টাঙ্গাইলে মাদকাসক্ত ছেলেকে ত্যাজপুত্র ঘোষণা করলেন টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার শামসুল হক নামের এক বীর মুক্তিযোদ্ধা।
মঙ্গলবার দুপুরে নোটারী পাবলিক টাঙ্গাইল আদালতে হাজির হয়ে তার ছোট ছেলে আজাহারুল হক জয়কে (২৩) এফিডেভিটের মাধ্যমে ত্যাজ্য পুত্র ঘোষণা করেন।
পরে তিনি স্থানীয় পত্রিকায় একটি বিজ্ঞপ্তি দেন।
বীরমুক্তিযোদ্ধা শামসুল হক জানান, ৮ম শ্রেণী পড়া অবস্থায় তার ছেলে আজাহারুল বন্ধুদের সাথে আড্ডায় পড়ে ইয়াবা ট্যাবলেট সেবন করা শুরু করে।
মাদকাসক্ত অবস্থায় ২০১৪ সালে এসএসসি পাশ করে।
ওই বছরই বগুড়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়। ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং এ লেখা পড়া শুরু করলেও কোর্স শেষ করতে পারেনি।
মাদক সেবনের জন্য প্রতিনিয়ত বাসায় টাকার জন্য চাপ দিতো। টাকা না দিলে বাসার ফার্ণিচার ভাঙাসহ পরিবারের সকল সদস্যদের সাথে খারাপ আচরণও করতো।
একাধিকবার মাদক নিরাময় কেন্দ্রে দিয়েও তাকে মাদক থেকে দূরে সরানো যায়নি। মাঝে মাঝে ৪/৫ দিন করে নিরুদ্দেশ থাকতো। এখনও সে নিরুদ্দেশ হয়ে আছে।
আজাহারুল হক আমার অবাধ্য ছেলে। সে সমাজে এমন সব অপকর্ম করে বেড়ায় যার জন্য আমাকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হতে হয়।
আমার কোন কথা বার্তা শুনে না। আমার কোন আদেশও মানে না।
আমি তাকে বুঝাতে গেলে আমার ও আমার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে খারাপ আচরণ করে।
তাই আমার পরিবার আত্মীয় স্বজন আজাহারুল হক জয়ের কার্যকলাপের জন্য অনুতপ্ত হয়ে শুভাকাঙ্খাদীর পরামর্শক্রমে আমার ছেলেকে ত্যাজ্য পুত্র ঘোষণা করলাম।
সে আমার জীবদ্ধশায় আমার সকল প্রকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি দাবি করতে পারবে না।
এখন থেকে আজাহারুল হক জয় আমার ছেলে না। তার সকল প্রকার অপকর্মের জন্য আমি ও আমার পরিবার দায়ি নয় বলে শামসুল হক নোটারী পাবলিকে উল্লেখ করেন।
এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল জজ কোর্টের পিসি এডভোকেট এস আকবর খান বলেন, ত্যাজ্যপুত্রের বিষয়টি আইনগত কোন ভিত্তি নেই।
সে সমাজকে জানালো তার পুত্রকে সর্ম্পক ছিন্ন করলো। ত্যাজ্যপুত্র করলেই আইনগতভাবে ত্যাজ্যপুত্র হয়ে যাবে না।
যাকে ত্যাজ্য করা হয়েছে সে সম্পত্তি এবং ওয়ারিস থেকে বঞ্চিত হবে না।
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি
আপনার মন্তব্য লিখুন...