০১:৫৩ পিএম | টাঙ্গাইল, শুক্রবার, ৩ মে ২০২৪
প্রতিষ্ঠাতা মরহুম আব্দুল ওয়াহেদ মিয়া

বর্ষার আগেই ভাঙছে যমুনা

অভিজিৎ ঘোষ | টাঙ্গাইল২৪.কম | বুধবার, ১৪ জুন ২০১৭ | | ৫২৮৩
, টাঙ্গাইল :

উজানের পানি দিনদিন বৃদ্ধি পাওয়ায় বর্ষা শুরুর আগেই যমুনা নদীর টাঙ্গাইলের ভ‚ঞাপুর উপজেলার চারটি ইউনিয়নে ভাঙন শুরু হয়েছে। এর মধ্যে অর্জুনা ইউনিয়নের অর্জুনা এলাকায় দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। এছাড়া নতুন করে ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে শতাধিক গ্রাম, স্কুল, মাদরাসা, কলেজ, হাট-বাজার, মন্দির, মসজিদ, পোল্ট্রি খামার ও রাস্তা-ঘাট।

গেল বছরে এই বর্ষা মৌসুমে অর্জুনা এলাকার প্রায় তিনশতাধিক ঘর-বাড়ি ও ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। গত সোমবার থেকে এই অর্জুনা গ্রামে ব্যাপক ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। ভিটেমাটি-ফসলি জমি হারিয়ে নিঃস্ব গৃহহীন মানুষ অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে। এর ফলে আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে নদী পাড়ের মানুষেরা। সরেজমিনে ভাঙন কবলিত এলাকায় গিয়ে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।

এখনই কার্যকর কোন উদ্যোগ না নিলে বর্ষায় ভাঙন তীব্র রূপ ধারণ করবে বলে আশঙ্কা করছেন এ অঞ্চলের মানুষ।

অভিযোগ আছে, ভাঙন ঠেকাতে নদীপাড়ে গত বছর থেকে প্রায় ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে জিও ব্যাগ ভাঙনরোধে যমুনা নদীতে ফেলা হলেও নানা অনিময় ও দুর্নীতির কারনে তা কোন কাজেই আসেনি। ঢাকা পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী ফখরুল ইসলাম জানিয়েছেন যমুনা নদীর তীব্র ভাঙনে জিও ব্যাগ কার্যকর নয়। ভাঙনরোধে পরবর্তিতে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হবে।

জানা যায়, গত দশ বছর আগেও পানি উন্নয়ন বোর্ডের টাঙ্গাইল-তারাকান্দী বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ থেকে মূল যমুনার দূরত্ব ছিল প্রায় পাঁচ কিলোমিটার পশ্চিমে। যতোই দিন অতিবাহিত হয়েছে ভাঙনের তীব্রতা ততোই পূর্বদিকে বিস্তৃতি ঘটেছে। ফলে যমুনা নদী মূল প্রবাহ এখন বাঁধ ঘেষে বইছে। এ বছর বর্ষা শুরুর আগেই দেখা দিয়েছে ভাঙন। গত সপ্তাহখানেক ধরে যমুনার ভাঙনে ইতোমধ্যে অর্জুনা এলাকার শতাধিক বাড়ি-ঘর ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভিটেমাটি-ফসলি জমি হারিয়ে নিঃস্ব অনেক পরিবার। আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের টাঙ্গাইল-তারাকান্দী বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পাড়ে বসতি গড়া কয়েকটি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ। ভাঙন ঠেকাতে নদীতে জিও ব্যাগ ফেলা হলেও তা কোন কাজে আসছেনা বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।

সরেজমিন দেখা যায়, প্রতিবছরই বন্যা আসার আগে অর্জুনা গ্রামে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের কাজ সংস্কার করে থাকে টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ড। অভিযোগ আছে বাঁধ সংস্কারের জন্য যত টাকা বরাদ্দ হয়, এর অর্ধেক টাকাও বাঁধ সংস্কার কাজে ব্যবহার করা হয় না। স¤প্রতি নদীর পাড় দিয়ে মাটি মিশ্রিত বালি ফেলে বাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত এ অংশটুকু নামমাত্র মোরামত করেছে কর্তৃপক্ষ। কয়েক দিনে নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে পানির চাপে বেশ কয়েকটি গ্রাম ভাঙন শুরু হয়েছে। বাঁধটিকে রক্ষা করতে বালুর বস্তা ও পর্যাপ্ত পরিমাণ মাটি ফেলা দরকার। বাঁধের মেরামতের জন্য জোর দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।

এদিকে গত বছর কয়েকটি পয়েন্ট দিয়ে যমুনা নদীর পানি প্রবেশ করে উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের কষ্টাপাড়া, খানুরবাড়ি, ভালকুটিয়া, গোবিন্দাসী, চিতুলিয়াপাড়াসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়। যদি পানি বাড়ার আগেই ওই পয়েন্টগুলো জিও ব্যাগ দিয়ে উচু করে দেওয়া হলে পানিবন্দি হতো ওই গ্রামের কয়েক হাজার পরিবার।

কষ্টাপাড়া গ্রামের মজিদ সরকার জানান, নদীর পাড় গড়িয়ে পানি নামতে দেখি। স্থানীয় প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতির কারনে গেল দুই বছর ধরে প্রতি বন্যায় পানিতে বসবাস করতে হচ্ছে। এখন নদীতে পানি বাড়ছে এবারও বন্যায় ভাসতে হবে। এখন যদি কোন রকমে কয়েকটি পয়েন্ট জিও ব্যাগ অথবা বালুর বস্তা দিয়ে উচু করে দেয়া হয় তাহলে আমরাসহ কয়েকটি গ্রামের মানুষ পানির অকাল বন্যা থেকে বাঁচতে পারবে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে ভাঙ্গন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড লোক দেখানো নামমাত্র উদ্যোগ নেয়। কিন্তু সেটি সাময়িকের জন্য। যখন পানি বেড়ে নদী ভাঙন শুরু হয় তখন কর্তৃপক্ষ কাজ শুরু করে।

অর্জুনা গ্রামের রাবেয়া খাতুন বলেন, আমরা গরীব মানুষ ভিক্ষা কইরা খাই। যা কিছু জায়গা জমি ছিল দুই দিন আগে যমুনা গর্ভে চলে গেছে। অন্যের বাড়িতে থাকতে হচ্ছে এখন। এই যমুনা কারো সাথে সম্পর্কে করে না কারোও কথাও শুনে না । আমাগো চেয়ারম্যানগো চোখেই দেখি না। বর্ষা অইলে এক-দুই আসে তারপর আর দেখা যায় না । কোন খোঁজ নেয় না।

রাব্বি আহমেদ জানান, প্রতিবছর প্রায় তিন’শ থেকে চার’শ বাড়ি-ঘর যমুনা নদীর ছোবলে বিলীন হয়ে যায়। গত দুই দিনে ৮টিরও বেশি বসতবাড়ি যমুনা নদীর গর্ভে চলে গেছে। ভাঙনরোধে জিও ব্যাগে মাটি মিশ্রিত বালু দিয়ে নদীর পাড় করা হয়েছে সেটিও আমাদের কোন কাজে আসছে না।

ভ‚ঞাপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারমান আব্দুল হালিম এডভোকেট বলেন, হঠাৎ করেই যমুনায় পানি বেড়ে উপজেলার কয়েকটি স্থানে ভাঙন শুরু হয়েছে। সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে সংশ্লিষ্ট পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মর্কতাদের অবহিত করা হয়েছে যাতে ভাঙনরোধে কাজ শুরু করা হয়।

অনিয়মের বিষয়টি অস্বীকার করে পানি উন্নয়ন বোর্ড ঢাকা সেন্ট্রাল জোনের প্রধান প্রকৗশলী মো. ফখরুল ইসলাম ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করে জানান, যমুনা নদী ভাঙনরোধে আগামী বছরে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হবে।

আপনার মন্তব্য লিখুন...

বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে গণমাধ্যমকর্মীদের সমাবেশ  গুচ্ছ ‘বি’ ইউনিট ভর্তি পরীক্ষায় মাভাবিপ্রবি কেন্দ্রে উ মির্জাপুরে রাতের আঁধারে কৃষি শ্রমিককে কুপিয়ে হত্যা নাগরপুরে দু''পক্ষের সংঘর্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান নি সখীপুর বনে দুর্বৃত্তের আগুন, বিলুপ্ত হচ্ছে বন্য প্রাণী কালিহাতীতে মে দিবস পালিত মেয়ে ও জামাতার বিরুদ্ধে বাবাকে নির্যাতনের অভিযোগ, বৃদ্ধ প্রধান শিক্ষককে বাড়িতে ডেকে নিয়ে মারধর, থানায় মামলা গোপালপুরে বিদেশ ফেরত পুনরেকত্রীকরন শীর্ষক কর্মশালা নাগরপুরে খাদ্যভিত্তিক পুুষ্টি (ফলিত পুষ্টি) বিষয়ক প্রশি করটিয়া হাটে আল আরাফা ইসলামী ব্যাংকের শাখা উদ্বোধন মেয়ের বাড়ি বেড়াতে এসে লাশ হলেন বাবা ৫০০ টাকা চাঁদা নেওয়ার অভিযোগে ছাত্রলীগ-যুবলীগের ৪ নেতা গোপালপুরে হিটস্ট্রোকে চা বিক্রেতার মৃত্যু  নাগরপুরে বালুবাহী ট্রাক্টর কেড়ে নিল যুবকের প্রাণ

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি