কে জানতো মরণব্যাধি ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাবে পুলিশ সদস্য কহিনুর।
শিশু জাসিয়া জাফরিন দেড় বছর বয়সে তার মাকে হারাবে সেটিই বা কে জানতো। জাসিয়া এখনও জানেনা তার মা এই পৃথিবী থেকে চলে গেছে না ফেরার দেশে। ঢাকার স্পেশাল পুলিশ ব্যাঞ্চে উপপরিদর্শক (এসআই)
হিসেবে চাকুরি করতো কহিনুর আক্তার। সে টাঙ্গাইলের ভুঞাপুর উপজেলার পূর্ব অর্জুনা গ্রামের আব্দুস ছালামের মেয়ে। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মোহাম্মদ এলাকার সিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
সরেজমিনে অর্জুনা গিয়ে দেখা গেছে, লাশবাহী গাড়ি থেকে যখন নিহত কহিনুরের লাশ অ্যম্বুলেন্স থেকে নামানো হচ্ছিল তখনও টলটল করে তাকিয়ে আছে শিশু জাসিয়া আফরিন (১৮মাস)। আবার অনেক সময় এদিক ওদিক তাকিয়ে হাসছে অবুঝ শিশুটি। এসময় অন্য একজনের কোলে চড়ে ফিডারে দুধ খাচ্ছে সে। এই দৃশ্য দেখে সেখানে উপস্থিত শত মানুষ চাপা কান্না করছে। সবাই শিশুটিকে দেখছে।
এর আগে কোহিনুরের জানাযা রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় প্রথম জানাজা এবং তার গ্রামের বাড়ি ভূঞাপুরে অর্জুনা গ্রামে বাদ জোহর দ্বিতীয় জানাজা শেষে পূর্বপাড়া পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
জানা যায়, ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে কোহিনুর প্রথমে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরে তার অবস্থার অবনতি হলে মোহাম্মদ এলাকার সিটি হাসপাতালের আইসিইউতে (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) রাখা হয়। পরে মঙ্গলবার রাত সোয়া ২টার দিকে কোহিনুরকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
তার স্বামী জহির উদ্দিন বেসরকারি একটি কোম্পানীতে কর্মরত।
অর্জুনা গ্রামের অনেকেই জানান, কহিনুরের মৃত্যুতে যতটানা কষ্ট তার চেয়েও বেশি হতাশা তার মেয়েকে নিয়ে। দেড় বছরের শিশুর ভবিষ্যৎ কি। এই বয়সে তার মা এর অভাব কে পূরণ করবে।
কহিনুরের বড় বোন জেবা জানান, শিশু জাসিয়াকে নিয়ে বোনের অনেক স্বপ্ন ছিল। বড় হলে মেয়েকে সে চিকিৎসক বানাতে চেয়েছিল। এখন জাসিয়ার ভবিষ্যত কি? ও (জাসিয়া) জানেই না তার মা আর তার কাছে ফিরে আসবে না। নিষ্পাপ এই শিশুর দিকে তাকালে কান্না ধরে রাখতে পারি না।
অর্জুনার হাজী ইসমাইল খাঁ কারিগরি কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তার জানান, এলাকার কৃতিসন্তান কহিনুর। তার অকাল মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
তার দেড় বছরের অবুঝ শিশুটি মাতৃকোল হারালো।
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি
আপনার মন্তব্য লিখুন...