অসময়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছে টাঙ্গাইল জেলার এতিহ্যবাহী তাঁতশিল্প। চলমান সময়ে টাঙ্গাইল শাড়ীর ব্যবসায় মন্দা থাকার কথা থাকলেও সে সময়েই কিছুটা হলেও লাভের মুখ দেখছেন তাঁতিরা। রমজানের ঈদের আগাম প্রস্তুতির কারণেই বাজার ঘুরে দাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।
আর এ কারণেই কালিহাতী উপজেলার বল্লা-রামপুর, দেলদুয়ার উপজেলার পাথরাইল ও আকন্দপাড়া, টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বেলতা গ্রামের তাঁতিরা আরোও লাভের আশায় শাড়ী উৎপাদনে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।
তাঁতিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সারা বছর খুরিয়ে খুরিয়ে চললেও রমজানের ঈদের দুই মাস আগে থেকে মুলত শাড়ী কাপড় বিক্রি শুরু হয়। মন্দা সময়ের ঘাটতি পূরন, শ্রমিক মজুরি, সুতার মহাজন, ব্যাংক ও এনজিওর দেনা পরিশোধ করতে গিয়ে অধিকাংশ তাঁত বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়ে পড়ে এই সময়ে। কিন্তু এবার তার ব্যতিক্রম ঘটেছে। আর অন্যতম কারণ হিসেবে করটিয়া হাটে শাড়ী কাপড় বেশ ভালো বিক্রি হওয়ার কথাই জানা গেছে।
বেঁচা কেনা বেড়েছে কম মূল্যের পেটি কাপড় গুলোর। এমন সময়ে লাভের মুখ দেখে হতবাক হচ্ছেন তাঁতিরা।
এ বিষয়ে কালিহাতী উপজেলার শাড়ী ব্যবসায়ী মোঃ আসাদ আলী সরকার জানান, গত বছর ঈদ মৌসুমে শাড়ী কাপড়ের দাম অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতারা বিপাকে পড়ে ছিলেন। তাই এবার ক্রেতারা সুযোগ বুঝে মন্দার সময়ে শাড়ী ক্রয় করে গুদামজাত করছেন। যাতে ঈদের সময়ে অতিরিক্ত দাম দিয়ে শাড়ি কিনতে না হয়।
তাছাড়া গেলো বছর গুলোতে তাঁত শিল্পে চরম মন্দাভাব থাকায় অনেকেই তাঁত বন্ধ করে অন্য পেশায় জীবিকা নির্বাহ করছেন। যার ফলে অসংখ্য তাঁত বন্ধ হওয়ায় শাড়ীর উৎপাদনও অনেকটাই কমে গেছে। তাই এই অসময়ে শাড়ীর চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে বলেও তিনি জানান।
ব্যবসায়ী রাশেদ মিয়া জানান, দামি কাপড়ের চেয়ে কম মুল্যের শাড়ী গুলো বেশি চলছে। মন্দা সময়ে মুলত ক্রেতারা ৩ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৫ হাজার টাকা মুল্যের ১০ পিসের পেটি সুতি ও শিল্কের শাড়ী গুলোই কিনে থাকে। আশানরুপ লাভ না হলেও যে সময়ে আমরা তাঁত চালাতে গিয়ে ঋণগ্রস্থ হয়ে পড়ি সে সময়ে কিছুটা হলের লাভের মুখ দেখছি। আমরা আগের চেয়ে অনেকটাই ভালো আছি। তবে সুতার দাম বৃদ্ধি না হলে শাড়ী ব্যবসা আরোও ভালো হতো।
আকন্দপাড়া গ্রামের স্টাইপ শাড়ী ব্যবসায়ী আরজু মিয়া জানান, ভেবে ছিলাম ডিসেম্বরের পর থেকে মন্দার কারনে আমাদের মিলে শাড়ী উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু কার্যত শাড়ী বিক্রি বেশ ভালোই চলছে। একের পর এক মহাজনদের অর্ডার পেয়ে যাচ্ছি। এমন সময়ে তাঁত শিল্প ঘুরে দাঁড়াবে ভাবতেই পারেনি।
অসময়ে হলেও হঠাৎ তাঁত শাড়ীর বাজার ঘুড়ে দাড়ানোয় স্বস্থি ফিরে এসেছে এ শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্টদের।
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি
আপনার মন্তব্য লিখুন...