টাঙ্গাইলে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে এখনও যমুনা নদীর পানি ১১ সে.মি কমে বিপৎসীমার ২৩ সে.মি, ঝিনাই ২৯ সে.মি. আর ধলেশ্বরী ৮৭ সে.মি. বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে ৬টি উপজেলায় ১ লাখ ২৪ হাজার ৫৭১ জন পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এছাড়াও ৩ হাজার ৬১৩ হেক্টর ফসলী জমি বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, যমুনা নদীর পানি ১১ সে.মি কমে বিপৎসীমার ২৩ সে.মি, ঝিনাই ২৯ সে.মি. আর ধলেশ্বরী ৮৭ সে.মি. বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জেলা প্রশাসনের জেলা ত্রাণ ও পূনর্বাসন অফিস সূত্রে জানা যায়, পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলায় এখন পর্যন্ত টাঙ্গাইল সদর, নাগরপুর, দেলদুয়ার, ভূঞাপুর, কালিহাতী আর গোপালপুর উপজেলার ২৪ টি ইউনিয়নের অন্তত ১৩৭টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। অপরদিকে কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা পৌরসভা আংশিক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ৫ টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। ইউনিয়ন গুলোর মধ্যে রয়েছে মাহমুদনগর, কাতুলী, কাকুয়া, হুগরা আর ছিলিমপুর। ভূঞাপুর উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে।
এ উপজেলার ইউনিয়ন গুলো হলো অর্জুনা, গাবসারা, নিকরাইল আর গোবিন্দাসী। কালিহাতী উপজেলার ৪ টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। প্লাবিত ইউনিয়ন গুলোর মধ্যে রয়েছে দূর্গাপুর, গোহালিয়াবাড়ি, দশকিয়া আর সল্লা। গোপালপুর উপজেলার প্লাবিত ৩ টি ইউনিয়নের মধ্যে রয়েছে হেমনগর, ঝাওয়াইল আর হাদিয়া। নাগরপুরের ৫টি ইউনিয়নের মধ্যে রয়েছে সলিমাবাদ,ভাররা, ধুবুরিয়া, দপ্তিয়র আর পাকুটিয়া। দেলদুয়ার উপজেলার ৩ টি ইউনিয়নের মধ্যে রয়েছে আটিয়া, দেউলি আর লাউহাটি।
প্লাবিত ইউনিয়ন গুলোতে পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা ১ লাখ ২৪ হাজার ৫৭১ জন। অপরদিকে ৫৩২টি পরিবারের ঘরবাড়ি নদীতে গর্ভে বিলীন হয়েছে আর ৮৭৫টি পরিবারের ঘরবাড়ির আংশিক নদীতে গেছে। এছাড়াও নাগরপুরে ১ টি স্কুল নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বন্যায় ৬ উপজেলার ১৪৭ বর্গ কিলোমিটার এলাকা প্লাবিত হয়েছে। অপরদিকে জেলায় এখন পর্যন্ত ৩৬.৫ কি.মি. আংশিক কাচা রাস্তা এবং ১ কি.মি. আংশিক পাকা রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও ২টি আংশিক ব্রীজ কালভাট ক্ষতি হয়েছে। অন্যদিকে ৩টি টিউওবেল এবং ২.৫ কি.মি. আংশিক নদীর বাঁধ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। জেলায় ৩০০ মেট্রিক টন জিরআর চাল আর ৮ লাখ টাকা চাহিদা রয়েছে। আজ রোববার চাহিদা অনুসারে ২০০ মেট্রিক টন জির চাল আর নগদ ৩ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এছাড়া ২ হাজার শুকনা প্যাকেটও বরাদ্দ পাওয়া গেছে।
জেলা কৃষি বিভাগ জানায়, আজ ফসলী জমিতে পানি নিমজ্জিত হওয়ার সংখ্যা কমেছে। এখন বর্তমানে ৩ হাজার ৩৭১ হেক্টর ফসলী জমি পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। এর মধ্যে বোনা আমন ৯৬৯ হেক্টর, রোপা আমন (বীজতলা) ৬ হেক্টর, পাট ৩৮৭ হেক্টর, আউশ ৭০৬ হেক্টর, সবজি ২১১ হেক্টও আর তিল ১০৯২ হেক্টর।
টাঙ্গাইলের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আহসানুল বাশার বলেন, পানি নেমে গেলে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ ভাগ ফসলী জমির কোন ক্ষতি হবে না। এ ব্যাপারে কৃষি অফিস কাজ করছে।
সত্যতা নিশ্চিত করে টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সিরাজুল ইসলাম জানান, যমুনা আর ঝিনাই নদীর পানি কিছুটা কমলেও ধলেশ্বরী, পুংলী, বংশাই, ফটিকজানি নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে যমুনা নদীর পানি ১১ সে.মি কমে এখনও বিপৎসীমার ২৩ সে.মি, ঝিনাই ২৯ সে.মি. আর ধলেশ্বরী ৮৭ সে.মি. বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সামনে নদীর পানি আরো বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি
আপনার মন্তব্য লিখুন...