বেতনভাতা বৃদ্ধির দাবিতে মধুপুরের পীরগাছা রাবার বাগানের চুক্তিভিত্তিক রাবার কষ আহরনকারী শ্রমিকরা অনির্দিষ্ট কালের জন্য ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। দাবি না মানা পর্যন্ত এ কর্মসূচী চলবে বলেও জানা গেছে।
দাবি আদায়ের জন্য রোববার বাগান এলাকায় বিক্ষোভ-মিছিল ও সমাবেশ করেছে শ্রমিকরা। পরে মধুপুর জোনের কমলাপুর, চাঁদপুর, কর্ণজোরা ও পীরগাছা বাগানের প্রায় ১৪শ চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক দাবির সাথে একাত্বতা ঘোষণা করে এ ধর্মঘট ও বিক্ষোভ-মিছিলে অংশ নেয়।
পীরগাছা রাবার বাগানের চুক্তিভিত্তিক কষ আহরনকারী শ্রমিক ও বাগানের কর্মকর্তা-কর্মচারিরা জানায়, নিয়মিত শ্রমিকের পাশাপাশি এ বাগানে চুক্তি ভিত্তিক শ্রমিকরাও কষ আহরণ করে থাকে। বিগত ১০/১২ বছর ধরে নিয়মিত শ্রমিকদের চাকরি নিয়ে জট ঝামেলা চলাকালিন সময়েও তারা কাজ চালিয়ে যায়।
গত বছর আদালতের রায়ের পর আবারও কাজে যোগদান করে নিয়মিত শ্রমিকরা। এরপর থেকেই বাগানে ২ ধরনের শ্রমিকরাই কষ আহরণ করে যাচ্ছে।
চুক্তিভিত্তিক কষ আহরনকারী শ্রমিকরা বেতন পায় কাজের উপর ভিত্তি করে। তারা এক কেজি কষ আহরণ করে পায় ৭ টাকা। কিন্তু নিয়মিত শ্রমিকরা মাসিক বেতন পায় ৮ হাজার টাকার মত। সাথে অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাও রয়েছে।
নিয়মিত শ্রমিকদের সমপরিমাণ বেতন অথবা দৈনিক ৪৫০ টাকা হারে বেতনের দাবিতে এ ধর্মঘটের ডাক দেয় চুক্তিভিত্তিক কষ আহরনকারী শ্রমিকরা। তাদের দাবি না মানা পর্যন্ত এ আন্দোলন চলবে বলেও তারা জানিয়েছে।
পীরগাছা রাবার বাগানের চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক ইউনিয়নের (রেজিঃ নং ৪৪১৯) সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান জানান, আমাদেরকে ৭ টাকা কেজি আহরিত কষের মুজুরি দেয়। সিজনের সময় আমরা দৈনিক একজন শ্রমিক ৩০-৪০কেজি কষ বাগান থেকে আহরণ করতে পারি। এতে আমরা একজন শ্রমিক দৈনিক ২১০ থেকে ২৮০ টাকা পাই। আবার অফ সিজেনের সময় কষ আহরণ হয় কম। তখন একজন শ্রমিক দৈনিক ৫ থেকে ১৭ কেজি কষ আহরণ করতে পারে। এতে সে পায় ৩৫ থেকে ১১৯ টাকা। এ মুজুরি দিয়ে আমাদের সংসার চলে না। আমরা শ্রম অধিকার আইন মতে বেতন চাই।
বাগানের লাভ শ্রমিকদের পরিশ্রমের কারণে হয় দাবি করে তিনি বলেন, আমরা ন্যায্য মুজুরি থেকে বঞ্চিত কেন? এ জোনের ১৪শ শ্রমিক এ দাবির সাথে একাত্বতা ঘোষণা করে ধর্মঘট অব্যাহত রাখবে বলেও তিনি জানান।
পীরগাছা রাবার বাগানের চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মীর আলী আকবর জানান, নিয়মিত শ্রমিকদের সমান বেতন আমাদের দিতে হবে। আমরা সাপ, মশা, জোঁক ও বিচ্ছার কামড় সহ্য করে বাগানে কাজ করি। ভোর ৪টা থেকে ১টা পর্যন্ত ডিউটি করে ডাল-ভাত কেনার বেতন পাই না। দ্রব্য মূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণেই দৈনিক ৪৫০ টাকা দৈনিক ভিত্তিতে অথবা মাসে ৮ হাজার টাকা বেতনের দাবি বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
এ দাবি না মানা পর্যন্ত মধুপুর জোনের চুক্তিভিত্তিক শ্রমিকরা আন্দোলন ও ধর্মঘট অব্যাহত রাখবে বলেও তিনি জানান।
এ ব্যাপারে পীরগাছা রাবার বাগানের ব্যবস্থাপক মিয়া তোফায়েল আহামেদ জানান, তারা নিয়মিত শ্রমিক নয়। তাদের কাজের অনুপাতে বেতন দেওয়া হয়। এতে তারা কাজ ফাকি দিতে পারে না।
আন্দোলন ও ধর্মঘটের ব্যাপারে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিবে।
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি
আপনার মন্তব্য লিখুন...