০৫:৪৬ পিএম | টাঙ্গাইল, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
প্রতিষ্ঠাতা মরহুম আব্দুল ওয়াহেদ মিয়া

জেলা প্রশাসকের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

পাখির বাসস্থান তৈরিতে ১ হাজার হাঁড়ি

বিশেষ প্রতিনিধি | টাঙ্গাইল২৪.কম | বুধবার, ১৬ নভেম্বর ২০১৬ | | ১৬০৮
, টাঙ্গাইল :

পাখির জন্য বাসস্থান! শুনলে অনেকটা অবাকই হতে হয়। কিন্তু এমনটাই করে দেখালেন টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মাহবুব হোসেন।

তিনিই টাঙ্গাইলের প্রথম কোন ব্যক্তি যিনি সরকারী কর্মকর্তা হয়েও পাখির জন্য তৈরি করেছেন নিরাপদ বাসস্থান। পাখির বাস-উপযোগী মাটির তৈরি হাঁড়ি ঝুলিয়ে দিয়েছেন গাছের ডালে ডালে, যেখানে নিশ্চিন্তে আবাস গড়ে তুলেছে বিভিন্ন জাতের পাখি। আর এতে পাখির বংশবিস্তারও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

টাঙ্গাইল শহরের সার্কিট হাউজ থেকে শুরু করে হর্টিকালচার ও সদ্য-নির্মিত টাঙ্গাইলের একমাত্র জনপ্রিয় বিনোদন কেন্দ্র ডিসি লেক এলাকার গাছগুলোতে হাঁড়ি দিয়ে পাখির বাসস্থানের ব্যবস্থা করেছেন তিনি। তার এ উদ্যেগ শুধু যে পাখির প্রতি ভালোবাসার নিদর্শন, তা কিন্তু নয়। পরিবেশ রক্ষায় অতুলনীয় উদ্যেগ এমনটাই মনে করছেন ডিসি লেকে বেড়াতে আসা দশনার্থীরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, ছোট কিংবা বড় গাছ হোক-এই এলাকার প্রায় প্রতিটি গাছেই হাঁড়ি লাগানো হয়েছে। পাখিভেদে হাঁড়ির আকার ও আকৃতিও ভিন্ন। গাছের ডালে ডালে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে এসব মাটির হাঁড়ি।ছোট গাছগুলোতে ২-৩টি ও বড় গাছগুলোতে ৪-৫টি বা তারও অধিক হাঁড়ি লাগানো হয়েছে। অনেক হাঁড়িতে পাখির আসা-যাওয়া দেখা গেছে।

ডিসি লেকে ঘুরতে আসা মানুষ ‘পাখির বাসস্থান’ দেখে মুগ্ধ। তাদের মতে এটি একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। এ উদ্যোগকে তারা স্বাগত জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে স্থানীয়বাসিন্দা মাসুদ রানা বলেন, এখানে পাখির জন্য বাসস্থান করা হয়েছে। এতে এ এলাকায় পাখির সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। আমি জেলা প্রশাসক মহোদয়ের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। সত্যিই এটি একটি ভালো উদ্যোগ।

ফয়সাল আহমেদ নামের এক ব্যক্তি বলেন, বিভিন্ন কারণে পাখির বাসস্থান কমে যাচ্ছে। পাখিসহ প্রকৃতির সকল প্রানিই আমাদের জন্য অপরিহার্য। যদি জেলার প্রতিটি মোড়ে মোড়ে পাখির জন্য বাসস্থান করা যায় তাহলে মানুষেরই উপকার হবে বলে তিনি মনে করেন।

সেই সাথে বিষয়টি নিয়ে উদ্যেগ গ্রহনের অনুরোধও জানিয়েছেন জেলা প্রশাসকের কাছে।

টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মাহবুব হোসেন বলেন, সবারই বাসস্থান দরকার। পাখি নিজেরাই নিজেদের বাসস্থান তৈরি করে। তারপরও পাখি যাতে নিরাপদে থাকতে পারে এ জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, প্রায় ২ মাস আগে পরীক্ষামূলকভাবে আমরা এখানে কয়েকশ’ গাছে ১ হাজার হাঁড়ি লাগিয়েছি। লেকের আশপাশ, সার্কিট হাউজ ও তার আশে পাশের এলাকায় হাঁড়ি লাগানো হয়েছে। যদি এখানে সফলতা পাই তাহলে জেলার প্রতিটি উপজেলায় পাখির জন্য বাসস্থান করা হবে।

তিনি বলেন, যদি কোন পাখির বাসস্থান না থাকে বা নিরুপায় হয় তাহলে তারা এখানে আশ্রয় নিতে পারবে।

তিনি বলেন, ঝড়-বৃষ্টিসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে পাখির বাসা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ কারণে পাখির ডিম ও বাচ্চা নষ্ট হয়ে যায়। এর ফলে বংশবিস্তার কমে যায়। পাখির বংশবিস্তার বৃদ্ধির লক্ষে এ ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাখিকে সবাই ভালোবাসে। এখানে প্রচুর পাখি আসলে সবারই ভালো লাগবে।

এতে পরিবেশের ভারসাম্য ঠিক থাকবে। গাছে প্রচুর পরিমাণে ফল-ফুল হবে। পাখি থাকলে মনও ভালো থাকবে পরিবেশও ভালো থাকবে।

টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসকের এ উদ্যোগকে সর্বস্তরের লোকজন স্বাগত জানিয়েছেন। তাদের মতে এটি বাস্তবায়িত হলে পাখির সংখ্যাও বৃদ্ধি পাবে।

মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স এন্ড রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শিমুল শেখ বলেন, মানুষের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক ও অবকাঠামোগত উন্নতি, আধুনিক যন্ত্রনির্ভর সভ্যতা, উচ্চাভিলাস ও সেইসঙ্গে অবিবেচনাপ্রসূত প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ, নিবনিকরণ, জলাশয় ভরাট, রাসায়নিকের উচ্চমাত্রায় ব্যবহার, জনসংখ্যাবৃদ্ধিÑ এসব মিলিয়ে প্রকৃতি যখন হুমকির সম্মুখিন ঠিক এমনই এক সন্ধিক্ষণে বিশ^মানবতা অস্তিত্বের টান অনুভব করছে টিকে থাকার। সীমিত সম্পদের যথাযথ ব্যবস্থাপনা ও সর্বোচ্চ ব্যবহারের সাথে সাথে টেকসই প্রযুক্তি ও টেকসই উন্নয়ন ভাবনা আজ গোটা পৃথিবীর মানুষের প্রাণের দাবি। প্রকৃতি যখন বিপন্নপ্রায় জীববৈচিত্রতা নিয়ে নানা সংকট ও দুর্যোগের মুখোমুখি তখন টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসকের ‘পাখির জন্য বাসস্থান’ তৈরি একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ।

তিনি আরো বলেন, অধিক জনসংখ্যার এদেশে আইন করেও যে জিনিস বাস্তবায়ন করা কঠিন, জনসচেতনতা বাড়ানোর মাধ্যমে তাহা বাস্তবায়ন অনেকটা সহজ এবং গণবান্ধব। পাখিদের অভয়, নিরাপদ ও সমৃদ্ধ আবাস হতে পারে Indigenous Plant গুলি। সেদিকে সাধারণ মানুষদেরকে উদ্বুদ্ধ করা প্রয়োজন। শুধু পাখির বাসাই পাখিকে নিরাপত্তা দিবে বিষয়টি এমনও নয়। পাখির খাদ্য নিরাপত্তার জন্য কৃষিতে ব্যবহৃত রাসায়নিক কমিয়ে জৈব প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। একই সাথে জলাশয় নির্ভর পাখিদের জন্য জলাশয় সংরক্ষণও জরুরী বিষয়। পরিযায়ী পাখি সংরক্ষণেও আমাদের সচেষ্ট হতে হবে।

তিনি বলেন, এর সুফল ও মানুষ পেতে শুরু করেছে। যেমন ২০১৬ সালে বাজারে ইলিশ মাছের পর্যাপ্ততা। জনসচেতনতা বাড়িয়ে সকলের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে পরিবেশ ও প্রকৃতি সংরক্ষণের কাজ করতে পারলে উপহার দেয়া সম্ভব সোনারবাংলা। বাংলার মানুষ পারে, বাংলার মানুষ পারবে। তাই প্রকৃতি ও জীববৈচিত্রতা বান্ধব যোগ্য নেতৃত্ব ও দিক নির্দেশনার প্রয়োজন।

আপনার মন্তব্য লিখুন...

নাগরপুরে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার দিলেন তারানা হালিম বঙ্গবন্ধু সেতুতে একদিনে ৩কোটি টাকার টোল আদায় ''মানুষের কল্যাণে মানুষ'' ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ঈদ সামগ্র ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে ১৭ কিলোমিটার এলাকা ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং, ফুড সাইন্স এন্ড টেকনোলজি বা ফুড টেকনো ঈদের বাজার নিয়ে এবার বাড়ি ফিরবে না মেহেদী ৩২ ঘন্টায় বঙ্গবন্ধু সেতু পাড় হয়েছে প্রায় ৪২ হাজার পরিবহ পীর শাহজামান মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির উদ্যোগে ইফতার মাহফ দুঃস্থদের মাঝে টাঙ্গাইল মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ এর ঈদ ঈদের ছুটিতে মাভাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে বেড়েছে চোরের উপদ্রব জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা টাঙ্গাইল জেলা ইউনিটের ইফতার ও দো মির্জাপুরে অবৈধভাবে বালুকাটায় ৪ জনের জেল খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় মির্জাপুরে দোয়া ও ইফতার ম ঈদে এলেঙ্গা থেকে সেতু পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটারে যানজটের আশঙ কুরিয়ার সার্ভিসের কাউন্টার থেকে ১৬ বস্তা নকল সিগারেট জব

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি