনি আরও জানান, ওই প্রকল্পের আওতায় ব্রিজটির দুই পাশের ১৮ ফুট প্রশস্ত করে সাড়ে ৩ কিলোমিটার রাস্তা পাকাকরণের কাজ অন্য ঠিকাদার শেষ করেছেন।
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি
আপনার মন্তব্য লিখুন...