টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে পিডিবির বিদ্যুত অফিসের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অবৈধ সংযোগ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। অফিসের কর্তাদের ম্যানেজ করে স্থানীয় দুইটি দালাল চক্র গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ দিচ্ছে। উপজেলার রায়ের বাসালিয়া এলাকায় ওই চক্রের একটি তারের মাধ্যমে অবৈধভাবে অর্ধশত মিটার স্থাপন করে বিদ্যুত সংযোগ দিয়েছে।
এতে গ্রাহকদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে মোটা অঙ্কের টাকা। আবার টাকা না দিলে গ্রাহকদের মিটারে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে। অন্য চক্র বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। সরেজমিনে রায়ের বাসালিয়া গ্রামে ঝুঁকিপূর্নভাবে এক তারে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া দেখা গেছে।
জানা গেছে, উপজেলার রায়ের বাসালিয়া গ্রামের হায়দার আলী সরকারের গ্রুপ ও ময়মনসিংহ পৌরসভায় কর্মরত কাবিল হোসেন ওরফে ছোট বাবু গ্রুপ মিলে মানুষদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে মিটার লাগিয়ে দিচ্ছেন। রায়ের বাসালিয়া বাজার মোড় হতে ঝুঁকিপূর্নভাবে একটি তারের মাধ্যমে অর্ধকিলোমিটার এলাকায় অর্ধশত মিটারে বিদ্যুত সংযোগ দেয়া হয়েছে। ভূঞাপুর বিদ্যুৎ অফিসের সহকারি প্রকৌশলী পূর্নচন্দ্র পাল ও অফিসের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়ে পিডিবির পুল থেকে অবৈধভাবে ঝুঁকিপূর্নভাবে এক তারের মাধ্যমে মিটার স্থাপন করে বিদ্যুৎ সংযোগ দিচ্ছে তারা। ওই দুই গ্রুপের মধ্যে আর্থিক বিষয় নিয়ে ঝামেলার সৃষ্টি হলে হায়দার আলী সরকারের গ্রুপের লোকজন কাবিল হোসেনসহ কয়েকজনের মিটারের লাইনের বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেন।
এ নিয়ে কাবিল হোসেনের মা বাদী হয়ে গ্রামের কয়েকজনের বিরুদ্ধে ভূঞাপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পুনরায় মিটারে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়। বিদ্যুৎ সংযোগ নেয়া রায়ের বাসালিয়া গ্রামের অনেকেই জানান, দালাল ও ঘুষ ছাড়া বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়া যায় না। বিদ্যুৎ অফিস ও স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে টাকার বিনিময়ে বাড়িতে বিদ্যুত সংযোগ নিয়েছি।
উপজেলার রায়ের বাসালিয়া গ্রামের হায়দার আলী সরকার বলেন, ভূঞাপুর পিডিবির বিদ্যুৎ অফিসের সহকারি প্রকৌশলী পূর্ন পালসহ অফিসের কয়েকজনের মাধ্যমে বিদ্যুতের পিলার স্থাপন ও তারের জন্য দেড় লাখ টাকা দিয়ে এলাকায় বিদ্যুতের লাইন টাঙানো হয়। এরপর কাবিল হোসেন এক তারের মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছ থেকে ১৫/২০ হাজার টাকা নিয়ে বিদ্যুৎ অফিসের কর্তাদের ম্যানেজ করে ঝুঁকিপূর্নভাবে মিটার স্থাপন করে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়েছে। অবৈধভাবে এই মিটার সংযোগ ও টাকা লেনদেনের বিষয়টি নিয়ে বিদ্যুত অফিসের অভিযোগ করলেও কোন সুরাহা করা হয়নি। পরে বিদ্যুৎ অফিসের সহকারি প্রকৌশলী পূর্ন চন্দ্র পাল লাইনগুলো কেটে দিতে বলে।
ময়মনসিংহ পৌরসভায় কর্মরত রায়ের বাসালিয়া গ্রামের কাবিল হোসেন ওরফে ছোট বাবু বলেন, এলাকায় বিদ্যুৎ ছিল না। নিজের টাকা খরচ করে বিদ্যুত অফিসের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে এলাকায় বিদ্যুতের লাইন টাঙানো হয়েছে। গ্রামের হায়দার, মিন্টুসহ অনেকেই মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়ে এলাকায় মিটার লাগিয়েছে ঝুঁকিপূর্ন তার দিয়ে। তারা আমাদের বাড়ির লাইনসহ কয়েকজনের মিটারে বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছিল। পরে পুলিশ এসে পুনরায় বিদ্যুত সংযোগ দিয়েছে।
ভূঞাপুরে বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের (পিডিবির) সহকারি প্রকৌশলী পূর্ন চন্দ্র পাল জানান, টাকা নিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার প্রশ্নই উঠে না। যারা অভিযোগ করেছে তারা মিথ্যা বলেছে। তবে ওই এলাকায় যেহেতু মিটার লাগানো হয়েছে এক তারে সেহেতু সেখানে বিদ্যুতের খুটিঁ দেয়া হবে।
ভূঞাপুরে বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের (পিডিবির) নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর রাজ্জাক জানান, লাইন কাটার বিষয় নিয়ে গ্রামের লোকজন অভিযোগ দিয়েছে। থানা পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করলে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে পুনরায় বিদ্যুত সংযোগ দিয়েছে।
এক তারে ওই গ্রামের কিছু লোকজন ৩৫টি মিটার স্থাপন করে বিদ্যুত সংযোগ দিয়েছে বলে জেনেছি। ওই এলাকায় বিদ্যুতের খুটি স্থাপন করে লাইনের ঝুঁকিমুক্ত করা হবে।
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি
আপনার মন্তব্য লিখুন...