০৫:৫৮ এএম | টাঙ্গাইল, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪
প্রতিষ্ঠাতা মরহুম আব্দুল ওয়াহেদ মিয়া

বাংলাট্রিবিউন এ সংবাদ প্রকাশ : শঙ্কিত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা

আগে থেকেই প্রশ্ন ফাঁস চক্রের সঙ্গে জড়িত ‘সৃষ্টি শিক্ষা পরিবার’

তপু আহম্মেদ | টাঙ্গাইল২৪.কম | শুক্রবার, ৭ এপ্রিল ২০১৭ | | ৩৬৪৪৬
, টাঙ্গাইল :

‘সৃষ্টি শিক্ষা পরিবার’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান অনেক আগে থেকেই প্রশ্ন ফাঁস চক্রের সঙ্গে জড়িত বলে গোয়েন্দারা তথ্য পান- এমন তথ্য সম্বলিত একটি সংবাদ জনপ্রিয় জাতীয় অনলাইন পত্রিকায় প্রকাশের পরই আলোচনা-সমালোচনার ঝড় শুরু হয়েছে টাঙ্গাইলের সর্বস্তরে।

সংবাদটি অল্প সময়ের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে লাইক আর শেয়ারের মধ্যে দিয়ে টাঙ্গাইলসহ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে প্রশ্ন ফাঁস চক্রের সাথে সৃষ্টি শিক্ষা পরিবারের জড়িত থাকার বিষয়টি।

আর এমন খবরে সঙ্কিত এই শিক্ষা পরিবারের ১০ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। প্রশ্ন উঠেছে সৃষ্টি শিক্ষা পরিবারের শিক্ষার মান ও শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়েও। তবে অধিকাংশ অভিভাবকই চিন্তিত তাদের সন্তানদের মেধা নিয়ে। অনেক অভিভাবক মনে করছে এসব কারণে তাদের সন্তানরা মেধা শূন্য হতে পারে।

সংবাদটিতে গোয়েন্দা সংস্থার বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, সারাদেশে প্রতিষ্ঠানটির ১৫টি শাখা রয়েছে। এরমধ্যে রাজধানী একটি, আশুলিয়া, খুলনা, জামালপুর, গাজীপুর, রাজশাহী ও সিরাজগঞ্জে একটি করে শাখা এবং টাঙ্গাইল আটটি শাখা রয়েছে। এসব শাখায় অন্তত এক হাজার শিক্ষক-কর্মচারী ও ১০ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। এই নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে সারাদেশে তারা প্রশ্ন ফাঁস করে। গোয়েন্দাদেরকে এই তথ্য জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির ঢাকা শাখার গ্রেফতার হওয়া শিক্ষক জাহাঙ্গির আলম ।

সৃষ্টি শিক্ষা পরিবারের গ্রেফতার হওয়া শিক্ষকের তথ্যর সূত্র ধরে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ড. শফিকুল ইসলাম রিপনকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বলেও সংবাদে উলে­খ করা হয়েছে।

প্রশ্ন ফাঁসের মধ্যে দিয়ে জাতীকে মেধা শূণ্যে’র চক্রান্ত চলছে এমন কথা প্রায়ই নানা রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের বক্তব্যে শোনা গেলেও তেমন কোন প্রভাব পড়েনি জনমনে। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় ইংরেজী বিভাগে মেধা তালিকায় মাত্র দুই শিক্ষার্থী উত্তীর্ন হওয়ার পরই এ নিয়ে ভাবনা শুরু হয় সর্ব মহলে।

বর্তমান সরকারের সময়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রকল্পের সুফল হিসেবে সারাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নির্ভরতা বেড়ে যাওয়ায় এবার বিষয়টি গুরুত্বের সাথেই সামনে এসে দাড়িয়েছে সরকার ও সাধারন মানুষের মাঝে।

প্রশ্ন ফাঁস চক্রের সদস্যরা তাদের ব্যবসায়ীক কর্মকান্ডে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার করায় প্রতিবছরই প্রশ্নপত্র ফাঁসের খবর সামনে চলে আসছে। প্রতিটি পাবলিক পরীক্ষার সময়ই মিডিয়ার সংবাদের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ন আইটেম হিসেবেও প্রশ্নপত্র ফাঁসের সংবাদকে বিবেচনায় আনা হচ্ছে। বিভিন্ন সময় সরকার এই প্রশ্ন ফাঁস বন্ধে নানা উদ্যেগ নিলেও কোন ভাবেই এটা পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছিল না।

তাই প্রশ্ন ফাঁস রোধে মাঠে নামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সদস্যরা। বেশ কয়েকটি সফল অভিযানের মধ্যে দিয়ে এ চক্রের বেশ কয়েকজন হোতাকেও গ্রেফতার করতে সক্ষম হন তারা। সবশেষে গত ২৭ মার্চ প্রশ্ন পত্র ফাঁস চক্রের ৯জনকে গ্রেফতার করার পরেই প্রশ্নপত্র ফাঁসের অনেক তথ্য প্রমান হাতে পায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এরই সূত্র ধরে চলে অভিযান। এতে ফেসবুক আইডির এ্যাডমিনও গ্রেফতার হয়। পরবর্তীতে এই চক্রের নানা তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে প্রশ্নফাঁস চক্রের মূল হোতাদের ধরতে মাঠে নামে গোয়েন্দা পুলিশ।

তবে অনেক পরে হলেও দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা এই প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের কর্মকান্ড সবার সামনে চলে আসায় বর্তমান সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রকল্পের অন্যতম সফলতা বলেও মনে করছেন অনেকে। কারণ হিসেবে তারা উলে­খ করেছেন, চক্রগুলো এনালগ পদ্ধতী ব্যবহার করে দীর্ঘ দিন ধরে এ কর্মকান্ড চালিয়ে আসছিল। আর এর মধ্যে দিয়ে তারা শত শত কোটি টাকার মালিক বনেও গেছে। ডিজিটাল পদ্ধতি চালু না হলে, আর ইন্টারনেট ব্যবহার না বাড়লে এ চক্রের বিষয়টি সবার সামনে আসতকিনা তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।

এ বিষয়ে দ্রুত মিডিয়ার সামনে সৃষ্টি শিক্ষা পরিবারের ব্যাখা দেওয়ার দাবি জানিয়ে অভিভাবকরা ।

জনপ্রিয় অনলাইন সংবাদ মাধ্যম বাংলাট্রিবিউন এ প্রকাশিত সংবাদটি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হল ঃ

প্রশ্নফাঁসের সিন্ডিকেটে ১২ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ২৪ কোচিং সেন্টার

প্রশ্নফাঁস চক্রের মূল হোতাদের ধরতে মাঠে নেমেছে গোয়েন্দা পুলিশ। এরইমধ্যে কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কোচিং সেন্টারের কর্ণধার ছাড়াও শিক্ষা কর্মকর্তাসহ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন গোয়েন্দারা। আরও কয়েকটি চিহ্নিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কোচিং সেন্টারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা কার্যালয়ে তলব করা হয়েছে।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, প্রশ্ন ফাঁসচক্রের সিন্ডিকেটে ১২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ২৪টি কোচিং সেন্টার ও ৫০ জন শিক্ষকের জড়িত থাকার বিষয়ে তথ্য পেয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। এই সিন্ডিকেটের সঙ্গে বিজি প্রেসের কর্মচারী এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরের কয়েকজন কর্মকর্তার সংশ্লিষ্টতারও তথ্য পেয়েছেন তারা। যাদের পর্যায়ক্রমে গোয়েন্দা কার্যালয়ে ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মানিকনগর আইডিয়াল হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ, মতিঝিল কলোনি হাইস্কুল, শাজাহানপুর রেলওয়ে হাইস্কুল, মনিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মাইল স্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও সাভারের টাঙ্গাইল স্কুল অ্যান্ড কলেজ অন্যতম। কোচিং সেন্টারের মধ্যে জ্ঞানকোষ একাডেমি, মানিকগঞ্জ জেলার জয় একাডেমি, গাজীপুর জেলার কোনিয়া কোচিং ও অভিনব কোচিং সেন্টার গোয়েন্দাদের নজরদারিতে রয়েছে।

প্রশ্নফাঁস চক্রের সন্ধানে কাজ করছেন এমন কয়েকজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, গত শনিবার সাভার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শাহরিয়ার মেন্দিসকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা কার্যালয়ে ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া কয়েকজনের মোবাইল ফোনের কললিস্টে তার সঙ্গে যোগাযোগের তথ্য পাওয়া গেছে। একাধিকবার ওইসব প্রতারকের সঙ্গে তার যোগাযোগের বিষয়টি কললিস্টেও পাওয়া গেছে। ‘সৃষ্টি শিক্ষা পরিবার’ নামে একটি কোচিং সেন্টারের চেয়ারম্যান ড. শফিকুল ইসলাম রিপনকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এছাড়া আরও এক ডজনেরও বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, দুই ডজন কোচিং সেন্টার ও অর্ধশত শিক্ষক-কর্মচারীকে গোয়েন্দা নজরদারিতে রাখা হয়েছে।

‘সৃষ্টি শিক্ষা পরিবার’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান অনেক আগে থেকেই প্রশ্ন ফাঁস চক্রের সঙ্গে জড়িত বলে গোয়েন্দারা তথ্য পান। সারাদেশে প্রতিষ্ঠানটির ১৫টি শাখা রয়েছে। এরমধ্যে রাজধানী একটি, আশুলিয়া, খুলনা, জামালপুর, গাজীপুর, রাজশাহী ও সিরাজগঞ্জে একটি করে শাখা এবং টাঙ্গাইল আটটি শাখা রয়েছে। এসব শাখায় অন্তত এক হাজার শিক্ষক-কর্মচারী ও ১০ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। এই নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে সারাদেশে তারা প্রশ্ন ফাঁস করে। গোয়েন্দাদেরকে এই তথ্য জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির ঢাকা শাখার গ্রেফতার হওয়া শিক্ষক জাহাঙ্গির আলম ।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা আরও জানান, চলমান এইচএসসি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে রাজধানী ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকা সাভার, আশুলিয়া, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর ও টাঙ্গাইলের বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কোচিং সেন্টার গোয়েন্দা নজরদারিতে রাখা হয়েছে। স¤প্রতি গ্রেফতার হওয়া বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, কর্মচারী ও দালালদের কাছ থেকে উদ্ধার করা মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপসহ বিভিন্ন প্রযুক্তির ডিভাইস থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত এসব প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষক কর্মচারীদের তথ্য পান তারা। এখন সেইসব তথ্য আরও যাচাইবাছাই করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান গোয়েন্দারা। শিক্ষকরা কার কাছ থেকে কিভাবে প্রশ্নপত্র সংগ্রহ করতেন এবং সেসব প্রশ্নপত্র কোথায় কার কাছে কত টাকার বিনিময়ে বিক্রি করতেন সেগুলোও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার মাহমুদ নাসের বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কোচিং সেন্টারের তথ্য পেয়েছি। তদন্ত ও অনুসন্ধানের স্বার্থে এখনও এ ব্যাপারে বিস্তারিত বলা যাচ্ছে না ।

আপনার মন্তব্য লিখুন...

মির্জাপুরে গরীব ও দুস্থ মহিলাদের মাঝে সেলাই মেশিন বিতরণ মির্জাপুরে প্রতিপক্ষের হামলায় নারীসহ এক পরিবারের ৪জন আহ মির্জাপুরের বাঁশতৈলে ৮টি অবৈধ কয়লার চুল্লি ধ্বংস ধনবাড়ীতে প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত চলন্ত ট্রেনের ছা‌দ থে‌কে যাত্রীর মর‌দেহ উদ্ধার নাগরপুরে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার দিলেন তারানা হালিম বঙ্গবন্ধু সেতুতে একদিনে ৩কোটি টাকার টোল আদায় ''মানুষের কল্যাণে মানুষ'' ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ঈদ সামগ্র ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে ১৭ কিলোমিটার এলাকা ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং, ফুড সাইন্স এন্ড টেকনোলজি বা ফুড টেকনো ঈদের বাজার নিয়ে এবার বাড়ি ফিরবে না মেহেদী ৩২ ঘন্টায় বঙ্গবন্ধু সেতু পাড় হয়েছে প্রায় ৪২ হাজার পরিবহ পীর শাহজামান মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির উদ্যোগে ইফতার মাহফ দুঃস্থদের মাঝে টাঙ্গাইল মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ এর ঈদ ঈদের ছুটিতে মাভাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে বেড়েছে চোরের উপদ্রব

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি